হায়দরাবাদ, ১১ ফেব্রুয়ারি- ৬৪ রানে তিন উইকেট পড়ার পর প্রয়োজন ছিল একটা জুটি। দুজন ব্যাটসম্যান দাঁড়িয়ে গিয়ে ভারতীয় বোলারদের মোকাবেলা করার; কিন্তু মুমিনুলের আউট হওয়ার পর সাকিব আল হাসান যখন ব্যাট করতে নামেন, তখন উইকেটে যেন আগুন ঝরাচ্ছেন উমেশ যাদব। বলের গতি কম করেও ১৪০-এর কাছাকাছি। আউট সুইং, ইনসুইং কিংবা রিভার্স সুইং; সবই করাচ্ছেন তিনি। দিনের প্রথম ঘণ্টা উমেশ যাদবের অগ্নিঝরা বোলিং মোকাবেলা করতে হয়েছে সাকিবকে। এ সময় বারবার পরাস্ত হতেও দেখা গেছে তাকে। কিংবা যে শটগুলো খেলেছেন, সেগুলো ছিল খুবই বিপজ্জনক। যে কোনো সময় আউট হয়ে যেতে পারতেন তিনি। দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাকিব আল হাসানের কাছে জিজ্ঞাসা করা হলো উমেশ যাদবের বোলিং সম্পর্কে। সাকিব স্বীকার করলেন ক্যারিয়ারে এত কঠিন কোনো স্পেলের মোকাবেলা করেননি। বাংলাদেশ দলের এই অলরাউন্ডারের মন্তব্য, অবশ্যই সে (উমেষ যাদব) দারুণ বোলিং করেছে। আমার মনে হয়, আমি ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা স্পেলের মুখোমুখি হলাম। দুই দিকেই সে যেভাবে বল মুভ করাচ্ছিল, তা সত্যিই অসাধারণ ছিল। তাকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। আমার মনে হয় ওই সময়ে আমার ইতিবাচক থাকার দরকার ছিল। মারার বল থাকলে মারা যেত। তবে বাকি বলগুলো সাবধানতার সাথে খেলা দরকার ছিল। বল মুভ করাচ্ছিলেন উমেশ যাদব। আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আউট হলেন ইশান্ত শর্মার বলে। তবে সাকিব স্বীকার করলেন, ওই সময়টায় পেসারদের বল সত্যিই খেলা কঠিন ছিল। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ টিকতে পারেননি, তিনি পেরেছিলেন। সাকিব বলেন, আসলে রিয়াদ ভাই যখন আউট হয়, ওই সময়ে বলটা অনেক মুভ করছিল এবং ব্যাটসম্যানদের ওই সময়টা কঠিনও ছিল টিকে থাকার জন্য। আমার ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে আমি অনেক ভাগ্যবান ছিলাম। আমি টিকে থাকতে পেরেছি। কিন্তু উনি পারেননি। তবে এ ক্ষেত্রে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কোনো দোষ দেখছেন না সাকিব। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, সবাই চায় দলের জন্য ভূমিকা রাখতে। সেটাই রাখার চেষ্টা করেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তিনি বলেন, সবাই কিন্তু দলের জন্য কন্ট্রিবিউট করার জন্যই খেলে, চেষ্টাও করে; কিন্তু মাঝে মাঝে হয়, মাঝে মাঝে হয় না। একটা দলে আমরা ১১জন খেলি, সবারই দায়িত্ব আছে। কেউ প্রত্যাশা পুরোটা পূরণ করতে পারবে, কেউ পারবে না। যার সুযোগ আসবে, সে চেষ্টা করবে যেন পুরোটা পূরণ করতে পারে। আবারও উমেশ যাদব প্রসঙ্গ। আবারও সাকিব প্রশংসা করলেন কেকেআরে তার সতীর্থের। তিনি বলেন, পিচে আসলে তেমন কিছুই ছিল না। যেহেতু আমরা একসঙ্গে একই দলে খেলি। একে অপরের সম্পর্কে জানি। তবুও সে দুর্দান্ত বল করেছে। আমি শুরুতে বলেছি, আমার ক্যারিয়ারের সেরা একটা স্পেল পার করেছি ওই সময়ে। যেভাবে ও বল দুইদিকে মুভ করাচ্ছিল। কিছু বল ছিল আনপ্লেবল। আমার পক্ষে যেটা করার যা ছিল, কিছু বল আমি মারবো, যেগুলো পাইনি। ওই সময় আমাকে একটু ভাগ্যের উপরও বিশ্বাস করতে হয়েছে। আমি মিস করবো; কিন্তু ভড়কে যাবো না। আমি ভাগ্যবান ওই রকম একটা স্পেলে টিকে থাকতে পেরেছি। আগামীকাল নতুন দিন। নতুন করে শুরু করতে চান সাকিব। সে ক্ষেত্রে উইকেট কোনো সমস্যা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি জানিয়ে দিলেন, এত কঠিন নয়। এখনও উইকেট ভালো আছে। সাকিব বলেন, আমি যত দূর জানি ভারতের উইকেটে স্পিনারদের যেমন সাহায্য থাকে। তেমনটা এখনও দেখা যাচ্ছে না। পেস বলও আমার মনে হয় না ওই একটা স্পেল ছাড়া ভালো হয়েছে। অবশ্যই তারা খুব ভালো বোলিং করেছে; কিন্তু ওইরকম একটা স্পেল ছাড়া আমরা বাকি সময়গুলো খুব ভালো ভাবেই কাটিয়ে নিতে পেরেছি। এখনো উইকেটটা ভালো আছে। কালকে নতুন একটা উইকেট, নতুন দিন পিচটা কেমন থাকে সেটা একটা ব্যাপার। সাকিব মনে করেন, এখনও ভারত এগিয়ে আছে। এ কারণে আগামীকাল প্রথম সেশনটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের জন্য। প্রথম সেশনে ১০০ কিংবা ১২০ রান করতে পারলে বাংলাদেশ অন্তত ফলো অন থেকে বেঁছে যাবে। সাকিব বলেন, অবশ্যই ভারত এগিয়ে আছে। আমাদের অবশ্যই ভালো খেলতে হবে। বিশেষ করে কালকের প্রথম সেশনের প্রথম দুই ঘণ্টা ভালো খেলতে হবে। আমরা এখানে কেমন খেলি এটাই মনে হয় বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কোনো উইকেট না হারিয়ে যদি ১০০ বা ১২০ রান করতে পারি, তাহলে ভালো অবস্থায় থাকবো। তবে আমরা এখনও ম্যাচ থেকে অনেক দূরে। আর/১০:১৪/১১ ফেব্রুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2kDZuJM
February 12, 2017 at 04:19AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন