মাদারীপুর: মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলী মুন্সির বিরুদ্ধে উঠেছে নানা অনিয়ম, জমি দখলসহ দুর্নীতির অভিযোগ। সাম্প্রতিক এক ঘটনা অনুসন্ধান করে দেখা গেছে প্রভাবশালী এ আওয়ামীলীগের নেতা তার ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষের জমিজমা কৌশলে কারচুপি করে ভাগ বসিয়ে নিজের স্বজনদের মধ্যে বিতরণ করছে। তবে এ সকল কথা স্বীকার করতে নারাজ ক্ষমতাশীল দলের এই ইউপি চেয়ারম্যান। তার ইউনিয়নের মধ্যে প্রায়ই চলছে ১৬ বছরের নাবালিকা মেয়েকে অনৈতিক ভাবে সাবালিকা করে ১৮ বছর দেখিয়ে নতুন জন্ম সনদে তৈরি করে দেয়া। এরপর আইনি প্রক্রিয়া হিসেবে তার বিয়ে দিয়ে দেয়া। এখানে আরো চলছে কিশোর থেকে যুবক-যবতীদের যাচাই-বাচাই না করে নাগরিক সনদ তৈরি করা। এছাড়াও তার কার্যালয়ে চলছে বিভিন্ন জাল সনদ তৈরি করে মোটা অংঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার মতো নজিরবিহীন দুর্নীতি। এসকল অনিয়ম ও দুর্নীতির কর্মযজ্ঞ থেকে কোন সধারণ মানুষই পাচ্ছে না তার নৈতিক অধিকার। এতেও থেমে যায়নি তার সকল কর্মকান্ড। এলাকার সাধারণ ভোক্তভোগী মানুষদের এটা-সেটা বুঝিয়ে চলছে তার সম্পত্তি বেদখলের কাজ। এ বিষয়ে ভয়ে কোন ভোক্তভোগী মুখ না খুললেও ইলিয়াচ বেপারী নামে এক ভোক্তভোগী তার বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়ে জানাচ্ছে প্রতিবাদ। এর ফলে তাকে ও তার পরিবারকে শুনতে হয়েছে তার জীবন নাশের হুমকি। সাম্প্রতিক ওই ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলী মুন্সির বিরুদ্ধে সাধারণ ডাইরী করেছে ভোক্তভোগী এই পরিবার। যার সাধারণ ডাইরী নম্বর ২০২ যা গত ৫ জানুয়ারী সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মৃত সালাম বেপারীর ছেলে ইলিয়াস বেপারী বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলী মুন্সিকে প্রধান বিবাদী করে সহযোগী আরো ৫জনের নাম উল্লেখ করে সদর মডেল থানায় এ সাধারণ ডাইরী করা হয়।
সাধারণ ডাইরী সূত্রে জানা যায়, খোয়াজপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মৃত সালাম বেপারীর ছেলে ইলিয়াস বেপারী সাথে বিবাদীদের সাথে জমিজমা নিয়ে কয়েকদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। আর এরই জের ধরে ইলিয়াস বেপারকে গত ১ জানুয়ারী তার পৈতিক জমি থেকে সড়ে যেতে বলে তার বিরোধীরা। আর তা না হলে খুন ও জখন করবে বলে হুমকি ধামকি দেয়া হয়। এছাড়া তার বসত বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও ক্ষতি সাধণ করবে বলে হুশিয়ারি করে দেয় মো. আলী মুন্সির সমার্থকরা।
এ বিষয়ে ইলিয়াস বেপারী বলেন, আমার পিতার নামে ২৮.৩৬ শতাংশ জমি ছিল। আর আমার পিতা এখন জীবিত না থাকায় আমাদের এ সম্পত্তির আমি ও আমার তিন বোন এবং মা মিলে পাবো ২০শতাংশ ও আমার অন্যপক্ষ্যের ৩ বোন ও মা মিলে পাবে ৮.৩৬ শতাংশ। তবে আমার অন্য পক্ষ্যের বোনেরা সকলে দূরবর্তীতে থাকায় আমার দায়িত্বেই এসব সম্পত্তি ছিল। পরে বোনেরা তাদের সম্মত্তির ভাগ চাইলে চেয়ারম্যানকে নিয়ে এশটি আলোচনায় বসি। আমার বোনদের সম্মতি অনুযায়ী তাদের সম্পত্তি আমি তাদের ন্যায্য মূল্য ৯লাখ ৫০হাজার টাকা দিয়ে কিনে নিতে আগ্রহী হই। আর এর ফলে চেয়ারম্যানের হাতে বিশ্বাস করে জমির আগাম বায়না ১০হাজার টাকা দেই। আর এখন চেয়ারম্যান সেই বানয়া ফিরিয়ে দিয়েছে আমাকে। কারণ আমার বোনদের ভুল বুঝিয়ে তার নিকটতম চাচাতো ভাইয়ের কাছে ওই জমির বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে তারা লোকজন নিয়ে আমার ঘরের সামনে জোড় করে ঘর স্থাপন করে রেখে যায়। এরপর আমি এর বিরোধীতা করলে চেয়ারম্যানের নিদের্শেই আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তার চাচাতো ভাই কামরুজ্জামান লিটন ও জিয়াউর রহমান। তারা আমাকে অতি শীঘ্রই আমার ঘর ছেড়ে চলে যেতে বলেছে।
ইলিয়াস বেপারী মা ফজিলা বেগম বলেন, ভোট দিয়ে চেয়ারম্যান বানালাম যাতে আমাদের সকল কাজে সকলের বিপদে এগিয়ে আসবে ও সঠিক বিচার করবে। আর এখন তিনি তা না করে তার চাচাতো ভাইদের দিয়ে আমার এ স্বামীর সম্পত্তি জোড় করে দখল করেছে, ঘর উঠাতে বাধা দেয়াতে আমাকে মারধর করেছে। আমার ঘরে এসে জিনিসপত্র ভংচুর করে আমার ঘরের সামনে জোড় করে ঘর উঠিছে রেখেছে। এ বিষয়ে কিছু বললেই আমার ছেলেকে জেন্ত মেরে ফেলবে বলে তারা হুমকি দিয়েছে।
এ সকল বিষয়ে সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলী মুন্সির কাছে জানতে চাইলে তার কার্যালয়ে এসব দুর্নীতি বিষয়ক কিছুই হয় না বলে অস্বীকার করেন। জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এর মধ্যে কি? জমি যে কিনেছে তার সাথে কথা বলেন। আর আমি স্বালিশ দরবারে কোন স্বজন প্রীতি করি না আমার কাছে সবাই সমান। ওই জমি আমার চাচাতো ভাইয়েরা কিনেছে তাই তাদের ঘর উঠানোর অধিকার আছে। তবুও এ বিষয় আলোচনা করে ইলিয়াচ বেপারকে সঠিক সমাধাণ দেয়া হবে।
from ঢাকা – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2jLdQVX
January 18, 2017 at 10:11PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন