লাকসাম-মনোহরগঞ্জে ধুমকরদের দিন-রাত ব্যস্ততা

নিজস্ব প্রতিবেদক ● লাকসাম-মনোহরগঞ্জে শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে ধুমকরদের কাজের ব্যস্ততায় চোখে ঘুম নেই। ইতিমধ্যে রাতের বেলায় পড়তে শুরু হয়েছে কুয়াশা ও হিমবাতাস জানিয়ে দিচ্ছে শীতের আগমণী সংকেত।

প্রবাদ আছে পৌষ ও মাঘ শীতকাল হলেও কার্তিক মাসের শেষ দিকে এবং অগ্রহায়ন মাসের শুরুতেই দিনের শেষ ভাগে এসে বেশ শীত অনুভব হয়। শেষ রাতে চারিদিক দিকে কুয়াশায় ঢাকা থাকে সমগ্র এলাকা । বর্তমান সময়ে হালকা শীত অনুভব হলেও এসময়টা বৃদ্ধ ও শিশুদের জন্য বিপদজনক হয়ে ওঠেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শীতের সরঞ্জাম তৈরির দোকানগুলোতে মহাধুমধাম ও ব্যস্ততায় রয়েছে ধুমকররা। তুলা, রুই, ঝুট ও নারিকেলের চাপল সংগ্রহ এবং ওইসব পন্য পরিস্কার-পেটানোর কাজগুলোতে প্রতিনিয়ত উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। এদিকে শীতের আগমনী বার্তা শুরুর সাথে সাথে বেড়েছে ধুমকরদের ব্যস্ততা। লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাট-বাজারে শীতের অন্যতম বস্ত্র লেপ-তোষক তৈরীতে ধুমকরদের দোকানে ক্রেতাদের ভীড় দেখা যায়। বিশেষ করে মনোহরগঞ্জ বাজার ,দৌলতগঞ্জ রেলগেইট, উত্তর লাকসাম, লাকসাম রেলওয়ে জংশন বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় ধুমকরদের তৈরী শীতের লেপ, তোষক, জাজিম, বালিশসহ অন্যান্য সামগ্রী বিক্রি করতে দোকান সাজিয়েছে ওই পেশার ব্যবসায়ীরা।

লাকসাম দৌলতগঞ্জ বাজারের স্থানীয় বাসিন্দা ধুমকররা জানান, শীতের শূরু এসময়টা বছরের অন্য সময়ের চেয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। লাকসাম দৌলতগঞ্জ এলাকার পাইকারী শীত পোষাকের দোকান থেকে দুই উপজেলার প্রায় শতাধিক খুচরা দোকানদার ওইসব মালামাল নিয়ে থাকে। একটি লেপ-তোষক তৈরির দোকানের কারখানায় দিনরাত কাজ করে বেশ কয়জন কারিগর তারা সকলেই আত্মীয় স্বজন। তাদের পত্রৈক বাড়ি একই এলাকার উত্তর লাকসামে। তারা সকলেই এলাকায়  লেপ তোষক তৈরি করছেন ৮-৯ বছর যাবত। চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন তারা। সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাজ করে ৪ থেকে ৫টি লেপ ও তোষক তৈরি করতে পারেন। আর প্রতিটি তৈরির জন্য মালিক থেকে ১৫০-২০০ টাকা পান। তুলা ও সেলাইয়ের নকশার কারুকাজ নমুনার ওপর ভিত্তি করে লেপ ও তোষকের দর দাম নির্ধারন হয়ে থাকে।

দৌলতগঞ্জ বাজারের শীতবস্ত্র ব্যবসায়ী ধুমকররা জানায়, এ এলাকার মানুষ এখন আর আগের মত লেপ-তোষক বানাতে চায় না। কারন বাজারে অনেক রেডিমেট মালামাল পাওয়া যায়। বিশেষ করে ওইসব পন্য বানাতে যে সকল কাঁচা মাল প্রয়োজন সেগুলোর পাইকারী -খুচরা বাজারে আগের তুলনায় বর্তমানে অনেক বেশী। ফলে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মালামাল গুলোর বিক্রিতে অনেক দাম হাঁকতে হয়। বিক্রি একেবারেই কম। পৈত্রিক পেশা হিসাবে কোন রকমে খেয়ে- পড়ে বেঁচে আছি।

স্থানীয় ধুমকর শ্রমিকরা আরও জানান, বেশির ভাগ ক্রেতা রেডিমেট লেপ কেনার চেয়ে অর্ডার দিতেই বেশি উৎসাহ বোধ করে। বর্তমানে দুইধরনের তুলার কাজে বেশি চাহিদা। সাদা সুপার তুলা প্রতি কেজি ১২০ টাকা। আর কালো ব্লাজার প্রতি কেজি তুলা ৫০ টাকা, হুইল ৭০ টাকা দরে বিক্রি করেন তারা। একজন লোক ব্যবহার করতে পারে এমন সাইজের একটি লেপ তৈরি করতে ৩ থেকে সাড়ে ৩কেজি তুলা প্রয়োজন। আর দুইজন বা ততোধিক লোকের বেশি ব্যবহার্য লেপের জন্য সাড়ে ৪ থেকে সাড়ে ৫ কেজি তুলা প্রয়োজন হয়। সারাদিনে তোষকের চেয়ে লেপ তৈরির অর্ডার বেশি আসে।

এদিকে নিন্ম সাধারন মানুষের জন্য কমমূল্যের লেপ তৈরীতে চাহিদা একটু বেশি। আর এজন্যই লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাটে গড়ে উঠা লেপ তোষক তৈরির দোকানগুলোতে ক্রেতা বিক্রেতাদের ভিড় চোখে পড়ার মত।

The post লাকসাম-মনোহরগঞ্জে ধুমকরদের দিন-রাত ব্যস্ততা appeared first on Comillar Barta™.



from Comillar Barta™ http://ift.tt/2hfLMwg

December 22, 2016 at 03:52PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top