এমন অনেক কথাই আমাদের বলতে হয়, যা আসলে কথার কথা। কথার কথা মানে ফালতু কথা।অর্থহীন কথা। ফাঁপা বুলি। যে কথার সঙ্গে কাজ বা বাস্তবতার কোনো মিল থাকে না। উল্টো বা বিপরীত দশাটাই বরং বাস্তব এবং সত্য হয়। এমনই একটি কথা হচ্ছে, পুলিশ জনগণের বন্ধু! আরেকটি কথা হচ্ছে- জনগণই দেশের মালিক! কিন্তু বাস্তবে কথাগুলো হবে- ‘পুলিশ জনগণের শত্রু’ আর ‘জনগণই দেশের মালি বা কুলি!’
বাংলাদেশের জনগণ যদি মালি-কুলি-মজুর বা পৃথিবীর নিকৃষ্টতম মান-মর্যাদাহীন প্রাণী না হয়, তাহলে নিজ স্বাধীন দেশের পুলিশের হাতে শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে কেউ এভাবে নিগৃহীত, নির্যাতিত হতে পারে? কোনো মালিককে কি তারই বেতনভুক্ত কর্মচারী যখন তখন অপমান-অবমান, নির্যাতন-নিপীড়ন করতে পারে? অশ্লীল কথা বা গালি-গালাজ করতে পারে? গায়ে হাত তুলতে পারে? বিনা অপরাধে নির্বিচারে এক দড়িতে অনেককে বাঁধতে পারে? পুলিশের এসব অন্যায় আচরণের এক বছরের শিরোনাম তুলে ধরলেই হয়তো প্রতিদিন দশটি আস্ত দৈনিক পত্রিকা বের করা সম্ভব!
ছোটবেলায় আমরা চোর-ডাকাত-পুলিশ খেলতাম। কম-সে-কম চারজন লাগত। বড়বেলায় এসে সেই খেলাটা আর খেলা হয় না, তবে রাজনীতিতে দেখতে পাই। পুলিশও কখনোই একা একা খেলতে পারে না। তারও খেলার সঙ্গী চাই। তার সঙ্গীদের প্রতীকী নাম চোর-ডাকাত। সেই চোর-ডাকাত কে বা কারা? পুলিশের সহিংস আচরণ নিঃসন্দেহে অন্যায় এবং বেআইনি, এবং ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। কিন্তু কারা তাকে খেলাচ্ছে? যারা খেলাচ্ছে, যারা পুলিশকে ব্যবহার করছে, তারাই প্রকৃত অপরাধী। আমাদের দরকার, পুলিশের আগে সেই চোর-ডাকাতদের দিকে আঙুল তোলা। তাদের চিহ্নিত করা এবং তাদের স্বভাব-চরিত্র পাল্টানোর কঠোর বার্তা দেওয়া। কেননা পুলিশ আসলে তাদের চাবি দেওয়া পুতুল। তারা যেভাবে নাচায় পুলিশও সেভাবে নাচে। যদিও দলীয়ভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চারা দলদোষে নিজে নিজেও নাচতে পারে।
কখনো কখনো দেখে-শুনে মনে হয়, বাস্তবতার নিরীহ দর্শক হলে রসিক না হয়ে পারা যায় না। তাকে হাসতেই হয়। না হেসে উপায় থাকে না। চারপাশে এত এত হাসির উপকরণ! শুধু এই শিশু বাংলাদেশ নয়, পুরো বুড়ো পৃথিবীটাই যেন ঠাট্টায় গড়া! সরস কৌতুকে ভরপুর! না হয় এ রকম কথা কেউ বলতে পারে-পুলিশ জনগণের বন্ধু! হিঃ হিঃ পুলিশ নাকি জনগণের বন্ধু! হাঃ হাঃ শত্রু নয়? তাইলে শত্রু কে? তাহলে কথাটা শুনলেই কেন হাসি পায়? কেন ঠাট্টার মতো লাগে? কেন মনে কাতুকুতু জাগে? প্রিয় পাঠক, মাফ করবেন আমি একটু হেসে নিই। আপনি চাইলেও একটু হেসে নিতে পারেন।
লেখক: কবি, সাহিত্যিক ও আন্দোলনকর্মী
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ সূত্রঃ আমাদের অর্থনীতি/ ৩১-০১-১৭
from Chapainawabganjnews http://ift.tt/2kcR2zl
January 31, 2017 at 06:56PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন