কবুতর খামারে কোটিপতি লাকসামের জয়নাল

নিজস্ব প্রতিবেদক ● কবুতর খামারে কোটিপতি হয়েছেন লাকসামের হাজী জয়নাল আবেদিন। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে কবুতর প্রেমিকরা বিভিন্ন প্রজাতির কবুতর পালনের খবর শুনে এক নজর দেখতে ছুটে আসেন তার খামারে।শত শত কবুতরের বাক-বাকুম ডাকে এবং রং বে-রংয়ের কবুতর দেখে আগতরা মুগ্ধ হচ্ছেন।

কবুতরের খামারের আয় দিয়ে ৪টি বাড়ী, কয়েক একর জায়গা, ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া, ছেলেদের প্রবাসে পাঠানোর কারনে তিনি আজ কয়েক কোটি টাকার মালিক। তার দেখাদেখি জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ছোট-বড় প্রায় ৫০টি কবুতর খামার গড়ে উঠেছে।

অন্যদিকে মাতিয়ে তুলছেন লাকসাম পৌরসভার উত্তর পশ্চিমগাঁও হাজী জয়নালের কবুতর বাড়ী। এ উপজেলায় বিভিন্ন প্রজাতির এত বড় কবুতর পালনের খামার আর কোথাও নেই বললেই চলে। তবে পুর্বের সব রকম রেকর্ড ভেঙ্গে সফলতার দ্বারে পৌছতে সক্ষম হয়েছেন কবুতর খামারি জয়নাল আবেদিন।

তাকে বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করেছেন স্ত্রী হালিমা খাতুন ও বড় ছেলে মিজানুর রহমান। জয়নাল নিত্য নতুন কবুতর সংগ্রহ করার জন্য গ্রাম থেকে গ্রামে এবং শহরের বিভিন্ন জায়গায় ছুটে যান। নতুন কবুতর সংগ্রহ এবং যে সব কবুতর দেশে বিলুপ্তির পথে সে সব কবুতর সংগ্রহ করা হচ্ছে তার এক রকম নেশা।

সখিন খামারি জয়নাল বলেন, ১৯৮৫ সালে দেড় টাকায় সখের বশে এক জোড়া কবুতর কিনে পালন শুরু করি। এর পর থেকে আমি কবুতর পালনে ঝোকে পড়ি এবং কবুতর পালনের দিয়ে খামার করার চিন্তা শুরু করেন। ২০০৫ সালে ছোট একটি খামার দিয়ে কবুতর পালন শুরু কর। ২০১০ সালে আমি তা বানিজ্যিক ভিত্তিতে কবুতর খামার শুরু করি।আ মার খামারে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ১হাজার কবুতর রয়েছে। এ খামারের আয় দিয়ে পরিবারের খরচ, ৫ ছেলে, ৪ মেয়ের লেখাপড়া, ২ একর জায়গা ক্রয়, ২ ছেলেকে সৌদি আবর ও বাহারাইনে প্রেরন, প্রায় ৪ কোটি টাকায় ৪টি বাড়ী, এক একর সম্পত্তিতে একটি মাছের খামার গড়ে তুলেছি।

এ খামারে সিরাজি, হুমা, চুন্নি, গিরেবাজ, বাবুরাজ, লোটন, ময়ুরি, কুটারবল, কোরিয়ান হুমা, চনা, কিং, সিল্কি, ভিয়ানার্সট পিজ, আউবেল, বিউটিহুমার সহ প্রায় ৩০ প্রজাতির কবুতর রয়েছে।

বর্তমানে এ সব কবুতরের বাজার মুল্য প্রায় ৬ লাখ টাকার মত। এছাড়াও প্রতি জোড়া কবুতরের মুল্য ৮০০ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

প্রতি মাসে খামারের বিভিন্ন প্রজাতির কবুতর থেকে প্রায় ৬০ থেকে ১০০ জোড়া বাচ্চা পাওয়া যায়। যার বাজার মুল্য ২৫-৩০ হাজার টাকা। এছাড়া প্রতিদিন কবুতরকে ২০-৩০ কেজি গম, খেসারি, শষ্য, খাবার দিতে হয়। ঔষধ ও বিভিন্ন খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে আয় ৪০-৫০ হাজার টাকা। এ সব কবুতরের মধ্যে লাল সিরাজি কবুতরের কদর অনেক বেশি। বর্তমানে এই কবুতরের মুল্য জোড়া প্রতি ২০-৩০ হাজার টাকা। এ ছাড়া এই লালসিরাজি বড় জাতের কবুতর বাজারে পাওয়া খুবই কঠিন। হুমা প্রজাতির কবুতর ও বর্তমানে দেশ থেকে বিলুপ্তির পথে।

তিনি আরো বলেন, ১৯৮৫ সালে দেড় টাকায় সখের বশে এক জোড়া কবুতর কিনে পালন শুরু করি। এর পর থেকে কবুতর পালনে ঝোঁকে পড়ি এবং কবুতর পালনের দিয়ে খামার করার চিন্তা শুরু করি। কুমিল্লা রোটারি ক্লাব আমার কবুতর পালনের আগ্রহ দেখে প্রশিক্ষণ ও বিনা সুদে ২০ হাজার টাকা ঋন সহায়তা প্রদান করে। কবুতর পালন করতে গিয়ে ৩ বার কয়েক লাখ টাকার কবুতর চুরি হয়। এ ছাড়াও রানীক্ষেত, ঘাড় বাকা, বাইরাস জনিত রোগ সহ বিভিন্ন প্রতিকুলতার শিকার হয়েছি।

হাজী জয়নালের কবুতর খামার ও সফলতা দেখে লাকসামের গোবিন্দপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম মেম্বার, উত্তর লাকসামের আল-আমিন, সুমন, উত্তর পশ্চিমগাঁও গ্রামের আমির হোসেন দুলাল, আলী আশ্রাফ, গফুর, আর্দশ সদর উপজেলার রানীর বাজারের মাসুদ, সদর দক্ষিনের ভুচ্চি গ্রামের ফরহাদ, বাগমারার মিজানুর রহমান সহ ছোট-বড় প্রায় ৫০টি খামার গড়ে উঠেছে।

কুমিল্লা রোটারী ক্লাবের মাধ্যমে তার কবুতর খামার পরির্দশনে এসে অস্ট্রেলিয়ান সংস্থা ইউএফসিএস ফান্ড নগদ ২০হাজার টাকা সহায়তা ও জাপানে যাওয়ার আমন্ত্রন জানান। এছাড়াও চ্যানেল আই’র কৃষিভিত্তিক প্রোগ্রাম মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানে শায়েখ সিরাজের উপস্থাপনায় একটি প্রামান্যচিত্র তুলে ধরা হয়।

তিনি বলেন, কবুতর পালন করতে হলে খোলামেলা পরিবেশের প্রয়োজন। এতে কবুতরের বিভিন্ন সমস্যা দুর হয়। তা ছাড়া উপজেলা প্রানী সম্পদের পক্ষ থেকে সকল রকম সহযোগিতা পেলে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করা হলে কবুতর রোগ মুক্ত হতে পারে।ফলে বেকারত্ব দুরিকরন, আমিষের চাহিদা পুরন করা সম্ভব।

The post কবুতর খামারে কোটিপতি লাকসামের জয়নাল appeared first on Comillar Barta™.



from Comillar Barta™ http://ift.tt/2iAonpo

January 02, 2017 at 07:16PM
02 Jan 2017

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top