আবুল খায়ের ● কুমিল্লায় জেলা পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে মাঠ পর্যায়ে চরম অস্থিরতা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। দলের ত্যাগী ও প্রবীণদের উপেক্ষা করে রাজনীতির মাঠে একবারেই অচেনা মুখ ও একজন সাবেক সামরিক কর্মকর্তাকে দল থেকে সমর্থন দেয়ায় তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝে চরম হতাশা বিরাজ করছে।
সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে কিভাবে কার সহায়তায় নাটকীয়ভাবে সাবেক নৌবাহিনীর প্রধান দলীয় সমর্থন পেলেন এ নিয়েও জেলাব্যাপী চলছে আলোচনা-সমালোচনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ নিয়ে ঝড় উঠেছে।
কুমিল্লা জেলা পরিষদ নির্বাচনে সাবেক এমপি, বর্তমান প্রশাসক, প্রবীণ নেতাসহ প্রায় ১৮ জন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। সোমবার দুপুরে মনোনয়ন বঞ্চিত কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রথম যুগ্ম সম্পাদক দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
জানা যায়, কুমিল্লা জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সমর্থন পেতে বর্তমান প্রশাসক আলহাজ মো. ওমর ফারুক, প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আফজল খান অ্যাডভোকেট, সাবেক নৌ-বাহিনী প্রধান রিয়ার এডমিরাল মো. আবু তাহের, মহিলা আসনের সাবেক এমপি অধ্যাপিকা জোবেদা খাতুন পারুল, জেলা আওয়ামী লীগের প্রথম যুগ্ম সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন স্বপন, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল আউয়াল সরকার, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার, সিনিয়র সহসভাপতি ম. রুহুল আমিন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ জাহান মজুমদার, হারুন আল রশীদ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. মো. শহীদ উল্লাহ, ডা. খোরশেদ আলম, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি শাহীদুল ইসলাম শাহীন, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল করিম মজুমদার ও জিল্লুর রহমান কেন্দ্রে আবেদন করলেও নাটকীয়ভাবে দলীয় সমর্থন পেয়েছেন জেলার বরুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক নৌ-বাহিনীর প্রধান মো. আবু তাহের।
জেলা পরিষদ নির্বাচনে কুমিল্লা উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ১ ডজনেরও অধিক ত্যাগী নেতা থাকলেও জেলার রাজনীতির মাঠে অপরিচিত মুখ সাবেক সামরিক কর্মকর্তা মো. আবু তাহেরকে দলীয় সমর্থন দেয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না জেলার ত্যাগী নেতাকর্মীরা।
এ নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক নেতাকর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন ‘মনোনয়ন প্রত্যাশী দেড় ডজন প্রার্থীর মধ্যে দলের দীর্ঘদিনের নির্যাতিত ও ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করে যাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে, তার নির্বাচনী সফলতা-ব্যর্থতার দায়ভার মাঠে পর্যায়ের নেতারা কিভাবে নেবে।
মনোনয়ন বঞ্চিত অপর এক প্রার্থী জানান, মো. আবু তাহের যে উপজেলার বাসিন্দা ওই উপজেলার আওয়ামী লীগ এখন ৩ ভাগে বিভক্ত, ওই উপজেলার ভোটই তিনি পাবেন কিনা সন্দেহ।
এদিকে মনোনয়নবঞ্চিত কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রথম যুগ্ম সম্পাদক ও বুড়িচং উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন স্বপন জানান, দলের মনোনয়ন বোর্ড যাকে যোগ্য মনে করেছে তাকেই দলীয় সমর্থন দিয়েছে, তবে জেলা পরিষদ নির্বাচন যেহেতু দলীয় প্রতীকে হচ্ছে না, এখানে দলীয় মনোনয়নের কোনো কোনো ক্যাটাগরিও নেই, আছে সমর্থনের বিষয়, তাই আমি ভোটারদের দাবি ও সমর্থনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ইনশাল্লাহ নির্বাচনে অংশ নেব এবং সোমবার দুপুরে মনোনয়ন দাখিল করেছি।
এ বিষয়ে দলীয় সমর্থনপ্রাপ্ত আবু তাহের জানান, দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে, তাই মনোনয়ন বঞ্চিতদের মাঝে ক্ষোভ থাকতে পারে, আমি সবাইকে নিয়ে কাজ করব, মান-অভিমান থাকবে না।
তিনি আরও জানান, আমার নিজ উপজেলা বরুড়া আওয়ামী লীগের কোন্দল নিরসনেও আমি কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
জেলা সিনিয়ন নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম জানান, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
The post কুমিল্লায় আ’লীগ প্রার্থীর ভরাডুবির আশংকা appeared first on Comillar Barta™.
from Comillar Barta™ http://ift.tt/2gE8xZL
November 30, 2016 at 08:31AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন