মেঘনা প্রতিনিধি ● জেলার মেঘনা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাজুল ইসলাম তাজকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ ভাবে হরতাল, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে স্থানীয় আ’লীগ ও অংগসংগঠন। হোমনা-মেঘনা সড়কে বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে উপজেলা পরিষদ ও মানিকানচর বাজারসহ রাস্তার মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে প্রশাসন। এসময় সকল দোকানপাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ দেখা গেছে। হরতাল সমর্থনকারীরা মানিকারচর কলেজ মাঠে সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশ করে অবিলম্বে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের মুক্তি ও ইউএনও’র প্রত্যাহারের দাবী জানান। এদিকে হরতাল ও অবরোধ চলাকালীন সময়ে উপজেলা পরিষদে গিয়ে ইউএনওর কার্যলয়টি তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখাযায়।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের প্রকল্প দেখিয়ে পার্শ্ববর্তী মানিকচর ইউনিয়নের করিমাবাদ গ্রামে একটি অপ্রত্যাশিত সেতু বরাদ্দ দেন উপজেলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহিনা আক্তার সুমী। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম তাজের গ্রামের কাজটি তাকে না জানিয়ে ৭ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উদ্বোধন করেন। এ নিয়ে দুই জনের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। এরই জের ধরে বুধাবার বিকেলে সেতুর নির্মাণ কাজের বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের কার্যসহকারী অনিল চন্দ্র বিশ্বাস মেঘনা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। ওই দিন রাতেই তিতাস থেকে মেঘনা যাওয়ার পারারবন্দ সেতু এলাকা থেকে পুলিশ আটক করে। তার আটকের খবর শুনে স্থানীয় কয়েক শতাধিক নেতা-কর্মীরা মানিকাচর এলাকায় সড়ক অবরোধ করে। পুলিশ খবর পেয়ে তাকে থানায় না নিয়ে ওইখান থেকে তাকে কুমিল্লা প্রেরণ করেন। রাতেই তার এ গ্রেফতারের প্রতিবাদে মেঘনায় হরতালের ডাক দেন আ’লীগ ও অংগসংগঠন । বৃহস্পতিবার সকাল হতে শতশত নেতা-কর্মী মেঘনা উপজেলার সকল সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ভাইস চেয়ারম্যানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং অভিলম্বে ইউএনও প্রত্যাহারের দাবী জানান।
পরে উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুস সালাম স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল অবঃ সুবিদ আলী ভুইয়ার সাথে আলাপ করে তাকে দ্রুত কারামুক্ত করার আশ্বাস দিলে সড়কের অবরোধ তুলে নিলেও হরতাল অব্যাহত রয়েছে। এ কালভার্ট নির্মানকে কেন্দ্র করে চাদাবাজি ও সরকারী কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে মেঘনা থানায় পৃথক দু’টি মামলায় ভাইস চেয়ারম্যান ও লিটন নামের যুবককে গ্রেফতার করায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
মেঘনা উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও মানিকাচর ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন, আমার ইউনিয়নের উন্নয়ন কাজ আমাকে না জানিয়ে অন্য ইউনিয়নের নামে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাদ্দ করেন। আবার আমি চেয়ারম্যান ও আমার ছোট ভাই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম তাজকে না জানিয়ে ইউএনও নিজে এসে সেতু নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন। এ নিয়ে আমার ভাই ওনাকে বলেছেন আমার গ্রামের কাজ হবে আমরা জনপ্রতিনিধি জানবো না। এ নিয়ে তর্কবিতর্ক হয়। এ সমান্য কথাকে ইস্যু করে থানায় মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর প্রতিবাদে আওয়ামীলীগ এর অঙ্গসংগঠন সমূহ হরতাল ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে।
মেঘনা থানা আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক মোঃ লিটন আব্বাসী জানান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভাইস চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে সেতু নির্মাণ হচ্ছে। অথচ তাকে না জানিয়ে ওই সেতুর কাজের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। সেতুর কাজ উদ্বোধনের সময় তখন ভাইস চেয়ারম্যান ইউএনওকে বলেন আমি জনপ্রতিনিধি হয়ে আমার বাড়ির সামনে কাজের উদ্বোধন করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে এ নিয়ে তর্ক বিতর্ক হয়। সামন্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে একজন জনপ্রতিনিধির নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা আক্তার সুমী বলেন, সরকারী কাজে বাধা এবং আমার সাথে অসৌজন্য মূলক আচরণ করার কারণে তার বিরুদ্ধে আমার অফিসের কার্যসহকারী অনিল চন্দ্র বিশ্বাস বাদী হয়ে মামলা করেছে। আমার কিছু জরুরী কাজ থাকায় অফিসের বাইরে রয়েছি।
মেঘনা থানা ওসি সামছুদ্দিন বলেন, ইউএরও’র সাথে খারাপ আচরণ এবং সরকারী কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ইউএনও অফিসের কার্য্যসহকারী বাদী হয়ে একটি মামলা করায় ভাইস চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম তাজকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে মেঘনায় হরতালের কারণে কোন আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটেনি। উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন রয়েছে।
The post মেঘনায় ভাইস চেয়ারম্যানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে হরতাল appeared first on Comillar Barta™.
from Comillar Barta™ http://ift.tt/2h6czpY
December 22, 2016 at 10:58PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন