কলকাতা, ২৮ জানুয়ারি- হরতাল অবরোধ বিক্ষোভের নামে কেউ সরকারি বা বেসরকারি সম্পত্তি নষ্ট করলে তার কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করবে সরকার৷ ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে না পারলে জমি-বাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হবে৷ এজন্য সরকার খুব শিগগির নতুন আইন প্রণয়ন করবে৷ গতকাল শুক্রবার দুপুরে কলকাতার রেড রোডে খাদ্যসাথী দিবস ও পুলিশ পদক প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ যে কোনও সমস্যায় সরকারের সঙ্গে আলোচনা ও আবেদন-নিবেদনের রাস্তাও খোলা রয়েছে বলে সবাইকে আশ্বস্ত করেন তিনি৷ ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিডবিরোধী জমি নিয়ে আন্দোলনের জের ধরে হিংসাত্মক ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রীর এসব কথা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ৷ ওইদিনই ভাঙড়ের জমি জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির মুখপাত্র অলীক চক্রবর্তী সংবাদ সম্মেলনে জানান, তাঁরা সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান৷ সরকারকে বার্তা দিতে অবরোধও তুলে নেওয়া হয়েছে৷ তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর এ অবস্থান অশান্ত ভাঙড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে বলে মনে করছেন রাজ্য প্রশাসনের কর্মকর্তারা৷ সরকারি সূত্রের খবর, সম্পত্তি ধ্বংস প্রতিরোধে প্রাথমিক উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কে টি থমাসের নেতৃত্বে একটি কমিটি ১৯৮৪ সালের প্রিভেনশন অব ড্যামেজ অব পাবলিক প্রপার্টি আইনের বেশ কিছু সংশোধনী কেন্দ্রের কাছে জমা দিয়েছে৷ কেন্দ্র চায় ওই সুপারিশের ভিত্তিতে রাজ্যগুলো নিজের আইন তৈরি করে নিক৷ ইতিমধ্যে কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাবে এ ধরনের আইন রয়েছে৷ থমাসের সুপারিশে বেশ কিছু বিপজ্জনক বক্তব্য রয়েছে বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল৷ এর জের ধরে রাজনৈতিক আন্দোলনের অধিকার খর্ব হতে পারে বলেও আশঙ্কা কোনও কোনও মহলের। ভাঙড়ের নাম উল্লেখ না করলেও পুলিশের গাড়ি পোড়ানোর মতো হিংসাত্মক ঘটনা বন্ধে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ কিছুটা হুমকির সুরে তিনি বলেন, কোনও একটা ঘটনা ঘটল, অমনি দুটো পুলিশের জিপ জ্বালিয়ে দিয়ে এল৷ দুটো সাধারণ মানুষের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিল৷ এ ব্যাপারে সরকার কিন্তু অত্যন্ত কঠোর ব্যবস্থা নেবে৷ যাঁরা এসব করবেন, তাঁরা কিন্তু বুঝেশুনে করবেন৷ যাঁরা সরকারি গাড়িতে আগুন লাগাবে, তাঁদের কাছ থেকেই টাকা আদায় করা হবে৷ এর জন্য নতুন আইন করা হচ্ছে৷ আইন তৈরি হয়েই রয়েছে৷ শুধু বিধানসভায় পাশ হবে৷ সরকারি সিদ্ধান্ত সম্পর্কে সিপিএমের পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী কটাক্ষ করে বলেন, আশা করি মুখ্যমন্ত্রী নতুন আইনটি বিধানসভাকে দিয়েই কার্যকর করবেন৷ বাম সরকারের আমলে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই বিধানসভায় তাণ্ডব চালিয়েছিল তৃণমূল৷ বিপুল ক্ষতি হয়েছিল বিধানসভার৷ সেই বিধানসভাতেই সম্পত্তি ধ্বংসাত্মক ঘটনা প্রতিরোধে আইন হলে সেখানেই তা প্রথম কার্যকর করার সাহস দেখাবেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সম্প্রতি ভাঙড়ে জমি নিয়ে আন্দোলনের জের ধরে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়৷ পুলিশ ভ্যানকে ঠেলে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়৷ রাজনৈতিক আন্দোলনের নামে এ ধরনের হিংসাত্মক ঘটনার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, একটা গাড়ি কিনতে অনেক টাকা খরচ হয়৷ গাড়ি কিনতে গেলে খাদ্যে টান পড়বে৷ তবে হিংসাত্মক ঘটনার জন্য সাধারণ মানুষকে দোষারোপ করতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী৷ হিংসার দায় তিনি বিরোধীদের ঘাড়েই চাপিয়েছেন৷ তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ কখনও এসব করতে যায় না৷ এটা কিছু উদভ্রান্ত রাজনৈতিক দলের কাজ৷ রাজ্যবাসীর প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ, দয়া করে কেউ এ প্ররোচনায় পা দেবেন না৷ দয়া করে কেউ নিজের হাতে আইন তুলে নেবেন না৷ আর/১৭:১৪/২৮ জানুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2kdjyms
January 29, 2017 at 12:17AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন