ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হবার পর তিনি যদি ইসরায়েলে মার্কিন দূতাবাসটি তেল আবিব থেকে সরিয়ে জেরুসালেমে নিয়ে যান – তাহলে তা হবে এক উস্কানিমূলক কাজ যার পরিণাম হবে গুরুতর – বলছেন ফরাসী পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
অনেকের মনে হতে পারে যে মার্কিন দূতাবাস তেল আবিবে হলো, না কি জেরুসালেমে – এটা এত গুরুত্বপূর্ণ কেন?
কিন্তু বিবদমান পক্ষগুলোর কাছে এটা মোটেও তুচ্ছ ব্যাপার নয়।
এর সাথে জড়িয়ে আছে পূর্ব জেরুসালেমের মর্যাদার প্রশ্ন – যা ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকটের সবচেয়ে স্পর্শকাতর এবং জটিল এক ব্যাপার।
তিনটি ধর্মের কাছে পবিত্র এই প্রাচীন নগরী জেরুসালেম। কিন্তু এর কয়েক হাজার বছরের ইতিহাসে শহরটি অনেকবার অবরোধ, ধ্বংসযজ্ঞ, দখল-পুনর্দখলের শিকার হয়েছে।
ইসরায়েল ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে জর্ডন নদীর পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুসালেম দখল করে নেয়।
ইসলাম ও ইহুদি ধর্মের পবিত্র স্থানগুলো – যেমন আল-আকসা মসজিদ, কুব্বাত আস-সাখরা, এবং ইহুদিদের প্রাচীন মন্দিরের দেয়ালের ধ্বংসাবশেষ – সব এই জায়গাটিতেই। এর কাছেই আরো আছে খ্রীষ্টানদের পবিত্র চার্চ অব দ্য হোলি সেপালক্রে।
ফিলিস্তিনিরা চায় তাদের ভবিষ্যত স্বাধীন রাষ্ট্রের রাজধানী হবে পূর্ব জেরুসালেম – কিন্তু ইসরায়েলের দাবি, পূর্ব ও পশ্চিম জেরুসালেম মিলিয়ে পুরো শহরটিই তাদের রাজধানী।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘের অনেক সদস্য রাষ্ট্রই জেরুসালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকার করে না। অধিকৃত পশ্চিম তীরের ওপর ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণ এবং বসতি নির্মাণও আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত নয়।
১৯৬৭ সালের যুদ্ধে পূর্ব জেরুজালেমের অধিগ্রহণকে বহু দেশই মেনে নিতে পারেনি। সে কারণে সাবেক রাজধানী তেল আবিবেই তাদের দূতাবাস কাজ করছে।
আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, তুরস্কসহ কিছু দেশের কূটনৈতিক মিশন জেরুসালেমে আছে ঠিকই – কিন্তু তাকে ‘ইসরায়েলের দূতাবাস’ বলা হয় না। বলা হয় ‘জেরুসালেম বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের জন্য কূটনৈতিক মিশন’।
এখন যদি মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে সরিয়ে জেরুসালেমে নিয়ে যাওয়া হয় – তার প্রতীকী অর্থ হবে জেরুসালেমকে ইসরায়েলের ‘আইনসঙ্গত রজধানী’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া।
ধারণা করা হচ্ছে, মি. ট্রাম্প দীর্ঘদিনের মার্কিন নীতি ভেঙে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুসালেমে সরিয়ে নিতে পারেন।
ফ্রান্সে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক এই সম্মেলনে যোগ দেওয়া অনেকেই একে অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন। ফরাসী পররাষ্ট্রমন্ত্রীও বলেছেন, এর পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ।
জাতিসংঘও জেরুসালেমকে ইসরায়েলের অধিকৃত এলাকা বলে মনে করে।
সেখানে ইহুদি বসতি নির্মাণ বন্ধ করার দাবি জানিয়ে সম্প্রতি একটি প্রস্তাবও পাস হয়েছে জতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে।
from মধ্যপ্রাচ্য ও দূরপ্রাচ্য – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2iYve8V
January 16, 2017 at 08:50AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন