নিজস্ব প্রতিবেদক,
বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে ছাত্রলীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংগঠনের সাবেক এই সভাপতি বলেন, “আজকে কোথাও কোথাও, কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। এটা অশুভ প্রবণতা। এটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের জন্য চরম ব্যর্থতা।
বিভিন্ন কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালনকে ‘অশুভ প্রবণতা’ আখ্যায়িত করে এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
“যদি আভ্যন্তরীন কোনো গেঞ্জামের জন্য ক্যম্পাসের পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়, এর জন্য আমাদের সাংগঠনিক ব্যবস্থা আছে। প্রশাসনিক ব্যবস্থা আছে, যেই ব্যক্তিদের জন্য এই সমস্যা সৃষ্টি হবে, তাকে পুলিশে সোপর্দ করতে হবে, কিন্তু এই অজুহাতের জন্য একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালে জন্য বন্ধ করে দেওয়া, শিক্ষার্থীদের অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাজ নয়।”
তিনি বলেন, “আমি পরিষ্কার বলতে চাই, এই অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট, কথায় কথায় ধর্মঘট। অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট যেমন চলবে না, তেমনি অনির্দিষ্টকাল কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা চলবে না। এটা যারা করে এটা তাদের ব্যর্থতা “
প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে এর নাম ছিল ‘পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ’। পাকিস্তান আমলেই ‘মুসলিম’ শব্দটি ছেঁটে ফেলা হয়। স্বাধীনতার পর নাম হয় ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’।
প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ; সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন।
ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি শোভাযাত্রাও বের করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যন্টিন থেকে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তব্যে ওবায়দাল কাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজনে শিক্ষামন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রধানদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “নির্বাচন যখন থাকবে, তখন যারা প্রার্থী হবে, তারা ভাববে আমি যদি খারাপ আচরণ করি তাহলে শিক্ষার্থীরা আমাকে ভোট দিবে না। কাজেই ছাত্র সংসদ নির্বাচন দরকার। আজকে ২৫ বছর ধরে বন্ধ হয়ে আছে সকল ছাত্র সংসদ। খোলা থাকলে অন্তত ৫০ জন নেতা তৈরি হতো।”
ছাত্রলীগকে পরগাছা মুক্ত করার নির্দেশ দিয়ে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কাদের বলেন, “২০১৭ সালের অঙ্গীকার হবে, অনুপ্রবেশকারী, পরগাছামুক্ত ছাত্রলীগ। এই অনুপ্রবেশকারী, পরগাছারাই ছাত্রলীগের এগিয়ে যাবার পথে প্রধান বাধা। এদেরকে চিহ্নিত করতে হবে।
নিয়মিত ছাত্রদের সংগঠনের কমিটিতে রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে এই ধারা শুরু হয়ে গেছে।
ছাত্রলীগে ত্যাগী কর্মীদের মূল্যায়নের পরামর্শ দিয়ে কাদের বলেন, “ত্যাগী কর্মীরা যেন কোনঠাসা না হয়। ছাত্রলীগে যেন পকেট কমিটি কোথাও না হয়। এটা আমি বিশেষভাবে বলছি। আজকে অমুকের এই ভাগ, তমুকের এই ভাগ। এই ভাগাভাগি করলে ছাত্রলীগের অগ্রযাত্রা ব্যহত হবে। ছাত্রলীগের মান ক্ষুন্ন হবে। কারও বাসা বাড়ি পাহারা দেওয়া ছাত্রলীগের কাজ না।”
সংগঠনের মধ্যে এসব চলবে না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, “আজকে বিএনপির বুদ্ধিজীবীরা বলে, বিএনপি হাঁটু ভাঙ্গা দল। আমি বলব, ফেলে আসা বছরের সবচেয়ে ব্যর্থ দল হচ্ছে বিএনপি।
“নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনের পর আগামী নির্বাচনে বিএনপির জেতা অস্বাভাবিক। নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনে হারার পর বিএনপি দিশেহারা দলে পরিণত হয়ে গেছে। এখন তারা আবোল-তাবোল বকছে, উন্মাদের মতো হয়ে গেছে। বিবৃতি সর্বস্ব কর্মকাণ্ড করছে। তাই আমি আমার সহবর্মীদের বলি এদের সকল প্রশ্নের জবাব দেওয়ার দরকার নেই।”
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এনামুল হক শামীম, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনসহ ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
from ঢাকা – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2i9qexT
January 04, 2017 at 04:02PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন