বিশ্বনাথে শিক্ষক পেটানোর ঘটনায় আ.লীগ নেতাকে নিয়ে তোলপাড়!

879452

মোঃ আবুল কাশেম,বিশ্বনাথ ( সিলেট ) প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথে প্রগতি উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক পেটানোর ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ফুঁসে উঠেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেইসবুকেও এনিয়ে পক্ষ-বিপক্ষে লেখা-লেখি অব্যাহত রয়েছে। বিশ্বনাথের সর্বত্রই এনিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। আ.লীগের দুটি পক্ষের পাল্টা-পাল্টি বক্তব্যে পাওয়া গেছে।

এদিকে, যুক্তরাজ্য আ.লীগের যুগ্ম-সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান বলয় বিশ্বনাথ আ.লীগের গ্রুপ বৃহস্পতিবার রাতে গণমাধ্যমে এক বিবৃতিত্বে জানানো হয়, উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের বিশঘর গ্রামের মৃত ওয়াহিদ আলীর পুত্র নুরুল ইসলাম উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের কোনো শাখার পদধারী নেতা নয়। সে একজন কুখ্যাত চোরাচালানী। প্রগতি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও লাইবেব্ররিয়ান আবুল বাহারকে মারপিট ও জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেয়ার ঘটনায় তারা তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ ও দায়ীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতার দাবি জানান।

অপরদিকে, সিলেট জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী বলয় বিশ্বনাথ আ.লীগের অপর গ্রুপের নেতারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে নুরুল ইসলামকে আ.লীগের কর্ণধার উল্লেখ করেন। নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে উদ্দ্যেশমুলক অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেন। শিক্ষক নির্যাতনকারী নুরুল ইসলামকে নিয়ে উপজেলা আ.লীগের দুটি বলয় পক্ষ-বিপক্ষে শক্তি অবস্থানে রয়েছে।

জানাগেছে, গত মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার প্রগতি উচ্চ বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে গাইড বই রাখা নিয়ে প্রধান শিক্ষক ফারুক ইকবাল ও সহকারী শিক্ষক আবুল বাহারের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। সহকারী শিক্ষক আবুল বাহার প্রধান শিক্ষককে মারধর করেছেন এমন সংবাদে সৌদিআরব প্রবাসী, আ.লীগ নেতা নুরুল ইসলাম প্রধান শিক্ষকের পক্ষ নিয়ে শিক্ষক আবুল বাহারকে কিল, ঘুষি ও থাপ্পড় মারেন। পর দিন বুধবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে স্মারকলিপি দেন লাঞ্ছিত শিক্ষক আবুল বাহার। তিনি অভিযোগ করেন, পেটানোর পরও

জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে তার স্বাক্ষর নিয়েছেন ওই প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম।
গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলাম কর্তৃক শিক্ষক আবুল বাহারকে পেটানোর ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনাসহ সর্বমহলে ক্ষোভ আর অসস্তোষ বিরাজ করছিল। আওয়ামী লীগ নেতার শাস্তি ও প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ চেয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে। সকালে বিক্ষোভ মিছিল ও বিকেলে ইউএনও বরাবরে স্মারকলিপি দেয় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

এব্যাপারে আনোয়ারুজ্জামান বলয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক এইচ এম ফিরোজ আলী  বলেন, বাবুল আখতার একজন কুখ্যাত দালাল। দালালী করে আজ সে লাখপতি হয়েছে। নুরুল ইসলাম একজন চোরাচালানী। তার সঙ্গে বাবুল আখতারের সুসর্ম্পক রয়েছে। দালালদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে বিশ্বনাথ আওয়ামী লীগের সুনাম নষ্ট করার পায়তারা করা হচ্ছে। সেটা আমরা হতে দেবনা।

শফিকুর রহমান চৌধুরী বলয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আখতার  বলেন, যারা আওয়ামী লীগ দাবি করে বিবৃতি দিয়েছেন, তারা অনেক আগেই আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে দল ত্যাগ করেছেন।
তিনি বলেন, নুরুল ইসলাম আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিত প্রাণ। তিনি সমাজের উন্নয়নে অগ্রনী ভূমিকা পালন করছেন। নুরুল ইসলাম বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্ব পালন করছেন। ফিরোজ আলী একজন চোর পরিবারের সন্তান। তার বাপ-দাদা-ভাই-বাতিজা এলাকার কুখ্যাত চোর হিসেবে পরিচিত। ফিরোজ আলী একজন প্রতারক, সে ফিরোজ আলী নামে সরকারি চাকরী করে, আর ছদ্ম নাম এইচ এম ফিরোজ আলী নামে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে।



from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2jFDRcZ

February 03, 2017 at 08:54PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top