শিলিগুড়ি, ০২ জানুয়ারি- লক্ষ্যটা ছিল ফাইনালে ওঠা। সেটা যে এত দাপটের সঙ্গে পূরণ হবে ভাবা যায়নি আগে। মালদ্বীপকে গুঁড়িয়ে দিয়েই মেয়েদের সাফ ফুটবলের ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো সাফ ফুটবলের ফাইনালে তুলতে হ্যাটট্রিক করেছেন সিরাত জাহান স্বপ্না। জোড়া গোল সাবিনা খাতুনের। এই দুই ফরোয়ার্ডের সঙ্গে গোলের খাতায় নাম লেখালেন ডিফেন্ডার নার্গিস খাতুনও। ৬-০ গোলের বিশাল জয়ে স্বপ্ন পূরণের শেষ ধাপে পৌঁছে গেছে গোলাম রব্বানী ছোটনের দল। সেখানে প্রতিপক্ষ তিন বারের চ্যাম্পিয়ন শক্তিশালী ভারত, যাদের রুখে দিয়েই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল সাবিনারা। মালদ্বীপের বিপক্ষে কখনও না হারার রেকর্ড বজায় রাখল বাংলাদেশ। গত সাফে ৩-১ আর এসএ গেমসে ২-০ গোলে মালদ্বীপকে হারিয়েছিল কৃষ্ণারা। ভারতের বিপক্ষে সব শেষ ম্যাচের রক্ষণাত্মক কৌশল ছেড়ে বেরিয়ে মালদ্বীপের বিপক্ষে আক্রমণাত্মক ফুটবলে ফেরার কথা বলেছিলেন বাংলাদেশ কোচ। শেষ পর্যন্ত সেই কৌশলেই এল সাফল্য। তবে শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে সোমবার দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে শুরুর দিকে কিছুটা অগোছালো ফুটবল খেলা ছোটনের দল ষষ্ঠ মিনিটে ধাক্কা খেতে বসেছিল। ডিফেন্ডার শিউলি আজিম ব্যাক পাস দিতে গিয়ে বল তুলে দেন শাহুলা তাউফেজের পায়ে। বিপদসীমায় ঢুকে পড়া এই মিডফিল্ডারকে শট নেওয়ার আগে বল গ্লাভসবন্দী করেন সাবিনা আক্তার। একাদশ মিনিটে স্বপ্নার দুর্দান্ত গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারের কাছ থেকে বল কেড়ে নেওয়ার পর আরও দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে মাপা শটে গোল করেন এই ফরোয়ার্ড। তিন ফরোয়ার্ডে সাজানো বাংলাদেশের আক্রমণভাগের মূল খেলোয়াড় সাবিনা খাতুনকে শুরু থেকে কড়া পাহারায় রাখে ডিফেন্ডাররা। তবে সাবিনা-স্বপ্নার মিলিত প্রচেষ্টায় ২২তম মিনিটে ঠিকই ব্যবধান দ্বিগুণ করে নেয় বাংলাদেশ। সতীর্থের লম্বা করে বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বাঁ দিক থেকে আক্রমণ শানানো সাবিনার নিখুঁত পাস প্লেসিং শটে জালে জড়িয়ে দেন স্বপ্না। মালদ্বীপের রক্ষণে চাপ ধরে রাখা বাংলাদেশ প্রথমার্ধের শেষ দিকে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নিতে পারত। ৩৫তম মিনিটে ডান দিক থেকে কৃষ্ণা রানী সরকারের শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। ৪৮তম মিনিটে ম্যাচ নিজেদের মুঠোয় নিয়ে নেয় বাংলাদেশ। স্বপ্নার বাড়ানো ক্রসে দারুণ শটে লক্ষ্যভেদ করেন সাবিনা। চার মিনিট পর মালদ্বীপকে আরও কোণঠাসা করে ফেলে বাংলাদেশ। ডান দিক থেকে স্বপ্নার বাড়ানো বলে ডিফেন্ডার নার্গিস খাতুনের ঝুলিয়ে নেওয়া শট ক্রসবারের ভেতরের কানায় লেগে ঠিকানা খুঁজে পায়। প্রথমবারের মতো সেমি-ফাইনালে ওঠা মালদ্বীপের ম্যাচে ফেরার আশা ৫৮তম মিনিটে একেবারে শেষ করে দেয় বাংলাদেশ। মার্জিয়ার বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সাবিনাকে বাড়ান স্বপ্না। সাবিনার ফিরতি পাস থেকে পাওয়া বল মাপা শটে জালে পৌঁছে দিয়ে হ্যাটট্রিকের আনন্দে মাতেন স্বপ্না। মার্জিয়াকে মরিয়ম ফেলে দিলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পট কিক থেকে স্কোরলাইন ৬-০ করেন সাবিনা। প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের এই ফরোয়ার্ডের গোল হলো ৭টি। ৬৪তম মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে মার্জিয়ার ফ্রি কিক পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। ফিরতি বলে পাওয়া সুযোগটি কাজে লাগাতে পারলে হ্যাটট্রিকের আনন্দে ভাসতে পারতেন সাবিনা কিন্তু উড়িয়ে মেরে তা নষ্ট করেন। আফগানিস্তানকে ৬-০ গোলে হারিয়ে শুরু করা বাংলাদেশ দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিক ভারতকে গোলশূন্য ড্রয়ে রুখে দেয়। দুই দলের পয়েন্ট সমান হলেও গোল পার্থক্যে এগিয়ে থেকে প্রথমবারের মতো গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমি-ফাইনালে উঠে বাংলাদেশ। সোমবার প্রথম সেমি-ফাইনালে নেপালকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো ফাইনালে ওঠে ভারত। প্রতিযোগিতাটির টানা তিনবারের চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে আগামী বুধবার শিরোপা লড়াইয়ে নামবে বাংলাদেশ। আর/১০:১৪/০২ জানুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2ivW0pU
January 03, 2017 at 05:50AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন