খাজুরাহো, ২১ ফেব্রুয়ারি- বসন্তে যখন স্বয়ং প্রকৃতি নেচে উঠেছে, ভারতবর্ষ কেন থেমে থাকবে? উৎসব-ঐতিহ্যের দেশ ভারত নেচে উঠেছে শাস্ত্রীয় নৃত্যের তালে। মধ্যপ্রদেশের জেলা খাজুরাহোর হাজার বছরের পুরোনো মন্দিরের মুখে পাতা মঞ্চে নাচছেন বিভিন্ন দেশ থেকে আসা খ্যাতিমান শাস্ত্রীয় নৃত্যশিল্পীরা। ভারত ও বাংলাদেশ ছাড়া এই উৎসবে যোগ দিয়েছেন অন্তত ২০টি দেশের শিল্পী, সংস্কৃতিপ্রেমী ও পর্যটকেরা। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় খাজুরাহোতে শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী শাস্ত্রীয় নৃত্য উৎসব খাজুরাহো ড্যান্স ফেস্টিভ্যাল। ঐতিহাসিক শহরটিতে উৎসবের ৪৩তম আসরের শুরুতেই ছিল আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পী অনুজ মিশ্রর কত্থক। প্রথম সন্ধ্যায় ছিল কলকাতার সঞ্চিতা ভট্টাচার্যের ওডিশি ও গুড়গাঁওয়ের জয়শ্রী আচার্যের কত্থক। মধ্যপ্রদেশের ছাতারপুর জেলার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে আগামী ছয় দিন থাকবে ভরতনাট্যম, ছৌ, মোহিনীত্তম, কুচিপুড়ি ও কথাকলি নাচ। মন্দিরের গা ঘেঁষে খোলা মাঠে আয়োজন করা হয়েছে এই উৎসবের। সাজানো হয়েছে পৌরাণিক সাজে। এ বছর উৎসবে অতিথি রাষ্ট্র হিসেবে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ। বিকেলে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করে উৎসবস্থল ঘুরে আসেন বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক সংগঠন সাধনার শিল্পীরা। শোভাযাত্রায় ছিল রণ পা, বাউল, ঢোল, লাঠিয়াল, রিকশার রেপ্লিকা, বর-কনেসহ বাংলাদেশের নানান ঐতিহ্য। পরে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের মঞ্চে রাইবেশে লাঠিখেলা দিয়ে শুরু হয় পরিবেশনা। মূল উৎসব শুরু হতে বিলম্ব হওয়ায় প্যাভিলিয়নে ভিড় করে পরিবেশনা উপভোগ করেন পর্যটকেরা। আজ মঙ্গলবার বাউল শফি মণ্ডলের গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করবেন বাংলাদেশের শিল্পীরা। পাঁচ দিন বিকেলে রবীন্দ্রসংগীত ও নজরুলসংগীতের সঙ্গে নৃত্য, কত্থক ও মণিপুরি নৃত্য পরিবেশন করবেন তাঁরা। উৎসবের শেষ দিন মূল মঞ্চে থাকবে কল্পতরু বাংলাদেশ-এর শিল্পী অমিত চৌধুরীর পরিচালনায় ভরতনাট্যম পরিবেশনা। বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে তুলে ধরা হয়েছে ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশকে। সেখানে প্রদর্শন করা হচ্ছে ঢাকাই মসলিন, নকশি কাঁথা, মৃৎপাত্র, পুতুল, নকশা, পটসহ দেশের ঐতিহ্যবাহী সব পণ্য। উৎসবের আয়োজক প্রতিষ্ঠান ভোপালের ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ একাডেমির সহাকারী পরিচালক রাহুল রাস্তগি জানান, গত বছর বাংলাদেশের মণিপুরি নাচ মুগ্ধ করেছিল তাঁদের। সে জন্যই এবার অতিথি দেশ হিসেবে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। রাহুল রাস্তগি বলেন, প্রতিবছর এই উৎসবকে আরও বর্ণিল ও সমৃদ্ধ করা চেষ্টা থাকে। এই যেমন বাংলাদেশ তাদের প্যাভিলিয়নে নিজস্ব ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধ সংস্কৃতিকে তুলে ধরছে। নৃত্য উৎসব উপলক্ষে রয়েছে চিত্র প্রদর্শনী, নাচের আন্তর্জাতিক বাজার নিয়ে সংলাপ, কবিতা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। চিত্র প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে বিভিন্ন দেশের প্রায় সাড়ে ৫০০ শিল্পীর আঁকা ও প্রস্তুতকৃত বিভিন্ন মাধ্যমের চিত্র ও শিল্পকর্ম। আর/১৭:১৪/২১ ফেব্রুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2m7NMpv
February 22, 2017 at 01:10AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top