বিশ্বনাথ ( সিলেট ) প্রতিনিধি :: সিলেটের ওসমানীনগরে উপজেলা নির্বাচনের ডামাডোল এখন তুঙ্গে। আগামী ৬মার্চ অনুষ্ঠিতব্য ওই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের এখন ঘুমহীন অবস্থা। কার চাইতে কে বেশি প্রচারণা চালাবেন, সেই প্রতিযোগীতাই চলছে এখন প্রার্থীদের মধ্যে। নবগঠিত সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের প্রথমবারের মতো নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে গত বৃহস্পতিবার ১৩ প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান পদে আতাউর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ফেরদৌস খান ও দিলদার আলী এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মুক্তা পারভীন,বিএনপি মনোনিত চেয়ারম্যান পদে ময়নুল হক চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান পদে গয়াস মিয়া ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মুসলিমা আক্তার চৌধুরী এবং জাপা থেকে চেয়ারম্যান পদে শিব্বির আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান পদে জাবের আহমদ মনোনয়ন দাখিল করেছেন। এছাড়া চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আখতারুজ্জামান চৌধুরী জগলু, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সৈয়দ আকামত আলী মনোনয়ন দাখিল করেছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন শারমিন আক্তার ও হুছনা বেগম।
তবে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আখতারুজ্জামান চৌধুরী জগলু দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাখ্যান করে নাগরিক কমিটির ব্যানারে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় দলীয় ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতা ফেরদৌস খান, উপজেলা যুবলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক দিলাদার আলী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন। কিন্তু শুক্রবার চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ৭ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। গত সোমবার তিন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষনা করা হয়েছে। তারা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আতাউর রহমান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সতন্ত্র শারমিন আক্তার, হুসনা বেগম। নির্বাচনে নিজের বিজয় নিশ্চিত করতে প্রার্থীরা ভোরে ঘুম থেকে ওঠে শুরু করে মধ্য রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ধর্ণা দিচ্ছেন।
একের পর এক গণসংযোগ আর উঠান বৈঠক করে একেকজন প্রার্থী কান্ত হয়ে পড়লেও থেমে থাকছে না তাঁদের প্রচার-প্রচারণা। কান্তমুখে হাসি ফুটিয়ে মানুষের সঙ্গে হ্যান্ডশেক, কোলাকোলি চালিয়ে যান তারা। অন্যদিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চায়ের টেবিল এখন নির্বাচনী আলোচনায় ঝড় বইছে। বিগত দুই দিন এলাকায় সকালের প্রচন্ড কুয়াশা পরলেও প্রার্থীরা কুয়াশকে উপেক্ষা করে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে যেতে দেখা যায়। উপজেলার হাট-বাজারগুলোর চায়ের টেবিলেই এখন ভোটের হিসাব-নিকাশ চলছে বলে দেখা গেছে। তবে এখানে আওয়ামীলীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আতাউর রহমান ও বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ময়নুল হক চৌধুরীর মধ্যে মূল লড়াই হবে বলে সাধারণ ভোটারা মনে করছেন। তবে শেষ মূহুর্তে এচিত্র পাল্টা যেতে পারে এমটাই ধারনা করছেন একাধিক সচেতন ভোটাররা।
মঙ্গলবার উপজেলার প্রধান বানিজ্যিক প্রানকেন্দ্র গোয়ালাবাজারসহ সরেজমিনে বিভিন্ন হাই বাজারে গিয়ে দেখা যায়, চায়ের দোকান থেকে শুরু করে প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেই আসন্ন উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। নির্বাচনের প্রার্থীদের ব্যাক্তিগত বিভিন্ন দিক নিয়েও চলছে ভিন্ন ভিন্ন মন্তব্য। চেয়ারম্যান পদে আতাউর রহমান ও ময়নুল হক চৌধুরী ওই দুই প্রার্থীকে নিয়ে সব চেয়ে বেশি আলোচনায় স্থান পাচ্ছে উপজেলার সবর্ত্র। এ নির্বাচনে তাদের মধ্যে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই হবে বলে ভোটাদের সাথে কথা বলে জানাযায়। তবে কে হবেন উপজেলার প্রথম অভিভাবক তার জন্য আগামী ৬ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে সকলকেই।
উপজেলার গোয়ালা বাজার চায়ের দোকান মালিক নিপেন্দ্র কুমার বলেন গত এক সপ্তাহ থেকে প্রায় সকল ধরনের ক্রেতারাই বাজারে এসে চা দোকানে বসে চা খেতে খেতে নির্বাচন আসন্ন উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত থাকেন। প্রার্থী নিয়ে সাধারণ মানুষদের মধ্যে তর্ক-বির্তক হতে দেখা যায়।
উপজেলার কালনিরচর গ্রামের ভোটার রহিম মিয়া বলেন, প্রথম বারের মতো উপজেলা নির্বাচন হওয়া এলাকায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন জমে উঠেছে। প্রার্থীদের নিয়ে এলাকাবাসি এখন থেকে হিসাব-নিকাশ শুরু করছেন।
উপজেলার মজলিস পুর গ্রামের রায়হান আহমদ জানান, এলাকার সবর্ত্রই এখন চলছে ভোটের ঝড়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হচ্ছে নির্বাচনী আলোচনা।
এলাকার একাধিক ভোটারও জানান, এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী আতাউর রহমান ও বিএনপি প্রার্থী ময়নুল হক চৌধুরীর মধ্যে শেষ পর্যন্ত লড়াই হবে।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2l4oNmB
February 14, 2017 at 09:35PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন