প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশে ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ বা টিপিপি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে আসার পর একে স্বাগত জানাচ্ছেন বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকেরা।
টিপিপি বাস্তবায়িত হলে মার্কিন বাজারে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রতিযোগীতায় পিছিয়ে পড়বে বলে একটি শঙ্কা তৈরি হয়েছিল।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১২ টি দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য স্থাপনের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল টিপিপি। শুল্কমুক্ত সুবিধার পাশাপাশি এই দেশগুলোর মধ্যে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক সম্পর্ক, এমনকি আইনকানুন তৈরির ক্ষেত্রেও একটি একক নীতি নেয়ার মত জটিল বিষয় এসেছে এই টিপিপি-তে।
যদিও এই চুক্তিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ভয় ছিল দেশটির তৈরি পোশাক খাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে, বিশেষ করে ভিয়েতনামকে নিয়ে।
“অধিকাংশ এলডিসি দেশ যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশ সেটা পাচ্ছে না। এখন টিপিপি না হওয়াতে বাংলাদেশকে যতটা শুল্ক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ঢুকতে হয়, ভিয়েতনামকেও তাই দিতে হবে। ফলে আমরা প্রতিযোগিতার দিক দিয়ে একই জায়গায় থাকলাম”- বলেন বাংলাদেশে গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন, বিজিএমইএ-র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় দীর্ঘদিন বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তৌফিক আলী। তিনি বলছিলেন, টিপিপি হলেও কতটা ক্ষতি হতো তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে, কিন্তু এখন অন্তত শঙ্কাটা নেই।
তিনি বলেন- “বারাক ওবামা কিন্তু খুব চেষ্টা করেছেন আসিয়ান দেশগুলোর সাথে একটি সম্পর্ক স্থাপন করার জন্য। এই দেশগুলোও বিশ্ববাণিজ্যে এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ রূপ ধারণ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের টিপিপি বাতিলের পর আসিয়ান দেশগুলো কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটিও আমাদের দেখতে হবে”।
যুক্তরাষ্ট্র সরে যাবার পর এরই মধ্যে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়াই টিপিপি জিইয়ে রাখার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে। এক্ষেত্রে চীন এবং ইন্দোনেশিয়াকেও সাথে রাখার কথাও তারা বলেছেন।
যদিও মি. আলীর মতে টিপিপি যদি এগিয়েও যায়, এটি বাস্তবায়নে অন্তত দেড় দশক সময় লাগবে।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়া টিপিপি বাংলাদেশের বাণিজ্যকে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত করবে?
বিজিএমইএ-র মি. হাসান বলছিলেন, এটি নিয়ে শঙ্কার কিছু তারা দেখছেন না। কারণ, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের মত বাজারে বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে। তাদের মূল ভয়টা ছিল যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়েই।
যুক্তরাষ্ট্রে যে টিপিপি বাতিল হবে সেটি অবশ্য প্রত্যাশিতই ছিল।
নির্বাচনী প্রচারণার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার টিপিপিকে বারবারই খুবই ‘বাজে একটি চুক্তি’ বলে উল্লেখ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে এই চুক্তির বিরোধীদের মূল যুক্তি ছিল, এটি মার্কিন শ্রমবাজার, এমনকি স্বার্বভৌমত্বের ওপরও বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিপিপি বাতিলে বাংলাদেশের সুবিধা হলেও মি. ট্রাম্প বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যে সংরক্ষণবাদী নীতির আভাস দিয়েছেন, তাতে অদূর ভবিষ্যতে বিশ্ব বাণিজ্যের কী চেহারা দাড়ায় সেটি বলা বেশ মুশকিল।
from যুক্তরাজ্য ও ইউরোপ – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2jsVfNU
January 24, 2017 at 08:46PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.