কাতারে সব বিদেশী শ্রমিকের নিয়ন্ত্রক তার কাফিল বা স্পন্সর। বেতন ভাতা ঠিক সময়ে না পেলে, কিংবা শোষণের শিকার হলে চাকরি ছাড়ার উপায় নেই। কিংবা অন্যখানে ভাল চাকরির সুযোগ পেলেও কাফিল বদলানোর সুযোগ নেই।
চাকরি ছাড়া কিংবা প্রয়োজনে দেশে ফিরে আসলে আরোপ হয় দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা।
‘কাফালা’ বলে পরিচিত এই ব্যবস্থা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনা হবার পর অবশেষে তা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা কার্যকর হতে যাচ্ছে আজ থেকে।
কি পরিবর্তন আসছে?
কাতারের শ্রম আইন সংস্কার করে, কাফালা পদ্ধতির পরিবর্তে এখন থেকে সকল নিয়োগ হবে চুক্তিভিত্তিক। সেই সঙ্গে আগে থেকে সেখানে থাকা শ্রমিকদের চুক্তিও নতুন পদ্ধতিতে রূপান্তরিত হবে।
দেশে ফিরতে হলেও কাফিলের অনুমতি কিংবা অনাপত্তির প্রয়োজন হবে না। সেক্ষেত্রে একজন শ্রমিকের বিরুদ্ধে যদি কোন আইনি অভিযোগ না থাকে, সে ইচ্ছা ও প্রয়োজন মত নিজ দেশে ফিরে যেতে পারবে।
এছাড়া চাকরি পরিবর্তন করতে চাইলে, নতুন আইন অনুযায়ী এখন থেকে সেটি আর অসম্ভব নয়।
বর্তমান কাফিলের সাথে চুক্তি শেষ হলে কিংবা এক প্রতিষ্ঠানে পাঁচ বছর কাজ পর একজন শ্রমিক চাইলে অন্যত্র কাজ করতে পারবেন। তবে, এক্ষেত্রে কাফিলের অনুমতির প্রয়োজন হবে।
তবে, নতুন কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান একজন শ্রমিককে বর্তমান নিয়োগকারীর অনুমতি ছাড়াই নিয়োগ দিতে পারবেন।
কাতারের শ্রম অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়ে একজন শ্রমিক কাফিল বা স্পন্সর পরিবর্তন করতে পারবেন।
এছাড়া চুক্তি শেষ হবার আগেই চাকরি ছেড়ে দিতে চাইলে, নিয়োগকারী এবং সরকারী অনুমোদন সাপেক্ষে তা করতে পারবেন একজন বিদেশী শ্রমিক।
অপব্যবহারের আশংকা
নতুন আইনের অপব্যবহার হতে পারে, এমন আশংকা করছে অনেক শ্রমিক সংগঠন।
যেমন যেহেতু এখন থেকে সকল বিদেশী শ্রমিককে চুক্তিতে নিয়োগ করা হবে, ফলে নিয়োগকারীর খুশিমতো শ্রমিক ছাটাই হবার আশংকা রয়েছে।
কোন শ্রমিক যদি ছাটাই হয়, এবং সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ না করে কিংবা যদি তার অভিযোগ আদালত আমলে না নেয়, সেক্ষেত্রে নতুন আইন অনুযায়ী ঐ শ্রমিক পরবর্তী চার বছরের মধ্যে আর কাতারে কাজের অনুমতি পাবে না।
এছাড়া, আদালতে রায়ে যদি কোন শ্রমিককে দেশে পাঠিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত হয়, পরবর্তীতে কাতারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া সেদেশে আর ঢুকতে পারবেন না ঐ ব্যক্তি।
কাতার বাংলাদেশী শ্রমিকদের জন্য জনপ্রিয় একটি গন্তব্য। সরকারি হিসেবে এই বছরও এখন পর্যন্ত দেশটিতে এক লাখের মতো বাংলাদেশী গেছে।
২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক দেশ কাতারে এখন প্রচুর অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে, যাতে মূলত নেপাল, বাংলাদেশ এবং ভারতের কয়েক লক্ষ শ্রমিক কাজ করছে।
এর আগে কাতার বিদেশী শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি ও নিরাপদ কর্ম-পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারছে না, এমন অভিযোগ শোনা গেছে।
ইতিমধ্যেই তার সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ আন্তর্জাতিক অনেক সংগঠন।
from প্রবাস – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2hoCN8J
December 13, 2016 at 11:38AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন