চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নামোশংকবাটি ফতেপুর গ্রামের দু’ শিশু সুমাইয়া খাতুন মেঘলা ও মেহজাবিন আক্তার মালিহা হত্যাকান্ডের চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। দু’ শিশুর দেহে থাকা স্বর্ণালংকারের লোভেই প্রতিবেশি ইব্রাহিম আলীর স্ত্রী লাকি আক্তার তাদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লাকি আক্তারের বাড়ি থেকে বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের পর আটক লাকি আক্তার ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে এমন কথা জানিয়েছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে, দু’ শিশুর লাশ উদ্ধারের পর ফতেপুর এলাকায় আত্মংক বিরাজ করছে। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী হত্যাকারীর ফাঁসির দাবি জানিয়েছে।
ফতেপুর গ্রামের প্রবাসী মিলন রানার মেয়ে সুমাইয়া খাতুন মেঘলা ও আব্দুল মালেকের মেয়ে মেহজাবিন আক্তার মালিহা রোববার স্থানীয় কিন্ডার গার্টেন স্কুল ‘ছোটমনি বিদ্যানিকেতন’ থেকে ফিরে বাড়ির বাইরে খেলতে যাওয়ার পর নিখোঁজ হয়। বিষয়টি পুলিশকে জানানোর পর শিশু দু’টির সন্ধান না পাওয়া গেলে মঙ্গলবার স্থানীয় যুবকরা ফতেপুরের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করার উদ্যোগ নেয়। যুবকদের এমন উদ্যোগেই প্রতিবেশি ভ্যানচালক ইয়াসিন আলীর বাড়ি থেকে বস্তাবন্দি দু’ শিশুর লাশ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে এবং বাড়ির মালিক ইয়াসিল আলী (৭০), তার স্ত্রী তানজিলা খাতুন (৫০) ও ছেলে ইব্রাহিম আলী স্ত্রী লাকি আক্তার (২২) কে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ফতেপুরের ভ্যানচালক ইয়াসিন আলীর বাড়ির খাটের নিচ থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় মেঘলা ও মালিহার লাশ উদ্ধারের পর আটক তিন জন পুলিশের কাছে প্রাথমিক স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছে স্বর্ণালঙ্কারের লোভেই দু’ শিশুকে হত্যা করা হয়েছে’। পুলিশ সুপার জানান, নিখোঁজ ওই দুই শিশুর কাছে সোনার দুল ও মালা ছিল।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাজহারুল ইসলাম জানিয়েছেন, দু’ শিশু নিখোঁজ হওয়ার পর নিখোঁজ মাালিয়ার পিতা আব্দুল মালেকের দায়ের করা মামলায় লাকি আক্তারকে আসামী করা হয়েছে। আটক ইয়াসিন আলী ও তার স্ত্রী তানজিলা খাতুনকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
এদিকে, চাঞ্চল্যকর দুই শিশু হত্যাকান্ডের ঘটনায় ফতেপুর এলাকায় থমথমে অবস্থা ও আত্মংক বিরাজ করছে। এলাকা ও পরিবারের চলছে শোকের মাতম। সকাল থেকেই শত শত নারী পুরুষের শ্রোত ছিল মেঘলা আর মালিহাদের বাড়ির দিকে।
নিহত মেঘলা ও মালিহার মা কন্যা হারানোর শোকে বারবার মুর্ছা জাচ্ছেন। মেঘলার মা বলেন, ‘ আমার কলিজার টুকরাকে এভাবে মেরে ফেলবে তা কখনই ভাবিনি। আমার মেয়েকে বস্তার মধ্যে ভরে কষ্ট দিয়ে মেরে ফেলেছে। আমিও চাই যে আমার মেয়েকে মেরেছে তাকেও তেমনই কষ্ট দিয়ে মারা হোক। ফাঁসি দিয়ে দিলেতো একবারই মরে গেল। ওকে কষ্ট দিয়ে মারা হোক’।
বুধবার এলাকাঘুরে দেখাগেছে, সাধারণ মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভ ও আত্মংক বিরাজ করছে। তারা জানিয়েছে, এঘটনার পর এলাকার মানুষ তাদের সন্তানদের নিয়ে আত্মংকে রয়েছে। একলা বাড়ির বাইরে বের হতে দিচ্ছেনা। স্কুলেও পাঠায়নি। আবার কেউ কেই স্কুলে সন্তানদের সঙ্গে করে নিয়ে গেছে।
এলাকাবাসী জানান, সুমাইয়া ও মালিহাদের বাসার পাশেই লাকি আক্তারের বাড়ি। প্রতিবেশি হিসেবে যেমন সম্পর্ক থাকার কথা ছিল তেমনি সম্পর্ক ছিল পরিবারগুলোর মাঝে। লাকির মেয়ে ছিল মালিহার বান্ধবি। এই লাকিই যে সুমাইয়া ও মালিহাকে হত্যা করতে পারে তা কখনো ভাবেন নি তারা। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী, শিশু সন্তানদের নিরাপত্তার পাশাপাশি দু’ শিশু সন্তানকে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের ফাঁসি দাবি করেন।
নিহত মেঘলা ও মালিহা ছিল স্থানীয় কিন্ডার গার্টেন স্কুল ‘ ছোটমনি বিদ্যানিকেতন’র শিক্ষার্থী। মর্মান্তিক এই ঘটনার পর বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে গেছে। ছোটমনি বিদ্যানিকেতনের অধ্যক্ষ খাইরুল ইসলাম সোহেল বলেন, ‘ শিশু দুটি ছিল আমার সন্তানের মত। তাদের যে এমন পরিণতি হল তা মেনে নিতে পারছিনা। দেশের প্রচলিত আইনে হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি। যাতে আর কোন শিশু এমন করুণ পরিণতির মুখে না পড়ে’।
১৬৪ ধারায় লাকি আক্তারের জবানবন্দি
দুপুরে পুলিশ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য লাকি আক্তারকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোর্পাদ করা হয়। জবানবন্দি দেয়ার পর বুধবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম জানান, রোববার লাকি আক্তারের বাড়ির সামনে লাকির মেয়েসহ মেঘলা ও মালিহা খেলা করছিল। আগে থেকে ঋণগ্রস্থ থাকা লাকি মেঘলা ও মালিহার দেহে থাকা স্বর্ণালংকার দেখে লোভ হয় এবং তাদেরকে বাড়ির মধ্যে ডেকে নেয়। বাড়ির মধ্যে নিয়ে গিয়ে লাকি মেঘলার দেহে থাকার কানের দুল ও গলার চেন এবং মালিহার কানের দুল খুলে নেয়। এরপর তাদেরকে বাড়ির মধ্যেই আটকে রাখে। রোববার রাতে লাকি মেঘলা ও মালিহাকে সঙ্গে নিয়েই ঘুমায়। পরের দিন সোমবার তাদেরকে দিনভর বাড়ির ঘরের মধ্যে থাকা ফ্রিজের পেছনে আটকে রাখে। ওইদিন রাতে তারা ব্যাপক বাড়ি যাওয়ার জন্য কান্নাকাটি করলে লাকি আক্তার তার ঘরের সোয়ার বঙ্খাটের ভেতরে ঢুকিয়ে আটকে দেয়। বঙ্খাটের ভেতরেই তারা মারা যায়। মঙ্গলবার সকালে বঙ্খাট খুলে তাদেরকে মৃত দেখে লাকি দু’শিশুকে বস্তাবন্দি করে পাশের শশুড়ের ঘরের খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে।
১৬৪ ধারায় লাকি জানায়, মেঘলা ও মালিহার দেহে থাকা স্বর্ণালংকার ১২ আনা ২ রতি স্বর্ণালংকার প্রায় ২১ হাজার টাকায় একটি স্বর্ণের দোকানে বিক্রি করে। বিক্রি করা সেই ২১ হাজার টাকার বড় অংশ বিভিন্ন পাওনাদারকে পরিশোধ করে।
পুলিশ সুপার জানান, লাকি আক্তারের শশুড় ভ্যানচালক ইয়াসিন আলী গ্রামে গ্রামে দই বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। তারবাড়ি ছেলের বাড়ির পাশেই। লাকি আক্তারের স্বামী ইব্রাহিম বিদেশে থাকায় ইয়াসিন শুধু রাতে ছেলের বাড়ির একটি ঘরে ঘুমাতে যেত।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে লাকি আক্তার নিজেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এর সঙ্গে অন্য কারো সংশ্লিষ্টা নেই বলে স্বীকার করেছে।
পুলিশ সুপার মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আগের অপহরণ মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হয়েছে। স্পর্শকাতর এই ঘটনায় নিহত দু’ শিশুর ময়নাতদন্ত রির্পোট পাওয়া গেলে বিষয়টি আরো পরিস্কার হবে’।
তিনি বলেন, ‘ ময়নাতদন্ত পাওয়ার পর আমরা দ্রুত অভিযোগ দিয়ে দিবো এবং অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হবে’।
এদিকে, রাতে সদর থানা পুলিশ স্মৃতি জুয়েলার্সের মালিক পলাশকে আটক করেছে। পলাশ লাকি আক্তারের কাছ থেকে মেঘলা ও মালিহার স্বর্ণগুলো কিনেছিল।
অন্যদিকে, নিহত দু’ শিশুর মধ্যে মালিহাকে ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার বিকেলে নামাজে জানাজা শেষে স্থানীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। মেঘলার লাশ রাখা হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালের হীমঘরে। তার প্রবাসী পিতা ফিরে এলে তাকে দাফন করা হবে বলে পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১৫-০২-১৭
ফতেপুর গ্রামের প্রবাসী মিলন রানার মেয়ে সুমাইয়া খাতুন মেঘলা ও আব্দুল মালেকের মেয়ে মেহজাবিন আক্তার মালিহা রোববার স্থানীয় কিন্ডার গার্টেন স্কুল ‘ছোটমনি বিদ্যানিকেতন’ থেকে ফিরে বাড়ির বাইরে খেলতে যাওয়ার পর নিখোঁজ হয়। বিষয়টি পুলিশকে জানানোর পর শিশু দু’টির সন্ধান না পাওয়া গেলে মঙ্গলবার স্থানীয় যুবকরা ফতেপুরের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করার উদ্যোগ নেয়। যুবকদের এমন উদ্যোগেই প্রতিবেশি ভ্যানচালক ইয়াসিন আলীর বাড়ি থেকে বস্তাবন্দি দু’ শিশুর লাশ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে এবং বাড়ির মালিক ইয়াসিল আলী (৭০), তার স্ত্রী তানজিলা খাতুন (৫০) ও ছেলে ইব্রাহিম আলী স্ত্রী লাকি আক্তার (২২) কে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ফতেপুরের ভ্যানচালক ইয়াসিন আলীর বাড়ির খাটের নিচ থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় মেঘলা ও মালিহার লাশ উদ্ধারের পর আটক তিন জন পুলিশের কাছে প্রাথমিক স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছে স্বর্ণালঙ্কারের লোভেই দু’ শিশুকে হত্যা করা হয়েছে’। পুলিশ সুপার জানান, নিখোঁজ ওই দুই শিশুর কাছে সোনার দুল ও মালা ছিল।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাজহারুল ইসলাম জানিয়েছেন, দু’ শিশু নিখোঁজ হওয়ার পর নিখোঁজ মাালিয়ার পিতা আব্দুল মালেকের দায়ের করা মামলায় লাকি আক্তারকে আসামী করা হয়েছে। আটক ইয়াসিন আলী ও তার স্ত্রী তানজিলা খাতুনকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
এদিকে, চাঞ্চল্যকর দুই শিশু হত্যাকান্ডের ঘটনায় ফতেপুর এলাকায় থমথমে অবস্থা ও আত্মংক বিরাজ করছে। এলাকা ও পরিবারের চলছে শোকের মাতম। সকাল থেকেই শত শত নারী পুরুষের শ্রোত ছিল মেঘলা আর মালিহাদের বাড়ির দিকে।
নিহত মেঘলা ও মালিহার মা কন্যা হারানোর শোকে বারবার মুর্ছা জাচ্ছেন। মেঘলার মা বলেন, ‘ আমার কলিজার টুকরাকে এভাবে মেরে ফেলবে তা কখনই ভাবিনি। আমার মেয়েকে বস্তার মধ্যে ভরে কষ্ট দিয়ে মেরে ফেলেছে। আমিও চাই যে আমার মেয়েকে মেরেছে তাকেও তেমনই কষ্ট দিয়ে মারা হোক। ফাঁসি দিয়ে দিলেতো একবারই মরে গেল। ওকে কষ্ট দিয়ে মারা হোক’।
বুধবার এলাকাঘুরে দেখাগেছে, সাধারণ মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভ ও আত্মংক বিরাজ করছে। তারা জানিয়েছে, এঘটনার পর এলাকার মানুষ তাদের সন্তানদের নিয়ে আত্মংকে রয়েছে। একলা বাড়ির বাইরে বের হতে দিচ্ছেনা। স্কুলেও পাঠায়নি। আবার কেউ কেই স্কুলে সন্তানদের সঙ্গে করে নিয়ে গেছে।
এলাকাবাসী জানান, সুমাইয়া ও মালিহাদের বাসার পাশেই লাকি আক্তারের বাড়ি। প্রতিবেশি হিসেবে যেমন সম্পর্ক থাকার কথা ছিল তেমনি সম্পর্ক ছিল পরিবারগুলোর মাঝে। লাকির মেয়ে ছিল মালিহার বান্ধবি। এই লাকিই যে সুমাইয়া ও মালিহাকে হত্যা করতে পারে তা কখনো ভাবেন নি তারা। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী, শিশু সন্তানদের নিরাপত্তার পাশাপাশি দু’ শিশু সন্তানকে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের ফাঁসি দাবি করেন।
নিহত মেঘলা ও মালিহা ছিল স্থানীয় কিন্ডার গার্টেন স্কুল ‘ ছোটমনি বিদ্যানিকেতন’র শিক্ষার্থী। মর্মান্তিক এই ঘটনার পর বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে গেছে। ছোটমনি বিদ্যানিকেতনের অধ্যক্ষ খাইরুল ইসলাম সোহেল বলেন, ‘ শিশু দুটি ছিল আমার সন্তানের মত। তাদের যে এমন পরিণতি হল তা মেনে নিতে পারছিনা। দেশের প্রচলিত আইনে হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি। যাতে আর কোন শিশু এমন করুণ পরিণতির মুখে না পড়ে’।
১৬৪ ধারায় লাকি আক্তারের জবানবন্দি
দুপুরে পুলিশ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য লাকি আক্তারকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোর্পাদ করা হয়। জবানবন্দি দেয়ার পর বুধবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম জানান, রোববার লাকি আক্তারের বাড়ির সামনে লাকির মেয়েসহ মেঘলা ও মালিহা খেলা করছিল। আগে থেকে ঋণগ্রস্থ থাকা লাকি মেঘলা ও মালিহার দেহে থাকা স্বর্ণালংকার দেখে লোভ হয় এবং তাদেরকে বাড়ির মধ্যে ডেকে নেয়। বাড়ির মধ্যে নিয়ে গিয়ে লাকি মেঘলার দেহে থাকার কানের দুল ও গলার চেন এবং মালিহার কানের দুল খুলে নেয়। এরপর তাদেরকে বাড়ির মধ্যেই আটকে রাখে। রোববার রাতে লাকি মেঘলা ও মালিহাকে সঙ্গে নিয়েই ঘুমায়। পরের দিন সোমবার তাদেরকে দিনভর বাড়ির ঘরের মধ্যে থাকা ফ্রিজের পেছনে আটকে রাখে। ওইদিন রাতে তারা ব্যাপক বাড়ি যাওয়ার জন্য কান্নাকাটি করলে লাকি আক্তার তার ঘরের সোয়ার বঙ্খাটের ভেতরে ঢুকিয়ে আটকে দেয়। বঙ্খাটের ভেতরেই তারা মারা যায়। মঙ্গলবার সকালে বঙ্খাট খুলে তাদেরকে মৃত দেখে লাকি দু’শিশুকে বস্তাবন্দি করে পাশের শশুড়ের ঘরের খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে।
১৬৪ ধারায় লাকি জানায়, মেঘলা ও মালিহার দেহে থাকা স্বর্ণালংকার ১২ আনা ২ রতি স্বর্ণালংকার প্রায় ২১ হাজার টাকায় একটি স্বর্ণের দোকানে বিক্রি করে। বিক্রি করা সেই ২১ হাজার টাকার বড় অংশ বিভিন্ন পাওনাদারকে পরিশোধ করে।
পুলিশ সুপার জানান, লাকি আক্তারের শশুড় ভ্যানচালক ইয়াসিন আলী গ্রামে গ্রামে দই বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। তারবাড়ি ছেলের বাড়ির পাশেই। লাকি আক্তারের স্বামী ইব্রাহিম বিদেশে থাকায় ইয়াসিন শুধু রাতে ছেলের বাড়ির একটি ঘরে ঘুমাতে যেত।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে লাকি আক্তার নিজেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এর সঙ্গে অন্য কারো সংশ্লিষ্টা নেই বলে স্বীকার করেছে।
পুলিশ সুপার মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আগের অপহরণ মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হয়েছে। স্পর্শকাতর এই ঘটনায় নিহত দু’ শিশুর ময়নাতদন্ত রির্পোট পাওয়া গেলে বিষয়টি আরো পরিস্কার হবে’।
তিনি বলেন, ‘ ময়নাতদন্ত পাওয়ার পর আমরা দ্রুত অভিযোগ দিয়ে দিবো এবং অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হবে’।
এদিকে, রাতে সদর থানা পুলিশ স্মৃতি জুয়েলার্সের মালিক পলাশকে আটক করেছে। পলাশ লাকি আক্তারের কাছ থেকে মেঘলা ও মালিহার স্বর্ণগুলো কিনেছিল।
অন্যদিকে, নিহত দু’ শিশুর মধ্যে মালিহাকে ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার বিকেলে নামাজে জানাজা শেষে স্থানীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। মেঘলার লাশ রাখা হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালের হীমঘরে। তার প্রবাসী পিতা ফিরে এলে তাকে দাফন করা হবে বলে পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১৫-০২-১৭
from Chapainawabganjnews http://ift.tt/2lLj9ZY
February 15, 2017 at 10:52PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন