মৌলভীবাজার অফিস :
দেখতে ধবধবে সাদা মুড়ি নামে প্রতিনিয়ত এসব কি খাচ্ছি আমরা ? তার খোজ হয়তো অনেকেই রাখেননা।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চাঁয়ের সাথে বিভিন্ন মুখরুচক খাবারের তালিকায় দেশী চাল দিয়ে তৈরি মুড়ির কোন জুড়ি নেই। কেউ কেউ অনেক সময় শখের বশবত হয়ে চানাচুর কিংবা সরিষার তৈল দিয়ে বিশেষ ভাবে ঝালমুড়ি বানিয়ে খেয়ে থাকেন মুড়ি । রসনা বিলাসীদের কাছে এটির চাহিদা অনেক বেশি। পবিত্র রমজান মাস আসলে মুড়ির কদর অনেক বেড়ে যায় আমাদের দেশের শহুরে বা গ্রামীন জন-জীবনে । বিশেষ করে ইফতারের সময় অনেকে দলবেধে বাসায় কিংবা দোকানে বসে ছুলা,পেয়াজ ও নানা রকম মিষ্টিদ্রব্য দিয়ে এটি বিশেষ ভাবে তৈরি করে তৃপ্তি সহকারে খেয়ে থাকেন । তবে প্রশ্ন হলো এই মুড়ি কোন প্রক্রিয়ায় তৈরি করা হয়। বর্তমানে মুড়ি তৈরির জন্য বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে রয়েছে মেসিন । বিশেষ ধরনের আলাদা চালকে প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে মুড়ি তৈরি করে থাকেন কারিগররা । মৌলভীবাজার বিসিক শিল্প নগরীতে আলফি নামে একটি মাত্র মুড়ি ফ্যাক্টরি রয়েছে। যা এ অঞ্চলের চাহিদার তোলনায় বেশ কমই বলা যায়। বিসিক শিল্প নগরীর বাহিরে আরো অন্যান্য জায়গায়ও রয়েছে বেশ কিছু ফ্যাক্টরি। সরেজমিনে গত মঙ্গলবার(১৭ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে মৌলভীবাজার জেলা শহর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দুরে বিসিক শিল্প নগরীতে অবস্থিত আলফি মুড়ি ফ্যাক্টরিতে গিয়ে দেখা যায়,ফ্যাক্টরির কারিগররা মুড়ি তৈরির কাজে বেশ ব্যাস্থ সময় কাটাচ্ছেন। প্রথমে একজন গনমাধ্যমকর্মী হিসেবে নিজের পরিচয় গোপন রেখে ফ্যাক্টরি ম্যানেজারের অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করলাম । দেখা গেলো সম্পূর্ন অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে মুড়ি তৈরি হচ্ছে এখানে । মুড়ি তৈরি শেষে তা ঢালা হয় পাকা ঢালাইয়ের মধ্যে,সেখান থেকে পা মাড়িয়ে ধুলোবালি মিশ্রিত মুড়ি ভরা হয় পলিতিনের বস্তায়। যেখানে মুড়ি তৈরির যাবতীয় প্রক্রিয়ায় হাতের ব্যাবহার খুবই প্রয়োজন তাই এসব ক্ষেত্রে দুই হাতে গ্লাবস লাগানোর কথা,সেখানে দেখা গেছে খালি হাতে ময়লাযুক্ত হাত দিয়ে বস্তায় মুড়ি ভরার দৃশ্য । ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলার সময় যখন ক্যামেরার ফ্লাস লাইট জ্বলছিল,তখন শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দাড়িয়ে থাকে। এসব দৃশ্য দেখার পর এ বিষয়ে জানতে কথা হয় আলফি মুড়ি ফ্যাক্টরির ম্যানেজার চন্দন কুর্মির সাথে । তার কাছে জানতে চাওয়া হয় কেনো পা দিয়ে মুড়ি মারানো হচ্ছে, তখন তিনি এর কোন সদুত্তর দিতে পারেননি এ প্রতিবেদককে। পরে তিনি জানান বার বার বলে দেওয়ার পরও শ্রমিকরা পা দিয়ে মুড়ি মারাচ্ছে এটি খুবই নিন্দনিয় অপরাধ । আমি এব্যাপারে ব্যাবস্থা নিচ্ছি আশা করি আগামীতে আর এরকম অবস্থা থাকবেনা। দেখা গেছে এখানের কারিগররা কোন আইন কানুনের তোয়াক্কাই করছেননা । অনেক শ্রমিককে কাজের সময় দেখা গেছে তাদের গায়ে পোশাক না থাকতে। সম্পূর্ন খালি গায়ে অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় কাজ করতে। আলফি মুড়ির সত্তাধিকারি মোঃ আব্দুল হান্নানের সাথে এবিষয়ে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তাদের বার বার বলার পরেও এরকম অভিযোগ শুনতে হচ্ছে তাই ফ্যাক্টরি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত আমাকে নিতে হবে। তিনি আরো বলেন, শ্রীমঙ্গলে অপরিচ্ছন্ন অনেক মুড়ি ফ্যাক্টরি রয়েছে খোজ নিয়ে দেখেন,আশা করি তাদের ফ্যাক্টরি থেকে আমার এখানের পরিবেশ অনেক ভাল।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2k3BblS
January 22, 2017 at 06:22PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন