ঢাকা, ৩০ নভেম্বর- বিপিএলের গায়ে লেগে গেছে নানা কাটার আঁচড়। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ। মাঠে ক্রিকেটারদের অখেলোয়াড়োচিত আচরণ ও এর শাস্তি। এসবের সঙ্গে এবার নতুন করে যোগ হলো মাঠে বাইরের অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত ঘটনা। যে ঘটনায় চরমতম শাস্তি পেলেন এবারের বিপিএলের সাত আইকনের একজন; সাব্বির রহমান রুম্মন। তার সঙ্গে জাতীয় দলের আরেক তরুণ ক্রিকেটার আল-আমিন হোসেনও শাস্তি পেলেন। আজ সন্ধ্যায় বিসিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, মাঠের বাইরে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সাব্বির রহমানের বিপিএল পারিশ্রমিকের এক-তৃতীয়াংশ এবং আল-আমিনের পারিশ্রমিকের অর্ধেক কাটা যাবে। প্রসঙ্গত এবারের এ+ ক্যাটাগরির ক্রিকেটার হিসেবে সাব্বির রহমানের পারিশ্রমিক ৪০ লাখ টাকা। তার এক-তৃতীয়াংশ অর্থ কাটার অর্থ হলো প্রায় ১৩ লাখ টাকা হাতছাড়া। অন্যদিকে আল-আমিনের পারিশ্রমিক ২৫ লাখ। ৫০ ভাগ কাটার অর্থ সাড়ে ১২ লাখ টাকা পাবেন না তিনি। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বিসিবির ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি মিডিয়ায় আসার পর একটাই প্রশ্ন, হঠাৎ এমনকি ঘটল যে এত বড় শাস্তির মুখে সাব্বির এবং আল-আমিন? রাজশাহী কিংসের সাব্বির রহমান রুম্মনের সাথে আগের রাতে খেলা চলাকালীন বিবাদ হয়েছিল রংপুর রাইডার্সের আফগান রিক্রুট মোহাম্মদ শাহজাদের সাথে। এক পর্যায়ে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরার পথে সাব্বিরের কনুইতে ব্যাট দিয়ে আঘাত করে দুই ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধও হয়েছেন শাহজাদ। আর সাব্বিরের ম্যাচ ফির ১৫ ভাগ কাটা গেছে। এক রাতের মধ্যে আবার কী ঘটল যে সাব্বিরকে এত বড় শাস্তির মুখে পড়তে হলো? তবে কি তারাও ম্যাচ পাতানোর পাঁয়তারা করছিলেন? বিসিবি পরিচালক ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিকের সোজাসাপটা জবাব, ম্যাচ কিংবা কোনো স্পট ফিক্সিং কেলেংকারির সাথে জড়িত থাকার প্রশ্নই ওঠে না। এটা কোনো ফিক্সিং ইস্যু নয়। তাহলে কী? এটা স্রেফ মাঠের বাইরের একটা ঘটনা। যার শাস্তি হিসেবেই সাব্বির ও আল-আমিনের মূল পারিশ্রমিকের বড় অংশ কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মাঠের বাইরে এমন কি ঘটনা যে এতবড় অর্থ দণ্ড? তার পরিষ্কার ব্যাখ্যা দেননি বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল সদস্য সচিব। মঙ্গলবার রাতে আলাপে তিনি বলেন, বিপিএলকে স্বচ্ছ রাখতে আমরা নিজেদের অর্থায়ন ও ব্যবস্থাপনায় এক বিশেষ নজরদারি বাহিনী মোতায়েন করেছি। সেই নজরদারি ও খবরদারি বাহিনীই সাব্বির ও আল-আমিনের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এনেছে। তাদের কাছে পরিষ্কার তথ্য-উপাত্ত ও প্রমাণও আছে। এমন কী কর্মকাণ্ড যা বিসিবির খবর ও নজরদারির কাজে নিয়োজিত বিশেষ বাহিনীর কাছে ধরা পড়েছে? এর ব্যাখ্যা দিতে চাননি ইসমাইল হায়দার মল্লিক। তবে আকার ইঙ্গিতে যা বলেছেন, তার ভাবার্থ হলো সাব্বির ও আল-আমিন যে অন্যায় কাজ করেছেন, যে কর্মকাণ্ডের জন্য তাদের শাস্তি দেয়া হয়েছে- তা আমাদের সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে বড় ধরনের অন্যায়। অগ্রহণযোগ্য অপরাধ। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল সদস্য সচিব এর বাইরে আর কিছু না বললেও ক্রিকেট পাড়ায় জোর গুঞ্জন- সাব্বির ও আল -আমিনের বিরুদ্ধে অবৈধ যৌনাচারে লিপ্ত থাকার অভিযোগ আছে। একটি নির্ভরশীল সূত্র জানিয়েছে, বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বে হোটেলে অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন ওই দুই জাতীয় ক্রিকেটার। বিসিবির নজরদারি ও খবরদারি কমিটির হাতে ওই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রমাণও আছে। আর তাই বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সুপারিশে বিসিবি কোনো রকম দ্বিধায় না ভুগে সাব্বির রহমান ও আল-আমিন হোসেনের বিরুদ্ধে এত বড় অর্থ দণ্ডের শাস্তি দিয়েছে। প্রসঙ্গত আল-আমিন হোসেনের বিরুদ্ধে এর আগেও একবার মাঠের বাইরে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছিল। তাও কোন ছোটখাটো আসর বা সিরিজে নয়। গত বছর (২০১৫ সালে) বিশ্বকাপের সময় অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে আল আমিনকে সরাসরি দেশে ফেরত পাঠানোও হয়েছিল। সাব্বিরের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ প্রথম হলেও একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, বিপিএলের আগে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ানডের পর টেস্টের আগে ম্যানেজারের অনুমতি ছাড়া রাতে হোটেলের বাইরে গিয়ে টিম রুলস ভেঙে বেশি রাতে হোটেলে ফিরেছিলেন সাব্বির। কিন্তু তখন তার বিরুদ্ধে কোনোরকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। মৌখিকভাবে সতর্ক করে দেয়া হয়েছিল শুধু। মাস খানেক পর সেই চট্টগ্রামে গিয়েই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে মোট পারিশ্রমিকের তিন ভাগের এক ভাগ হারিয়ে বসলেন তিনি। এফ/০৯:১৫/৩০ নভেম্বর



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2gTGCFQ
November 30, 2016 at 03:17PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top