অ্যাডিলেড ওভাল, ২৪ নভেম্বর- ব্যাট হাতে যখন নামলেন, গ্যালারিতে উঠল দুয়োর রোল। কয়েক ঘণ্টা পর সেই দুয়োই বদলে গেল তালিতে। সেঞ্চুরি ছুঁয়ে যখন ব্যাট উঁচিয়ে ধরলেন ফাফ দু প্লেসি, দাঁড়িয়ে তখন গোটা অ্যাডিলেড ওভালের গ্যালারি। খানিক পর প্রোটিয়া অধিনায়ক উপহার দিলেন দারুণ এক চমক। প্রথম দিনেই ইনিংস ঘোষণা! অ্যাডিলেডে দিবারাত্রির টেস্টের প্রথম দিনে ৯ উইকেটে ২৫৯ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বিপর্যয়ে অসাধারণ ইনিংস খেলে দলকে টেনে নিয়েছেন দু প্লেসি। গোলাপি বলে সুইং মিলেছে দারুণ। শেষ ৪৫ মিনিটে অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডারে ছোবল দিতে ইনিংস ঘোষণা করেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। তবে দুই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার নিরাপদেই কাটিয়ে দেন সময়টুকু। বিনা উইকেটে রান ১৪। বল টেম্পারিংয়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে জরিমানা, আপিলের সিদ্ধান্ত, সংবাদ সম্মেলনে ক্ষোভ প্রকাশ, নানা আলোচনা-সমালোচনা, সব মিলিয়ে এমনিতেই প্রবল চাপে ছিলেন দু প্লেসি। টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় তাকে ব্যাটিংয়েও নামতে হলো দ্রুত। স্বাগত জানানো হলো দুয়ো দিয়ে। ব্যাট হাতেই সবকিছুর জবাব দিলেন দু প্লেসি। দেখিয়ে দিলেন, প্রতিকূলতাকে কিভাবে পরিণত করতে হয় প্রশংসায়। গোলাপি বলের সুইংয়ে প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের ভুগিয়েছেন জস হেইজেলউড ও মিচেল স্টার্ক। পার্থের দুই সেঞ্চুরিয়ান ডিন এলগার ও জেপি দুমিনি, পুরো সিরিজে বিবর্ণ হাশিম আমলা, তিন জনই ফেরেন ৫ রান করে। দু প্লেসি নামার সময় দলের রান ৩ উইকেটে ৪৪। ওপেনার স্টিভেন কুককে নিয়ে বিপর্যয়টা সাময়িক সামাল দেন দু প্লেসি। ২৫ বছর আগে বর্ণবাদের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার পর টেস্ট, ওয়ানডে দুটিতেই দেশের প্রথম বল খেলেছিলেন জিমি কুক। এবার দিবা-রাত্রির টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম বল খেললেন জিমির ছেলে স্টিভেন কুক। কুককে ৪০ রানে ফিরিয়ে ৫১ রানের জুটি ভাঙেন স্টার্ক। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা কুইন্টন ডি কককে ফেরান হেইজেলউড। দলে ফেরা জ্যাকসন বার্ড ফিরিয়ে দেন ফর্মে থাকা আরেক ব্যাটসম্যান টেম্বা বাভুমাকে। ১৬১ রানে দক্ষিণ আফ্রিকা হারায় ৭ উইকেট। দু প্লেসি ছিলেন অবিচল। আরেক প্রান্তে সতীর্থ ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিলেও দলকে এগিয়ে নিয়ে যান শক্ত হাতে। অষ্টম উইকেটে কাইল অ্যাবটকে নিয়ে গড়েন ৫৪ রানের জুটি। ১৪৭ বলে স্পর্শ করেন ষষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরি। পেরিয়ে যান দুই হাজার রানের মাইলফলকও। শেষ উইকেটে তাবরাইজ শামসিকে নিয়ে ৩৯ রানের জুটিতে দলের রান ছাড়িয়ে যায় আড়াইশ। আচমকাই আসে ইনিংস ঘোষণা। দু প্লেসি অপরাজিত ১১৮ রানে। কৃত্রিম আলোয় শেষ কয়েক ওভার অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ের পরীক্ষা নেওয়ার ভাবনা ছিল। দু প্লেসির সিদ্ধান্তে প্রভাবক ছিল আরেকটি ব্যাপারও। চোট নিয়ে তখন মাঠের বাইরে ডেভিড ওয়ার্নার। মানে তখনই ব্যাটিংয়ে নামতে পারবেন না। অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডারে আঘাত হানার সুবর্ণ সুযোগ। অভিষিক্ত ম্যাথিউ রেনশ আর উসমান খাওয়াজা অবশ্য বিপদ ঘটতে দেননি। প্রোটিয়া বোলাররা চেষ্টা করেছেন, তবে দুই ব্যাটসম্যান পড়ে থাকেন দাঁত কামড়ে। ব্যাটে প্রথম রানের দেখা পেতেই লেগে যায় ৩৮ বল! ১৯ বলে প্রথম রানের দেখা পান রেনশ। দু প্লেসির দিনে শেষটা অস্ট্রেলিয়া করেছে স্বস্তিতেই। রেনশর পাশাপাশি টেস্ট ক্যাপ পেয়েছেন নিক ম্যাডিনসন ও পিটার হ্যান্ডসকম। তিনজনই বাটসম্যান, তিন জনের ওপরই অনেকটা নির্ভর করবে ম্যাচের গতিপথ! সংক্ষিপ্ত স্কোর: দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৭৬ ওভারে ২৫৯/৯ (ডি.) (কুক ৪০, এলগার ৫, আমলা ৫, দুমিনি ৫, দু প্লেসি ১১৮*, বাভুমা ৮, ডি কক ২৪, ফিল্যান্ডার ৪, অ্যাবট ১৭, রাবাদা ১, শামসি ১৮*; স্টার্ক ২/৭৮, হেইজেলউড ৪/৬৮, বার্ড ২/৫৭, লায়ন ১/৪৫)। অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ১২ ওভারে ১৪/০ (খাওয়াজা ৩*, রেনশ ৮*, ফিল্যান্ডার ০/১০, অ্যাবট ০/০, রাবাদা ০/১, শামসি ০/১) আর/১০:১৪/২৪ নভেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2fWddJY
November 25, 2016 at 05:36AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন