মধ্যপ্রাচ্য ডেস্কঃ ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছেন, জাতিসংঘের ফিলিস্তিনের ভূ-খণ্ডে ইসরাইলের বসতি স্থাপন বন্ধের প্রস্তাবে তার দেশের সমর্থন করার অর্থ হচ্ছে ‘যুদ্ধের ঘোষণা’। খবর দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের।
ইসরাইলি গণমাধ্যম হারেজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিরাপত্তা পরিষদের ভোট হওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ব্যক্তিগতভাবে ফোন করে নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুরে ম্যাককালিকে বলেছেন, এটি মানহানিকর সিদ্ধান্ত। আমি চাই, আপনারা এই প্রস্তাবটিকে সমর্থন ও প্রচার করা থেকে বিরত থাকুন। আর যদি আপনারা এই প্রস্তাবের পক্ষে প্রচার চালিয়ে যান, তাহলে আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি হবে যুদ্ধ ঘোষণা। এর পরিণতি হবে দুই দেশের সম্পর্কের বিচ্ছেদ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মি. ম্যাককালি পিছু হটতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, নিউজিল্যান্ডের নীতির সঙ্গে এই প্রস্তাব সামঞ্জস্যপূর্ণ।
প্রস্তাব পাস হওয়ার পর নিউজিল্যান্ড ও সেনেগালের রাষ্ট্রদূতদের তলব করে ইসরাইল কর্তৃপক্ষ। সেনাগালের প্রতি ইসরাইলের অর্থসাহায্য বাতিল করে দেয়া হয়।
গত বৃহস্পতিবার ইসরাইল ও নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপের মুখে মিশরে খসড়া প্রস্তাব তুলে নেয়। তার পরের দিন শুক্রবার নিউজিল্যান্ড, সেনেগাল, মালয়েশিয়া এবং ভেনেজুয়েলা প্রস্তাবটি উত্থাপন করে। গত শুক্রবার নিরাপত্তা পরিষদের ভোটে এই প্রস্তাব পাস হওয়ার পর মার্কিন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কঠোর সমালোচনা করেন। যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিনের নীতি ভেঙে ইসরাইল বিরোধী প্রস্তাবে ভেটো প্রদানে বিরত থাকে। নেতানিয়াহু একে ‘লজ্জাজনক সিদ্ধান্ত’ বলে অ্যাখায়িত করেন।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেমে ইসরাইলের বসতি স্থাপন আন্তর্জাতিক আইনের মারাত্মক লঙ্ঘন। অনতিবিলম্বে ফিলিস্তিন ভূ-খণ্ডে ইসরাইলের অবৈধ বসতি স্থাপন বন্ধের দাবি জানানো হয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মতে, ১৯৬৭ সালের গ্রিন লাইন ধরে যেকোনো ধরনের ইসরাইলি স্থাপনা নির্মাণ অবৈধ।
নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরাইল এই প্রস্তাব মেনে চলবে না।
তিনি আরও বলেন, একই সময়ে নিরাপত্তা পরিষদ সিরিয়ার পাঁচ লাখ মানুষকে হত্যা করার হাত থেকে বাঁচাতে কিছু করছে না। লজ্জাজনকভাবে মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র গণতান্ত্রিক দেশ ইসরাইল এবং জেরুজালেমের দখলকৃত অংশ নিয়ে তারা জোট বেঁধেছে।
গত শুক্রবারের নিউজিল্যান্ডের ভোট প্রসঙ্গে ম্যাককালি বলেন, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে আমরা খুব উদার। মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়াকে সমর্থন করার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে আরও বেশি ভূমিকা রাখা উচিত। আমরা যে পদক্ষেপ নিয়েছি তা ফিলিস্তিন প্রশ্নে আমাদের দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠিত নীতির সঙ্গে খুবই সঙ্গতিপূর্ণ।
এদিকে পূর্ব জেরুজালেমে নতুন করে আরও কয়েকশ’ বসতি স্থাপনকে কেন্দ্র করে আজ বুধবার ভোটাভুটির পরিকল্পনা করেছিল জেরুজালেম সিটি কাউন্সিল৷ কিন্তু মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখবেন জানার পর এ সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটেছে তারা৷
কাউন্সিল সদস্য হানান রুবিন জানান, এই ভোট বাতিলের নির্দেশ সরাসরি এসেছে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কাছ থেকে৷
from মধ্যপ্রাচ্য ও দূরপ্রাচ্য – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2iip7iG
December 29, 2016 at 01:52AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন