ইয়েমেনে ১৫ বছর বয়সী কিশোর মুস্তফার বাবা দেশটির সরকার ও হুতি বিদ্রোহীদের মধ্যকার সংঘর্ষে নিহত হয়। এরপর তাকে বাঁচার জন্যে ভিক্ষার মতো নিকৃষ্ট পেশা বেছে নিতে হয়েছে।
ইয়েমেনের রাজধানীর রাস্তাগুলোতে প্রতিদিন মুস্তফার মতো অসংখ্য শিশুকে নিজের ও ভাইবোনদের ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে ভিক্ষা করতে হচ্ছে। খবর এএফপি’র।
২০১৫ সালে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে অনেক শিশু বাবা-মা দুজনকেই আবার কেউ কেউ একজনকে হারিয়েছে। যুদ্ধের কারণে দেশটিতে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
এছাড়া যুদ্ধের কারণে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন কমেছে। তাই যেসব শিশুর বাবা-মা দুজনেই বেঁচে আছে, তারাও পরিবারকে সাহায্যের জন্যে ভিক্ষা করছে।
দু’বছর আগে উত্তরাঞ্চলীয় হারাদ শহরে মুস্তফার বাবা মারা যাবার পর এই কিশোর তার মা ও তিন ভাইয়ের সঙ্গে রাজধানীতে চলে আসে।
মুস্তফা বলে, ‘আমি বহু চেষ্টা করেও একটি কাজ যোগাড় করতে পারিনি।’
দিনে পাঁচ মার্কিন ডলারের বেশি ভিক্ষা পায় না উল্লেখ করে হতভাগ্য শিশুটি জানায়, আমাদের সব খাবার শেষ হয়ে গেলে ক্ষুধার জ্বালায় টিকতে না পেরে আমরা সানার রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করতে শুরু করি।
পাশের আট বছর বয়সী শিশু আবির অর্থের আশায় এক গাড়ি থেকে অন্য গাড়ির আরোহীদের কাছে ভিক্ষা চাইছে। হারিয়ে যাবার ভয়ে মেয়েটি তার ছোট ভাই আব্দুল রহমানকে তার সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছে।
হতভাগ্য এই শিশুটি জানায়, ‘আমাদের খাবার মতো কিছুই নেই। তাই আমরা খাবার বা অর্থ পাওয়ার আশায় রাস্তায় নেমে ভিক্ষা করছি।’
জীর্ণ দেহ ও মলিন চেহারার শিশুগুলো মসজিদ ও রেস্তোরাঁর বাইরে ভিক্ষার আশায় অপেক্ষা করছে।
ইয়েমেনের এই গৃহযুদ্ধ দেশটিতে ভয়াবহ মনবিক বিপর্যয় ডেকে এনেছে। ২০১৫ সালের মার্চ মাসে দেশটির সরকারের সহায়তায় সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট সামরিক আগ্রাসন শুরু করার পর থেকে পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করেছে।
এ যুদ্ধে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৪শ’ শিশুসহ সাত হাজার ৪শ’র বেশি লোক নিহত হয়েছে বলে জাতিসংঘ বলেছে।
এই যুদ্ধে হতাহত ছাড়াও ত্রিশ লাখ ইয়েমেনি বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে। দেশটিতে কয়েক লাখ মানুষের জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য সহায়তার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
from মধ্যপ্রাচ্য ও দূরপ্রাচ্য – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2k6kg5W
February 09, 2017 at 04:53PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন