বিপিএলে গত আসরের ফাইনাল খেলা বরিশাল বুলসের বিদায় অনেকটা নিশ্চিত; কিন্তু এখনও যে সুক্ষ হিসেবের সুতো ঝুলছে, তাতে এই দলটির সমর্থকরা আশায় বসতি গড়তেই পারে। তবে, তাতে অনেকগুলো ‘কিন্তু’ জড়িত।
আবার ঢাকা ডায়নামাইটস, চিটাগাং ভাইকিংস এবং খুলনা টাইটান্সের শেষ চার অনেকটা নিশ্চিত যে সেটা এখন বলেই দেয়া যায়। তবুও, হিসেব-নিকেশ যে এখনও বাকি রয়েছে! মোট কথা, বিপিএলের শেষ মুহূর্তে এসে এখনও অনেকে শেষের অংক মেলাতে ব্যস্ত।
তবে কুমিল্লা আর বরিশালকে জিতলেও জিততে হবে অনেক বড় ব্যবধানে। তবেই রান রেট বাড়বে তাদের। না হয়, শেষ চারের স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থাকবে। তবে এর মধ্যে খুলনা, ঢাকা, চিটাগাং, রাজশাহী কিংবা রংপুর যে বসে থাকবে না, তা তো চোখ বন্ধ করে বলে দেয়া যায়। সে ক্ষেত্রে শেষ চারের অংক যে সত্যিই জটিল এবং কঠিন হয়ে রয়েছে তা অনায়াসেই বলা যায়।
বিপিএলের গত আসরের চ্যাম্পিয়ন মাশরাফির কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স এবার শুরু থেকেই নিষ্প্রভ। পুরো দলটির একজন ক্রিকেটারও জ্বলে উঠতে পারেননি। গত আসরে যে ইমরুল কায়েস, আসহার জাইদি, মারলন স্যামুয়েলসরা জ্বলে উঠেছিলেন তারা এবার পুরোপুরি ফ্লপ। মাশরাফির ধারালো নেতৃত্বও এবার উজ্জীবিত করতে পারেনি চ্যাম্পিয়নদের।
যে কারণে, টানা হারতে হারতে দলটির মধ্যে মতবিরোধও দেখা দিয়েছিল। যা মাশরাফির রাগের মধ্য দিয়ে প্রকাশ্যে চলে আসে। চট্টগ্রামে গিয়ে রাজশাহীরকে হারিয়ে প্রথম জয়ের দেখা পেলেও কুমিল্লা প্লে-অফ নির্ধারণে কোন ভুমিকা রাখবে এমনটা কেউ এবার প্রত্যাশা করেনি; কিন্তু ঢাকায় এসে বরিশাল আর রাজশাহীকে হারিয়ে লিগ টেবিল পুরোপুরি জমিয়ে তুলেছে মাশরাফির দল।
তবে মাশরাফিদের আগে লিগ টেবিল অনিশ্চিত করার মূল কাজটি করেছে মূলতঃ রাজশাহী কিংসই। ড্যারেন স্যমির দল ঢাকায় তৃতীয় পর্বে এসে যেন নতুন করে জীবন পেয়েছে। চট্টগ্রাম পর্ব শেষে যে দলটি ছিল পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে, সেই রংপুর রাইডার্স ঢাকায় এসে রাজশাহীর সামনে পড়ে গেলো হেরে। পরের ম্যাচেই আরেক শীর্ষদল খুলনা টাইটান্সকে হারিয়ে দিল রাজশাহী।
মিরাজ-সাব্বিরদের টানা দুই জয় এবং একের পর এক রংপুর রাইডার্সের পরাজয় লিগ টেবিল দিল ওলট-পালট করে। রংপুর নামতে নামতে এখন অবস্থান করছে পাঁচ নম্বরে। রাজশাহী উঠে গেলো চারে। অপর দিকে ঢাকায় তৃতীয় পর্বে চিটাগাং ভাইকিংসে ক্রিস গেইলের যোগ দেয়ার পর পুরোপুরি বদলে গেলো যেন দলটি।
দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন তামিম ইকবাল। গেইল আসার পর টানা দুই ম্যাচে ষাটোর্ধ্ব রান। বিপিএলে এবারের আসরে সর্বোচ্চ রানের আসনটি মুশফিককে সরিয়ে দখলে নিয়ে নিলেন তামিম। তার দল চিটাগাং ভাইকিংসও এক টানে চলে এলো পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় অবস্থানে।
যে চিটাগাং ঢাকায় প্রথম পর্বে একের পর এক হারতে হারতে দিশেহারা, চট্টগ্রাম গিয়েও প্রথম ম্যাচে হেরে বসেছিল। সেই দলটি চট্টগ্রামেই পরের ম্যাচগুলোতে ঘুরে দাঁড়াল এবং এখন তো তামিমরাই টুর্নামেন্টে শিরোপা জয়ের অন্যতম দাবিদার।
ঢাকা ডায়নামাইটস বিপিএল শুরুর আগে থেকেই কাগুজে বাঘ। সমরে-শক্তিতে যে তারাই বিপিএলে অন্যতম ফেবারিট, সেটা আগে থেকেই বোঝা যাচ্ছিল। দলটির রিক্রুটমেন্ট দেখেই আগাম কেউ কেউ চ্যাম্পিয়ন তকমা দিয়ে রেখেছিল সাকিব আল হাসানের দলকে।
যারা একসঙ্গে নিয়ে আসতে পেরেছে দুই লংকান কিংবদন্তী কুমার সাঙ্গাকারা এবং মাহেলা জয়াবর্ধনেকে। শ্রীলংকা জাতীয় দলের বাইরে এবারই প্রথম সম্ভবত এই দুই বন্ধু এক সঙ্গে একই দলে খেলছেন। শুরু থেকেই সাকিব আল হাসানের দল ফর্মে। একটি-দুটি ম্যাচ হারলেও তারা কখনও কক্ষপথ থেকে ছিটকে যায়নি।
তবে, দলটি যেন পরিপক্ক হয়েছে ঢাকায় তৃতীয় পর্বে এসে। টানা জিততে জিততে, একইসঙ্গে রংপুরের টানা পরাজয় ও খুলনা টাইটান্সের খেই হারিয়ে ফেলার ফলে ঢাকা এখন পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষস্থানটি নিরঙ্কুশ করে নিয়েছে। ১০ ম্যাচ শেষে তাদের পয়েন্ট ১৪।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল খুলনা টাইটান্স ছিল আন্ডারডগ। তাদেরকে নিয়ে বাজি ধরার সাহস খুব বেশি লোক পেতো ন। সেই দলটির অধিনায়ক নিজেই যখন দুই ম্যাচে শেষ ওভারের ম্যাজিকে দলকে জিতিয়ে ছাড়েন, তখন দলটির গুণগত কিছু পরিবর্তন তো হওয়ারই কথা। সেটাই হলো। খুলনা টাইটান্সও দুরন্ত গতিতে ছুটতে শুরু করলো। মাঝে মধ্যে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানও দখল করেছিল তারা। আবার পেছনেও পড়েছে। বর্তমান অবস্থানে চিটাগাং ভাইকিংসের সঙ্গে পয়েন্ট সমান হলেও রান রেটের ব্যবধানে তৃতীয় স্থানে।
বুধবার অনুষ্ঠিত রাজশাহী কিংস আর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ম্যাচে ফলই পয়েন্ট টেবিল অনেকটা কঠিন করে ফেলেছে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স যদি রাজশাহীর বিপক্ষে না জিততো তাহলে মাশরাফিদের আনুষ্ঠানিক বিদায়টা বলে দেয়া যেতো; কিন্তু কুমিল্লার জয়ে রাজশাহীর সমিকরণটাও কঠিন হয়ে গেলো।
রংপুরকে পেছনে ফেলে তারা শেষ চারে যেতে পারবে কি না তা বড় একটা প্রশ্ন। প্রতিটি দলেরই দুটি করে ম্যাচ বাকি। এই দুই ম্যাচে কুমিল্লা আর বরিশাল যদি জেতে তাহলে তাদেরও পয়েন্ট হবে ১০ করে। তখন শেষ চারে ওঠার সম্ভাবনা আছে এই দুই দলেরও। তবে, সে ক্ষেত্রে অন্তত রাজশাহী আর রংপুরের আর কোনো ম্যাচ জেতা যাবে না। তখন রান রেটের হিসেবে যে এগিয়ে থাকবে তাদেরই সম্ভাবনা থাকবে শেষ চারে যাওয়ার।(এখানে সব হিসাব-নিকাশ টানা হয়েছে রাজশাহী-কুমিল্লার ম্যাচ পর্যন্ত) সূত্র: জাগোনিউজ
The post বিপিএলের শেষ চারে এখনও আশা আছে বরিশাল বুলসের! appeared first on Amader Barisal - First online Newspaper of Greater Barisal - Stay with Barisal 24x7.
from Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7 http://ift.tt/2gQcyrQ
December 02, 2016 at 09:27PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন