নিজস্ব প্রতিবেদক ● সেবা, সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের মধ্য দিয়ে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি স্বরুপ কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম) এবং জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এসআই শহীদুল ইসলাম প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল পিপিএম (সেবা) লাভ করেছেন।
সোমবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে পুলিশ সপ্তাহে ২০১৭ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে এ পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বছর সারা দেশ থেকে বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম) পদক পাচ্ছেন ২৬ জন, বিপিএম সেবা ২৪ জন, প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল (পিপিএম) ৪১ জন, পিপিএম সেবা পাচ্ছেন ৪১ জনসহ মোট ১৩২ জন পদক লাভ করেন। এর আগে সকাল ১০টার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক। খোলা জিপে প্যারেড পরিদর্শনের পর কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
জানা যায়, কুমিল্লা পুলিশ সুপার মোঃ শাহ আবিদ হোসেন ২০০১ সালে ২০তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এএসপি হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। পরবর্তীতে তিনি নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে পুলিশ বিভাগের বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেন। বিগত ২০১৫ সালের ৩১ মে তিনি কুমিল্লা পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদানের পর থেকে জেলার অপরাধ দমনে নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তাঁরই দিক-নির্দেশনায় থানা পুলিশ, ডিবি ও অন্যান্য আইন-প্রয়োগকারী সংস্থা সমূহ অস্ত্র, মাদক উদ্ধার, সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারসহ অনেক চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে। পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেনের নিরলস দায়িত্বপালনকালে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারে কুমিল্লা জেলা সারা দেশের মধ্যে শীর্ষ স্থান লাভ করে। এছাড়াও সারা দেশের মধ্যে একমাত্র কুমিল্লাতে প্রথম তাঁর উদ্ভাবিত সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পুলিশে চাকুরি প্রার্থীর ডাটা এন্ট্রি, তাৎক্ষনিক ল্যাপটপ থেকে প্রবেশপত্র প্রিন্ট, আসন বিন্যাসসহ ফলাফল তৈরী অর্থাৎ প্রতিটি স্তরেই প্রযুক্তির সাহায্যে সম্পূর্ন স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হয়েছে। এর ফলে নিয়োগে কোন ধরণের ভূয়া পরীক্ষার্থী বা জালিয়াতির সুযোগ ছিল না। মোবাইল ফোনে এসএমএস এর মাধ্যমে প্রার্থীদের পরীক্ষার সময়সূচী ও ফলাফল প্রকাশ সর্বমহলে প্রশংসিত হয়। শেষে চাকুরিতে উত্তীর্ণ প্রর্থীদের তিনি নিজে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। চাকুরী জীবনে প্রবেশের প্রাক্কালেই নিয়োগকৃতদের মধ্যে পুলিশ বাহিনী সম্পর্কে একটি ইতিবাচক মনোভাব তৈরী করতে সক্ষম হন তিনি। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে অন লাইনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সেও কুমিল্লা জেলা পুলিশের কার্যক্রম সর্বমহলে বেশ প্রশংসীত হয়ে আসছে।
এদিকে পুলিশ সুপারের বিপিএম ও ডিবির এসআই শহীদুল ইসলামের পিপিএম পদক প্রাপ্তির বিষয়ে ঢাকা থেকে মুঠো ফোনে এক প্রতিক্রিয়ায় পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন জানান, ‘পুলিশের একার পক্ষে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব নয়, এ ক্ষেত্রে কুমিল্লার সর্বস্তরের জনগন আমাদের সহায়তায় এগিয়ে আসেন। আজকের এ পদক প্রাপ্তি কুমিল্লা জেলা পুলিশের জন্য যেমনী অনেক গৌরবের, তেমনী কুমিল্লাবাসীর জন্যও তা সত্যই আনন্দের। পুলিশের সর্বোচ্চ এ দুটি পদক প্রাপ্তিতে কুমিল্লা পুলিশ দায়িত্ব পালনে আরও আন্তরিক হবে।’
ডিবির এসআই শহীদুল ইসলাম:
মানিকগঞ্জের সদর উপজেলার শুশুন্ডা গ্রামের মরহুম সিরাজুল ইসলাম ও মালেকা বেগমের ছেলে সহিদুল ইসলাম ১৯৯৬ সালের ১ জুন বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন। কুমিল্লা ডিবিতে যোগদানের পর থেকে শহীদুল ইসলাম অনেক হত্যা মামলার রহস্য উৎঘাটন, অস্ত্র উদ্ধার, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও মাদক উদ্ধারে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। বিশেষ করে ডিবির এসআই শাহ কামাল আকন্দ পিপিএম ও এসআই শহীদুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ডিবির এই টিমটি জেলার অপরাধ দমনে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে আসছে।
পদক প্রাপ্তির বিষয়ে ডিবির এসআই শহীদুল ইসলাম তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন এবং ডিবির ওসি একেএম মঞ্জুর আলমের দিক নির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা শাখার সকল কর্মকর্তা ও সদস্য আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করার কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে প্রতিটি অভিযানেই সফলতা আসছে। তিনি বলেন, এ পদক প্রাপ্তির ফলে ডিবি দায়িত্ব পালনে আরও বেগবান হবে। আর আগে ডিবির এসআই শাহ কামাল আকন্দ গত বছরের পুলিশ সপ্তাহে পিপিএম (সাহসিকতা) পদক লাভ করেছিলেন।
The post প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নিলেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার appeared first on Comillar Barta™.
from Comillar Barta™ http://ift.tt/2jpbtYm
January 23, 2017 at 10:02PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন