যুক্তরাষ্ট্রে নতুন প্রেসিডেন্টের মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে কিছু সমালোচনা হয়েই থাকে। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রস্তাবিত মন্ত্রিসভা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইতিহাসের সর্বনিকৃষ্ট’ মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন বলে সম্প্রতি ওয়াশিংটন পোস্টের এক নিবন্ধে বলা হয়।
ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার বেশির ভাগ সদস্যই ধনকুবের ব্যবসায়ী বা সেনাবাহিনীর সাবেক জেনারেল। তাঁদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। তাঁদের অজ্ঞতা ও অনভিজ্ঞতা নিয়ে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। তা ছাড়া বিভিন্ন দপ্তরের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের সঙ্গে ট্রাম্প মনোনীত মন্ত্রীর অবস্থানের বৈপরীত্য লক্ষণীয়।
রয়টার্সজ্বালানিমন্ত্রী হিসেবে রিক পেরিকে বাছাই করেছেন ট্রাম্প। অথচ একসময় তিনি এই দপ্তর তুলে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। অন্যদিকে ওবামা প্রশাসনের জ্বালানিমন্ত্রী আর্নেস্ট মোনিজ একজন শ্রদ্ধাভাজন পরমাণু পদার্থবিদ। বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনার যথেষ্ট জ্ঞান নিয়েই এই মন্ত্রণালয়ে আসেন তিনি।
রয়টার্সট্রাম্প তাঁর স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে টম প্রাইসের নাম ঘোষণা করেছেন। তিনি একজন চিকিৎসক। তাঁর নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। গত বছর চিকিৎসাসামগ্রী প্রস্তুতকারক একটি কোম্পানির শেয়ার কেনেন। পরে কোম্পানির জন্য লাভজনক একটি আইন কংগ্রেসে প্রস্তাব করেন রিপাবলিকান পার্টির এই কংগ্রেসম্যান। সম্প্রতি বিদেশি একটি ফার্মের সঙ্গে চুক্তি করেছেন তিনি।
রয়টার্সশিক্ষামন্ত্রী হিসেবে ট্রাম্পের পছন্দ বেটসি ডেভস। রিপাবলিকান পার্টির এই শত কোটিপতি দাতা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। পদ-নিশ্চিতের শুনানিতে শিক্ষানীতির মৌলিক বিষয়ে চরম অজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি।
রয়টার্সযুক্তরাষ্ট্রে শ্রমিকদের অধিকারের ব্যাপারে বিরুদ্ধ মনোভাব পোষণের জন্য অ্যান্ড্রু পুজডার আলোচিত। আর তাঁকেই শ্রমমন্ত্রী হিসেবে বাছাই করেছেন ট্রাম্প। একটি ফাস্ট ফুড কোম্পানির এই সিইও শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর বিরোধী। শুধু তা-ই নয়, তাঁর কোম্পানির বিরুদ্ধে কর্মচারী ঠকানোর অভিযোগ রয়েছে।
রয়টার্সরিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন পেতে মাঠে নেমেছিলেন বেন কারসন। তাঁকে গৃহায়ণ ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচন করেছেন ট্রাম্প। দুঃখজনক হলেও সত্য, গৃহায়ণনীতি বিষয়ে কারসনের ন্যূনতম ধারণা নেই। যে কয়জন আফ্রিকান-আমেরিকানকে ট্রাম্প চেনেন, বেন কারসন তাঁদের অন্যতম। কারসন নিয়োগ পাওয়ার পেছনে দৃশ্যত এটাও একটি কারণ।
রয়টার্সট্রাম্প তাঁর বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে উইলবার রসকে মনোনীত করেছেন। তিনি একজন কোটিপতি বিনিয়োগকারী। তাঁর বাড়িতে কাজ করা বেশ কিছু কর্মচারীকে তিনি কোনো কাগজপত্রই দেননি বলে সম্প্রতি তথ্য বেরিয়েছে।
রয়টার্সরায়ান জিংকিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে বেছে নিয়েছেন ট্রাম্প। রিপাবলিকান জিংকি নেভি সিলের সাবেক সদস্য। চাকরিজীবনে আর্থিক অনিয়ম করতে গিয়ে ধরা খেয়েছিলেন তিনি।
রয়টার্সট্রাম্প মনোনীত পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন একজন তেল ব্যবসায়ী। সরকারি দায়িত্ব বা কূটনৈতিক বিষয়ে তাঁর কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তবে তাঁর তেলসমৃদ্ধ বিভিন্ন দেশে যাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে।
রয়টার্সট্রাম্পের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল জেমস ম্যাটিস। তিনি ‘ম্যাড ডগ’ হিসেবে পরিচিত। যুদ্ধপ্রীতির জন্য তিনি ‘যুদ্ধবাজ সন্ন্যাসী’ হিসেবে দুর্নাম কুড়িয়েছেন।
ট্রাম্প তাঁর প্রস্তাবিত মন্ত্রিসভার সদস্যদের ‘ইতিহাসের সর্বোচ্চ বুদ্ধিমত্তার অধিকারী’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এই মন্ত্রিসভা নিয়ে সমালোচনার শেষ নেই। ট্রাম্পের মন্ত্রিসভাকে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে অনভিজ্ঞ’ বলে অভিহিত করেছেন ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের অন্যতম ফেলো নরমান এলসন।
from যুক্তরাজ্য ও ইউরোপ – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2kwtM25
January 26, 2017 at 06:30PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.