ঢাকা, ০৩ ফেব্রুয়ারি- চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সাথে শাহরিয়ার ইসলাম শাওন (২৩) এর সঙ্গে তার বিবাহ হয়েছিল। শাওন স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। মামলায় আনা অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ করে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার সিএমএম আদালতে এ প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক সোহরাব মিয়া। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই বিয়ে টিকেছিল মাত্র মাসখানেক। বিয়ের মাসখানেকের মধ্যে বাদী শারমিন আক্তার নিপা (মাহি) চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করলে বিবাদীর (শাওন) সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। ফলে তাঁরা আলাদাভাবে বসবাস শুরু করেন। পরে উভয় পক্ষের সম্মতিতে খোলা তালাক এর মাধ্যমে (বিচ্ছেদ) কার্যকর হয় বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়। মাহির সঙ্গে শাওনের বিয়ের ওই কাবিন নামাসহ কাজীর রেজিস্টার জব্দ করা হয়েছে। আরও বলা হয়, মাহির দায়ের করা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের এ মামলার তদন্ত কালে অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য মাহির সাথে যোগাযোগ করলেও দীর্ঘ ছয়মাসে তিনি কোন সহযোগীতা করেননি। এছাড়া, মাহির সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের পক্ষে যথেষ্ট সাক্ষ্য প্রমান পাওয়া যায়নি। তাকে অব্যাহতি দেয়া হোক। আদালতে পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপপরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, এ মামলাটি ঢাকার সাইবার অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান। আগামি ধার্য তারিখ আগামি ৭ মার্চ ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হবে। নিয়ম অনুযায়ী ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদনটি উপস্থাপনের পর মাহিকে এ মামলায় হাজির হওয়ার জন্য ডাকা হবে। মামলায় মাহি নারাজি দিতে পাবেন। চলচ্চিত্র জগতে মাহিয়া মাহি নামে পরিচিত হলেও তার প্রকৃত নাম শারমিন আক্তার নীপা। গত বছরের ২৫মে সিলেটের ব্যবসায়ী পারভেজ মাহমুদ অপুর সঙ্গে সংসার শুরু বাঁধেন তিনি। পরের দিন থেকেই কয়েকটি গণমাধ্যমে মাহির একাধিক বিয়ে-সংক্রান্ত কিছু ছবি প্রকাশ হতে থাকে। ছবি প্রকাশের পর থেকে আলোচনার ঝড় ওঠে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। বিষয়টি নজরে এলে নায়িকা মাহি বলেন, তিনি আইনের আশ্রয় নেবেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আমার সংসার ভাঙার জন্য কেউ আমার পিছু লেগেছে। গত বছরের ২৭ মে শাওনের বিরুদ্ধে তথ্যও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭(২) ধারার অভিযোগ এনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখায় মামলা করেন নায়িকা মাহি। মামলায় বলেন, আমার পূর্বপরিচিত (বন্ধু) শাহরিয়ার ইসলাম শাওন, পিতা- নজরুল ইসলাম, মাতা- শিউলি আক্তার, বাসা- ক/১৩, দক্ষিণ বাড্ডা, গুলশান, ঢাকা। তার কাছে থাকা আমাদের কিছু অন্তরঙ্গ স্থিরচিত্র, কয়েকটি অনলাইন পোর্টাল এবং ফেসবুক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে তার সাথে তার বন্ধু হাসান, আল আমিন, খাদেমুল এবং তার খালাতো ভাই রেজওয়ান জড়িত রয়েছে বলে আমার ধারণা। উলেখ্য যে, গত ২৫/০৫/২০১৬ খ্রি. তারিখ অন্যত্র আমার বিবাহ সম্পাদিত হয়। এখনো বিবাহ-পরবর্তী অনুষ্ঠান চলছে। এই অবস্থায় আমাদের দাম্পত্য সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য এবং সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য তারা এসব করছে। এ ঘটনার সঙ্গে শাওন ছাড়াও তার বন্ধু হাসান, আল আমীন, খাদেমুল এবং শাওনের খালাত ভাই রেজওয়ান জড়িত বলে তার ধারণা। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ওইদিনই শাওনকে দক্ষিন বাড্ডার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় তার ব্যবহৃত কম্পিউটারটি জব্দ করা হয়্। গ্রেপ্তারের পর শাওনকে দুই দিন রিমান্ডে নেয়া হয়। এরপর শাওনকে কারাগারে পাঠানো হয়। নথি সুত্রে জানা যায়, গত বছরের ৫ জুন মাহির বাবা ও শাওনের বাবার মধ্যে একটি আপসনামা হয়। ওই দিন বেলা ৩টার দিকে মাহির উত্তরার বাসায় উভয় পরিবারের লোকজনের উপস্থিতিতে ৩০০ টাকার জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ওই আপসনামা স্বাক্ষরিত হয়। আপসনামায় স্বাক্ষর করেন মাহির বাবা আবু বকর ও শাওনের বাবা নজরুল ইসলাম। সাক্ষী ছিলেন শাওনের বড় চাচা আবুল হাশেম ও ছোট চাচা মাহমুদুল হাসান। আপসনামাটি মো. ইকবাল হোসেনকে দিয়ে নোটারি পাবলিক করা হয়। চেম্বার দেখানো হয়েছে- হলরুম-১, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। নোটারি ক্রমিক নম্বর-৩৩ এবং তারিখ ৫/৬/২০১৬। ওই আপোষনামা দাখিলের পর ওইদিন সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে দাখিলের পর ১৬ জুন ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম শামসুল আলম শাওনকে জামিন দেন। শাওনের আইনজীবী মো. বেলাল হোসেন বলেন, রাজধানীর বাড্ডার কাজি অফিসের কাজি মোহাম্মাদ সালাহউদ্দিন এই বিয়ে পড়ান। ওই কাবিননামায় দেনমোহর ধরা হয় চার লাখ টাকা। এর মধ্যে দুই লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। কাবিননামায় মাহির জন্ম তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে, ২৭ অক্টোবর ১৯৯৪ ও শাহরিয়ারের ১৫ ফেব্রুয়ারী ১৯৯৪। বিয়েতে মাহির উকিল হিসেবে ছিলেন মো. হারুন অর রশিদ নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেণ, মাহির সঙ্গে শাওনের বিয়ে হয়েছিল। তা বলবৎ থাকা অবস্থাতেই মাহি অন্য একজনকে বিয়ে করেন। তথ্য গোপন করে মাহি ফৌজদারি অপরাধ করেছেন। তার বিরুদ্ধেও দন্ডবিধির ৪৯৫ ধারায় মামলা হতে পারে। এফ/০৭:৫০/০৩ ফেব্রুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2k6XfhI
February 03, 2017 at 01:52PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top