মোঃ আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ ( সিলেট ) প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথের লামাকাজীতে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে সুরমা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে শাহিনুল ইসলাম শাহিন (৪২) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। বুধবার বিকেলে এ ঘটনাটি ঘটে। নিখোঁজের প্রায় ৪ ঘন্টার পর ফায়ার ব্রিগেডের ডুবুরি দল নদী থেকে লাশ উদ্ধার করে। নিহত শাহীন লামাকাজী ইউনিয়নের সৎপুর গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের পুত্র। শাহিন বিগত ইউপি নির্বাচেন বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী কাজ করায় ওই সময় জামায়াত থেকে তিনি বহিস্কার হন। এরপর থেকে তিনি বিএনপির দলীয় বৈঠকাদিতে অংশগ্রহন করে আসছিলেন।
প্রত্যেক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বিকেল ৫টায় বিশ্বনাথ থানার ওসি (তদন্ত) মাসুদুর রহমান মাসুদ’র নেতৃত্বে এক দল পুলিশ লামাকাজী এলাকায় চলমান ভারতীয় ‘তীর খেলা’র নামে জুয়ার আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করে।
শাহীনুল ইসলাম শাহিনের বিরুদ্ধে একাদিক রাজনৈতিক মামলা থাকায় সে পথিমধ্যে পুলিশ দেখে দৌঁড় দিলে পুলিশ তাকে পেছন থেকে দৌড়ানোর চেষ্ঠা করলে শাহিন দৌঁড় দিয়ে সুরমা নদীতে ঝাঁপ দেয়। কিছু দূর সাঁতার দিয়ে যাওয়ার পর শাহীন পানিতে তলিয়ে যায়। শাহীন নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পানিতে নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় জনতা বিক্ষোদ্ধ হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে বিক্ষোদ্ধ জনতা পুলিশকে ধাওয়া করেন। পুলিশ জনতায় ধাওয়া খেয়ে রাগীব-রাবেয়া উচ্চ উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজে অবস্থান নেয়।
এসময় পুলিশকে অবরোদ্ধ করে রাখেন বিক্ষোদ্ধ জনতা, এসময় বিক্ষোদ্ধ জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে লামাকাজী ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান-১ এনামুল হক এনাম মেম্বার, মুরব্বী আবদুর রহমান, ফয়জুল হক, ওসি (তদন্ত) মাসুদুর রহমান মাসুদ, এসআই হাবিবুর রহমান’সহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
খবর পেয়ে জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে ও ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় অবরোদ্ধ থাকা পুলিশ সদস্যদেরকে উদ্ধার করা হয়।
এঘটনার সংবাদ পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখার উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন, সিলেটরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) ড. একেএম আক্তারুজ্জামান বসুনিয়া, বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিতাভ পরাগ তালুকদার, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল হক, খাজাঞ্চী ইউপি চেয়ারম্যান তালুকদার গিয়াস উদ্দিন প্রমুখ।
এদিকে, নিখোঁজের প্রায় ৪ ঘন্টা পর বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় ফায়ার ব্রিগেডের ডুবুরি দল প্রচেষ্ঠা চালিয়ে শাহিনের লাশ নদী থেকে উদ্ধার করে। বুধবার বিকেলে লামাকাজী এলাকা থেকে ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলো- সদর উপজেলার খালপার গ্রামের গোলাম রেজার পুত্র আব্দুল লতিফ (৩২) ও একই গ্রামের আর্শ্বদ আলীর পুত্র জুনেদ আহমদ (২৫)।‘শাহীন’ একজন তালিকাভূক্ত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে দাবি করে
বিশ্বনাথ থানার এসআই হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, জুয়ারীদের গ্রেপ্তার করার জন্য লামাকাজী এলাকায় বুধবার বিকেলে পুলিশ অভিযান চালানোর প্রস্তুতিকালে, পুলিশ দেখে ‘শাহীন’ দূরে গিয়ে নদীতে ঝাঁপ দেয়।
বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ মনিরুল ইসলাম পিপিএম বলেন, পুলিশ জুয়াড়িদের আস্তানায় হানা দেয়। এসময় ৬জন জোয়াড়িকে আটক করলে স্থানীয় জনতা ৪জনকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তবে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরী বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। তবে নদীতে ঝাপ দেয়া নিখোঁজ যুবকের মৃতদেহ বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় ডুবুরি দল উদ্ধার করে বলে তিনি জানান।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2gKr2Z2
November 30, 2016 at 10:51PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন