মোঃ আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ ( সিলেট ) প্রতিনিধি :: বিশ্বনাথ-রামপাশা-লামাকাজি সড়কের বেহাল দশা দেখে ছেলে-বুড়ো সকলেই যেন একসঙ্গে বলতে চায় “মনোওয় ই রাস্তার কোনো মাই-বাপ নাই এর লাগিই অতবাদ অবস্থা”। উপজেলার লামাকাজির বাজারের ব্যবসায়ী বাবুল মিয়ার সঙ্গে সদ্য লন্ডন থেকে দেশে ফেরা প্রবাসী মহিলা মিনারা বেগম (৪০) বললেন “মাই গো ই কিতা অত বড় বড় গাত, ইকটা কিতা রাস্তানি না আর কোনতা। মনোওয় ই রাস্তার কোনো মাই-বাপ নাই। দেখতে ডর করে। ইলা অবস্থা হইলে দেশ না আওয়াউতো ভালা”। বিশ্বনাথ-রামপাশা-লামাকাজি অধিবাসীদের যাতাযাতের এই ব্যস্ততম সড়কের অবস্থা দেখলে যে কেউ ভয় পায়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছেন উপজেলার মানুষ এর পাশিপাশি ঝুঁকির মধ্যেই চলছে যানবাহন। বিশ্বনাথ-রামপাশা-লামাকাজি সড়কের এমন করুন দশা থাকলেও এটি মেরামত কিংবা দেখার যেন কেউ নেই। সড়কটি ভাঙতে ভাঙতে বড় বড় গর্ত হয়েছে। সড়কের এত বড় বড় গর্ত ও খানা খন্দের কারনে সড়কটিতে যানবাহন চলাচল করছে জীবনের ঝুকিনিয়ে। উপজেলাবাসীর জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি নিয়ে মহাসমস্যায় থাকার পরও কর্তৃপক্ষ দিনের পর দিন সড়কের এমন করুন দশা দেখেও না দেখার বান করে বসে আছেন। তবে এত খারাপ সড়ক হওয়ার পরও থেমে নেই এখনকার বাস, ট্রাক, টেক্সী, অটোরিকশা,টেম্পু, লাইটেস, কার,জীপসহ সকল গাড়ীর চালকদের জীবনের চাকা। তারা প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জীবিকার তাগিতে বের হচ্ছেন গাড়ী নিয়ে। সড়কের অবস্থা খারাপ হওয়ার কারনে গাড়ী সড়ক দিয়ে চলাচলের ফলে প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে গাড়ী গুলোর যন্ত্রপাতি। এছাড়া এ সড়ক দিয়ে রোগী নিয়ে চলাচল করতে জনসাধারনকে পোহাতে হচ্ছে নানান দূর্ভোগ। করতে হচ্ছে অনেক হিসেব-নিকাশ। সড়কের এই করুনদশা রোগীদের শারীরিক অবস্থা আরো খারাপ করে দিচ্ছে। রোগী ছাড়াও সুস্থ শরীরের মানুষ জন্যও এই রাস্তা দিয়ে নিয়মিত চলাচল করলে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এদিকে, গত বুধবার দুপুরে বিশ্বনাথ-রামপাশা-লামাকাজি সড়কের উপজেলার দশদল এলাকায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের লোকজন বড় বড় কিছু গর্ত ভরাট করতে দেখা যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সড়কের দুই পাশে আটটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দু’টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, একটি কলেজ, দু’টি মাদরাসা, অসংখ্য মসজিদ, মৎস্য ও কৃষি খামার রয়েছে। উপজেলার চারটি ইউনিয়নের পাশাপাশি ছাতকসহ সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার মানুষও ওই সড়কে যাতায়াত করেন। ছাতকস্থ দু’টি বৃহত্তম সিমেন্ট কোম্পানীর ভারী যানবাহনও চলাচল করে ওই সড়ক দিয়ে। তারপরও জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কার হচ্ছে না। শিগগিরই সড়কগুলোর সংস্কার কাজ করে জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘব করার জন্য সংশ্লি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ এবং বর্তমান সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ ‘বিশ্বনাথ-রামপাশা-লামাকাজী’ সড়কটি যথাসময়ে সংস্কার কাজ না হওয়ায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। ২০১৫ সালে বিশ্বনাথ থেকে ৩ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার কাজ করা হলেও এখনো রয়ে গেছে এই সড়কের অবশিষ্ট অংশ সংস্কার কাজের বাকি। গত বছর রশিদপুর থেকে সড়কটির প্রথম ছয় কিলোমিটার অংশে সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়, তবে অধিক ক্ষতিগ্রস্থ অংশে কোনো সংস্কার কাজ করা হয়নি। অবশেষে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি প্রেক্ষিতে সড়কের অবশিষ্ট অংশ (রামপাশা থেকে লামাকাজী পর্যন্ত) ৯ কিলোমিটার সংস্কার কাজের জন্য ৭ কোটি টাকা বরাদ্ধ করা হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মনিরুল ইসলাম বলেন, সড়কের অবশিষ্ট অংশে (৯ কিলোমিটার) সংস্কার কাজের জন্য প্রায় ৭ কোটি টাকা বরাদ্ধ হয়েছে। ইতিমধ্যে টেন্ডার রিসিভ হয়েছে। ওয়ার্ক অর্ডার হওয়ার পর খুব শিগগিরই সংস্কার কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি জানান।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2jf3qNq
January 07, 2017 at 10:10PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন