কানাডায় রহস্যময় আলোর স্তম্ভ!

lighttকানাডার অন্টারিও শহরের আকাশে দেখা মিলেছে অদ্ভুত এক আলোর রেখার। নানা রঙের এই আলোর রেখার ছবি রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গেছে শহরটির ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের কাছে। সেখানকার স্থানীয়দের এই আলোকে স্টার ট্রেকের সঙ্গে তুলনা করছেন। কেউ কেউ তো আরো এক ধাপ এগিয়ে ভিনগ্রহ থেকে আসা আলোর রেখা বলেও আখ্যা দিয়েছেন একে।

সায়েন্স অ্যালার্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসলেই আলোগুলো দেখতে ভিনগ্রহ থেকে আসা কোনো কিছুর মতো। তবে এ নিয়ে ভয় না পেয়ে এর ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।

চিত্রগ্রাহক ও ইউটিউবার টিমি জো এলজিংগা অন্টারিওর উত্তর সাগর এলাকা থেকে এই আলোর ছবি তোলেন। একদিন মাঝরাতে নিজের বাড়ির বাথরুমের জানালা দিয়ে এই আলোর সন্ধান পান তিনি। সেদিন রাতে ছেলের ডাকে একটু আগেই ঘুম ভেঙে গিয়েছিল টিমির। আর সেই সময়ই এই আলোর দেখা পান তিনি। বাইরে সেই সময় তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস নিচে।

এ বিষয়ে সায়েন্স অ্যালার্টকে টিমি জো বলেন, ‘প্রথমে আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমার স্ত্রী এসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করলেন। তবে আমি আরো অনুসন্ধান করতে চাইছিলাম। আমি বাথরুমের জানালা খুলে দিলাম। সেখান থেকে বেশ কিছু ছবি তুললাম। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম উত্তর দিক থেকে আলোগুলো আসছে। কিন্তু একটু পরেই বুঝতে পারলাম এটা অন্য কিছু। মনে হচ্ছিল আলোগুলো মাটির নিচের কোনো স্থান থেকে আসছে।’

তাহলে কী হচ্ছিল?

সায়েন্স অ্যালার্টের ওই প্রতিবেদন বলছে, আসলে এই আলোগুলো বায়ুমণ্ডলের খুব পরিচিত প্রপঞ্চ। একে বলা হয় আলোর স্তম্ভ। এগুলো দেখতে অনেকটা মেরুপ্রভার মতো। তবে এগুলো উত্তরের আলো বা নর্দান লাইটস নয়। এই নর্দান লাইটের সৃষ্টি হয় ভূপৃষ্ঠের উপরিতলে অবস্থিত কোনো তড়িতাহত বস্তুকণা থেকে। এর ফলে ওইসব বস্তু থেকে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটে।

এর বদলে আলোর স্তম্ভ তখনই সৃষ্টি হয় যখন প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় নিজেদের সাধারণ অবস্থানের নিচে সমান ও ষড়ভুজাকার বরফের তৈরি স্ফটিক তৈরি হয়। আর যখন এটা হয় তখন সব স্ফটিক মিলে বিরাট এক আয়নার মতো অবস্থার সৃষ্টি করে। আর এই আয়না শহরের বিভিন্ন আলো যেমন বাড়ি বা গাড়ির আলোর প্রতিফলন ঘটায়।

অন্টারিওতে এই ঘটনাই ঘটতে দেখা গেছে। প্রতিফলিত এই আলোই অতিপ্রাকৃত আলোর মতো হয়ে ধরা দিয়েছে টিমি জোর ক্যামেরায়।

আলোর স্তম্ভগুলো দেখে মনে হচ্ছে যে এগুলো মাটি থেকে আকাশের দিকে উঠে গেছে। কিন্তু আসলে ঠিক উল্টো ঘটনাটি ঘটেছে। আকাশের কোনো আলো পৃথিবীর ওই স্ফটিকখণ্ডে প্রতিফলিত হয়ে স্তম্ভের আকৃতি ধারণ করে বিভ্রমের সৃষ্টি করেছে। আর টিমি জোর ক্যামেরায় সেই বিভ্রমই ধরা পড়েছে।



from যুক্তরাজ্য ও ইউরোপ – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2iBbxGK

January 16, 2017 at 09:36AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top