সৌদি আরব নিয়ে ব্রিটিশ সরকারের ভেতরে দ্বন্দ্ব: পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনের মন্তব্যে হৈচৈ

arabসৌদি আরবকে নিয়ে করা কিছু মন্তব্যকে ঘিরে হৈচৈ এর মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্য সফরে যাচ্ছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন।
সৌদি আরব সম্পর্কে মি. জনসন অভিযোগ করে বলেছেন, দেশটি মধ্যপ্রাচ্যে ‘প্রক্সি ওয়ার’ চালাচ্ছে, অর্থাৎ অন্যকে দিয়ে যুদ্ধ করাচ্ছে।
ব্রিটেনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ মিত্র-দেশ সৌদি আরব সম্পর্কে এই মন্তব্য করার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ডাউনিং স্ট্রিট থেকেও মি. জনসনকে প্রকাশ্যে তিরস্কৃত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে এক বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, “পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্য ব্রিটিশ সরকারের বক্তব্য নয়। এতে সরকারের অবস্থান প্রতিফলিত হয়নি।”
বরিস জনসনের এই মন্তব্যের সমালোচনা হচ্ছে তার নিজের ও ক্ষমতাসীন দল কনসারভেটিভ দলের ভেতরেও।
অনেকে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়ে দায়িত্ব পালন করার সময় তার এধরনের মন্তব্য করা উচিত নয়।
বাহরাইনে গুরুত্বপূর্ণ এক আঞ্চলিক সম্মেলনে বরিস জনসনের আজ শুক্রবার মূল প্রবন্ধ পাঠ করার কথা রয়েছে। এরপর রবিবার তিনি যাবেন সৌদি আরব।
প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মের একজন মুখপাত্র বলেছেন, বরিস জনসনের ওপর প্রধানমন্ত্রীর ‘পূর্ণ আস্থা’ রয়েছে। তবে মি. জনসনের এই মন্তব্য একেবারেই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সৌদি আরবের সাথে সম্পর্ক আরো জোরালো করার ব্যাপারে ব্রিটেনের আগ্রহের কথা মি. জনসন তার সফরকালে তুলে ধরবেন। এবং ইয়েমেনে সৌদি আরবের ‘বিতর্কিত সামরিক অভিযানে’ ব্রিটেনের সহযোগিতার ব্যাপারেও আগ্রহ প্রকাশ করবেন।
সৌদি আরবকে আক্রমণ করে বরিস জনসন মন্তব্য করেছিলেন গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে। কিন্তু ব্রিটেনের একটি সংবাদপত্র দ্যা গার্ডিয়ানে তার একটি ভিডিও পোস্ট করার পরেই সেটি আলোচনায় চলে আসে।
ভিডিওতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়: “এরকম রাজনীতিক আছেন যারা ধর্মকে নিয়ে পাকায় এবং ধর্মকে অপব্যবহার করে। তাদের নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থেই তারা এটা করে থাকে।”
“এই গোটা অঞ্চলে (মধ্যপ্রাচ্য) যতো বড় বড় সমস্যা আছে এটি তার একটি। আর সে কারণেই সেখানে প্রক্সি ওয়ার চলছে অর্থাৎ একজন আরেকজনকে দিয়ে যুদ্ধ করাচ্ছে। এর কারণ হলো এসব দেশে শক্তিশালী কোন নেতৃত্ব তৈরি হয়নি।”
অন্যদিকে, অনেকেই মি. জনসনের পক্ষ নিচ্ছেন। তারা বলছেন, তিনি বাস্তবতাকে তুলে ধরতে সত্য কথা বলছেন।
ক্ষমতাসীন দলের একজন নেতা এবং সরকারের একজন মন্ত্রী গেভিন বারওয়েল বলেছেন, “আমাদের মধ্যে যেসব বিষয়ে উদ্বেগ আছে সেগুলো তুলে ধরাই তার কাজ।”
তিনি বলেন, “সৌদি আরব আমাদের বন্ধু। তবে আমাদের ভোটারদের অনেকেরই দেশটির ব্যাপারে কিছু সমালোচনা রয়েছে। তারা চান এই বিষয়গুলি যেন আমরা তুলে ধরি।”
আরেকজন নেতা সারাহ উলাস্টন বলেছেন, “প্রক্সি ওয়ার প্রসঙ্গে বরিস সত্য কথা বলেছেন। সেখানে জাতিগত সংঘাত বন্ধ করার জন্যে সব পক্ষের এগিয়ে আসার সময় হয়েছে।”
ইয়েমেনের যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমি আরো যোগ করতে চাই শিরশ্ছেদ, নির্যাতন, নারীর মানবাধিকার লঙ্ঘন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ এবং ইয়েমেনে বেসামরিক লোকজনের ওপর বোমা হামলার কথাও।”



from যুক্তরাজ্য ও ইউরোপ – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2gK8icC

December 09, 2016 at 10:59PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top