দীর্ঘ দুই বছর ৪ দিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র (সাময়িক বহিস্কৃত) আরিফুল হক চৌধুরী। গত বুধবার সন্ধ্যায় কারামুক্ত আরিফের কথায় তেমন আভাস মিলেনি। মেয়র পদ ফিরে পাওয়ার চেয়ে নিজের চিকিৎসাকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন তিনি।
২০১৩ সালের ১৫ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বিজয়ী হন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। নির্বাচনের দেড় বছরের মাথায় ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সিআইডির সম্পূরক চার্জশিটে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এসএম কিবরিয়া হত্যা মামলায় আসামি করা হয় তাকে। ওই বছরের ৩০ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন প্রার্থণা করেন আরিফ। আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
কারাগারে যাওয়ার পরই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন আরিফ। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকায়। সেখানে প্রায় ৬ মাস হাসপাতালে থেকে তার চিকিৎসা চলে। সিলেট কেন্দ্রীয় কারগারে আসার পরও কয়েক দফায় তিনি ভর্তি হন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। মামলার নির্ধারিত তারিখে হুইল চেয়ারে বসিয়ে তাকে নিয়ে আসা হতো আদালতে। কিবরিয়া হত্যার পর তাকে গ্রেফতার দেখানো হয় সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভায় বোমা হামলার মামলায়।
এদিকে, কারান্তরিণ হওয়ার একসপ্তাহের মধ্যে ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এরপর ভারপ্রাপ্ত মেয়রের পদ নিয়ে আইনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও এডভোকেট সালেহ আহমদ। অবশেষে মামলার জালে আটকা পড়ে মেয়রের চেয়ারে বসা হয়নি কারো। আরিফের অনুপস্থিতিতে দু’বছরই শূণ্য থাকে মেয়রের চেয়ার।
কিবরিয়া হত্যা ও সুরঞ্জিত সেনের জনসভায় বোমা হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত ৪টি মামলায় পর্যায়ক্রমে উচ্চ আদালত থেকে জামিন লাভ করেন আরিফ। ২ বছর ৪ দিন পর গত বুধবার সন্ধ্যায় তিনি মুক্তি পান সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে। কারামুক্ত হওয়ার পর তিনি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন সিলেট নগরবাসীর প্রতি। কারান্তরিণ থাকাবস্থায় তার ও পরিবারের পাশে দাঁড়ানোয় নগরবাসীর প্রতি তিনি এ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
মেয়র পদে ফিরতে আইনী প্রক্রিয়া কবে শুরু করবেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আরিফ বলেন- ‘অসুস্থ অবস্থায় কারাগারে দুইবছর কেটেছে। কারান্তরিণ সময়ে সুচিকিৎসা হয়নি। তাই শরীর আর চলছে না। আগে চিকিৎসা নিয়ে পুরোপুরি সুস্থ হতে চাই, এরপর মেয়র পদ নিয়ে ভাববো।’
তিনি আরো বলেন- ‘নগরবাসী আমাকে ভোট দিয়ে মেয়র নির্বাচিত করেছে। বিপদের সময় তারা আমার পাশে ছিল। নগরবাসীই কেবল পারে আমাকে বহিস্কার করতে। আর কারো বহিস্কারের ক্ষমতা নেই। জীবন দিয়ে হলেও নগরবাসীর সেই ঋণ শোধ করতে চাই। সুস্থ হলেই আমি নগরবাসীর সেবায় ফিরবো।’
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2ii3cF3
January 06, 2017 at 11:48AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন