আমি এখানে এসেছি বরং ব্যতিক্রমী কিছু করতে। আমি আমার ভিসা ফেরত দিতে চাই।’
গত সোমবার মেক্সিকোর মার্কিন কনসুলেটে গিয়ে যে নারী বুক ফুলিয়ে এ কথা বলেছেন, তিনি মেক্সিকোর নাগরিক আলমা সিলার কনত্রেরাস (৫৯)। যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা নিয়ে নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন নীতিমালা ও ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মোক্ষম জবাব দিতে এই কাণ্ড করেন ওই নারী। মার্কিন মুলুকে বাইরের দেশগুলোর নাগরিকদের ভ্রমণ ও বেড়ানোর বিষয়ে ট্রাম্প নতুন যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, অনেকের কাছে তা বাড়াবাড়ি ও মানহানিকর। ষাটের দোরগোড়ায় দাঁড়ানো কনত্রেরাসের কাছেও তা-ই। মেক্সিকোর হারমোসিলো শহরে বসবাস করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত থেকে দক্ষিণে আড়াই ঘণ্টা দূরত্বে অবস্থিত ওই শহর। পর্যটক ভিসা নিয়ে তিনি নিয়মিত যুক্তরাষ্ট্রে যেতেন। সপ্তাহান্তে কেনাকাটা করতে যেতেন আর অ্যারিজোনা, লাস ভেগাস ও নিউইয়র্কে বসবাসরত পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করতেন। এ জন্য স্থানীয় মার্কিন কনসুলেটে কিছু দালিলিক তথ্য জমা দিতে হয়। আলমাও তাঁর তথ্যাদি জমা দিয়েছিলেন।
কিন্তু ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনী প্রচারণার সময় মেক্সিকোর নাগরিকদের ‘ধর্ষক’ ও ‘অপরাধী’ বলে ভর্ৎসনা করেন। এটা ভালোই গায়ে বিঁধেছে তাঁর। এ অপমান সইতে না পেরে তিনি ঠিক করেছেন, মার্কিন মুলুকে আর যাবেনই না। দরকার নেই এই ভিসার।
গত সোমবার সিলার মেক্সিকোতে মার্কিন কনস্যুলেট কার্যালয়ে গিয়ে তাঁর ভিসা-সংক্রান্ত সব কাগজপত্র ফিরিয়ে নিয়েছেন। তিনি জানান, গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন নির্বাচনী প্রচারে মেক্সিকোর নাগরিকদের ধর্ষক ও অপরাধী বলে মন্তব্য করেছিলেন, তখনই তিনি ভিসা ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তাঁর স্বামীকে বলেছিলেন, ‘এটা ঠিক নয়। একবার কল্পনা করো তো, এই লোকটা প্রেসিডেন্ট হলে কী অবস্থা হবে! যদি সত্যিই তিনি প্রেসিডেন্ট হন, তাহলে আমি আমার ভিসা ফিরিয়ে নেব।’
সিলার জানিয়েছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে না থাকলে তিনি আবার যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার জন্য আবেদন করবেন। তিনি বলেন, ‘যদি আমি পাই, তো ভালো, না পেলেও ভালো। আমি আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি।’
ভিসা ফিরিয়ে দেওয়ার চিঠিটি সিলারের পরিবারের এক সদস্য ফেসবুকে পোস্ট করলে তিনি মেক্সিকোতে রাতারাতি তারকা বনে যান। তবে সিলার বলছেন, বন্ধুরা যেমন বলছে, এটাকে তেমন সাহসিকতা বলে মনে করেন না তিনি। তিনি চান না মেক্সিকোর অন্যান্য নাগরিক তাঁর মতো ভিসা ফিরিয়ে দিক। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক মানুষের হৃদয় কী চায়, সেটা তাঁর অনুসরণ করা উচিত। আমি কাউকেই বলছি না তাঁরা ভিসা ফিরিয়ে দিক, এমনকি আমার সন্তানদেরও বলছি না।’
from যুক্তরাজ্য ও ইউরোপ – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2l2U7Si
February 03, 2017 at 08:23PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন