মৌলভীবাজার অফিস :
মৌলভীবাজারে মাদক ব্যাবসায়ী সন্ত্রাসীদের অতর্কিত হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা সহ আরো দুই পুলিশ কনস্টেবল । আহতরা হলেন মৌলভীবাজার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক এস,আই আব্দুল মালেক,কনস্টেবল বজলুর রহমান ও কনস্টেবল সালাহ উদ্দীন। এদের মধ্যে এস,আই আব্দুল মালেকের অবস্থা আসংখাজনক। বুধবার ৪ জানুয়ারি রাত সাড়ে এগারোটার সময় শহরের গোবিন্দশ্রী এলাকার বেরিরপারস্থ পেট্রোলপাম্পের সামনের ফজলু মিয়ার মুদি দোকানের সম্মুখে এ ঘটনা ঘটে । জানা যায় গোবিন্দশ্রীর ফজলু মিয়ার মুদি দোকানের সামনে শীর্ষ ইয়াবা ব্যাবসায়ী রুহেল ইয়াবা বেচা কেনা করছে,এমন সংবাদ পেয়ে নিয়মিত টহলের অংশ হিসেবে মৌলভীবাজার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক এস,আই আব্দুল মালেক এর নেতৃত্তে পুলিশের একটি দল শহরের শ্রীমঙ্গল সড়কে সিএনজি চালিত অটো রিক্সায় করে যাচ্ছিলেন,এমন সময় ফজলু মিয়ার মুদি দোকানের সামনে পৌছা মাত্র দেখতে পান রুহেল তার আরো দুই বন্ধুদের সাথে নিয়ে সেখানে ইয়াবা বিক্রি করছে । ইয়াবা বিক্রি অবস্থায় তখন এস,আই আব্দুল মালেক সাথে সাথে রুহেল কে ধরে ফেলেন, ধস্তাদস্তির এক পর্যায়ে রুহেল তার সাথে থাকা চাপাতি দিয়ে এস,আই আব্দুল মালেককে বেধরক কোপাতে থাকে, তখন তার সাথের অন্যরাও পুলিশ কনস্টেবল ফজলুর রহমান ও সালাহ উদ্দীনকে কোপাতে থাকে, তখন এস,আই আব্দুল মালেকের সাথে থাকা পিস্তল দিয়ে রুহেলকে লক্ষ করে গুলি ছুড়েন,এক পর্যায়ে অন্যান্য পুলিশও আতœরক্ষার্থে সন্ত্রাসীদের লক্ষকরে দুই রাউন্ড গুলি ছুড়ে, তখন রুহেল গুলিবিদ্ধ হয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও এ ঘটনার কিছুক্ষন পর রাত সাড়ে বারোটার দিকে শহরের পৌর কাউন্সিলার আয়াছ আহমদের বাসার সামনে থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আহত রুহেলকে আটক করে মৌলভীবাজার ২৫০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে আশে পুলিশ। এর পর রাত একটার দিকে সেখানে উপস্থিত মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি (তদন্ত) একে নজরুল ইসলাম জানান গুলিবিদ্ধ রুহেলের মারা যাওয়ার সংবাদটি। তিনি আরো জানান গুলিবিদ্ধ রুহেল সদর উপজেলার ১১ নং মোস্তফাপুর ইউনিয়নের গয়ঘর গ্রামের সায়েস্তা মিয়ার ছেলে,সে দীর্ঘদিন দিন যাবত মাদকসহ ইয়াবা কেনা বেচার সাথে জরিত ছিল। এ ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়া অন্য আসামীদের ধরতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ চিরুণী অভিযান শুরু করে। রাতেই পুলিশ সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে ১০৩ পিচ ইয়াবা,চাপাতি ও ছুরি পুলিশ উদ্ধার করে ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে, ঘটনার পর থেকে ঘটনাস্থলের সামনে ফজলু মিয়ার দোকানটি বন্ধ থাকায় তাকে আটকের বিষয়টি প্রথমে জানা যায় এক প্রত্যেক্ষদর্শীর বর্ননায় । ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশের কর্মকর্তা হারুনুর রশীদের কাছে ফজলু মিয়ার আটকের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে এ প্রতিবেদককে প্রথমে তিনি আটকের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেনা। তিনি এ বিষয়ে থানায় যোগাযোগ করতে বলেন। পরে ফজলু মিয়ার বাসায় গিয়ে তার স্ত্রীর কাছে ফজলু মিয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তার স্ত্রী সুলতানা বেগম জানান রাতেই পুলিশ তার স্বামীকে ধরে থানায় নিয়ে যায়, এর পর ওসি (তদন্ত) একে নজরুল ইসলাম এর সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুদি দোকানের মালিক ফজলু মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করে বলে নিশ্চিত করেন । এদিকে আহত এস,আই আব্দুল মালেকের অবস্থা আসংখাজনক হওয়ায় গভীর রাতে তাকে জরুরী ভিত্তিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেটের এম,এ জি ওসমানী মেডিকের কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। অন্যদুই পুলিশ কনস্টেবল কে মৌলভীবাজার সদর ২৫০০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয়েছে। ঘটনার পর পরই খবর পেয়ে মৌলভীবাজার সদর ২৫০০ শয্যা হাসপাতালে ছুটে আসেন মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোঃ শাহজালাল সহ পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা । ঘটনার সার্বিক অবস্থার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে এগারোটার সময় মৌলভীবাজার মডেল থানায় মৌলভীবাজারে কর্মরত গনমাধ্যম কর্মীদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে । অন্যদিকে পুলিশের ছুড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া রুহেলের লাশ ময়না তদন্ত ও সকল আইনী প্রদক্ষেপ শেষে তার পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও জানান, ওসি (তদন্ত) একে নজরুল ইসলাম।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2hUjK5c
January 05, 2017 at 06:36PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন