ঢাকা, ১৩ মার্চ- ১৯৮০ সালের দিকে পোস্তগোলায় মোটর পার্টসের দোকান দিয়েছিলেন। নিজের একটা ফ্যাক্টরি ছিল। সেখানেইকিছু পার্টস তৈরি করা হতো। কিন্তুই এর বাইরে কিন্তু মন পড়ে থাকতো তার চলচ্চিত্রে। চলে যান মার্শাল আর্ট শিখতে। ভর্তি হন ঢাকার টিপু সুলতান রোডের ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলমের ক্লাবে। ১৯৮৩ সালে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলমের সাথে সখ্য তৈরি হয়ে যায়। তিনিই নিয়ে আসেন চলচ্চিত্রে। ১৯৮৪ সালে তালাচাবি পয়সা পয়সা দশ গ্রামের মোড়ল ছবিতে অভিনপয়ের মাধ্যমে রাতারাতি পরিচিত হয়ে ওঠেন। এরপরে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বলছিলাম বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় খল অভিনেতা নিরঞ্জনের কথা। সম্প্রতি নিরঞ্জনের সাথে কথা হলো নেহাল দত্ত পরিচালিত গাদ্দার ছবির উত্তরার সেটে। সেখানেই কথা হলো, স্মরণ করলেন বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালি দিনগুলোর কথা। বাংলা চলচ্চিত্রে ইতোমধ্যে কাজ করেছেন প্রায় ৭০০ ছবিতে। বিটিভিসহ টেলিভিশন নাটকেও কাজ করেছেন ৩০ থেকে ৩৫টিতে। বর্তমানে গাদ্দার ছবিতে অভিনয় করছেন। জানালেন নেহাল দত্তের চোখে তিনি বেশ মানানসই খল অভিনেতা। তাই অঙ্গারের পর ডাক পড়ে গাদ্দারেও। সবচেয়ে কঠিন দৃশ্যে অভিনয়ের প্রশ্ন আসলেই কোন ছবির দৃশ্যের কথা মনে পড়ে? নিরঞ্জন সময় না নিয়েই বলে গেলেন। আব্দুল্লাহ আল মামুনের দমকা ছবির সেটে ফেরদৌসী মজুমদার ম্যাডামের শাড়ি খুলে নিতে হয়। একবার-দুইবার এভাবে ১১ বার চেষ্টা করলাম। কিন্তু পারলাম না। কীভাবে পারবো? ম্যাডামকে আমি কীরকম শ্রদ্ধা করি তা তো বলতে পারি না। আমি উনাকে দেবীর মতো শ্রদ্ধা করি। ১২ বারের বেলায় ম্যাডাম আমাকে রাগ দেখালেন, বললেন নিরঞ্জন তোমার জন্য দেরি হয়ে যাচ্ছে। ফাইনালি আমি দৃশ্যটা ওকে করেতে পেরেছিলাম। সবচেয়ে তৃপ্তি পেয়েছেন কোন ছবিতে কাজ করে? নিরঞ্জন বলে গেলেন পরপর কয়েকটা ছবির নাম তারপরে একটি নামে এসে আটকে গেলেন। ছবির নাম দানব সন্তান। পরিচালনা করেছেন শহীদুল ইসলাম খোকন। নিরঞ্জন এই ছবিতে আমি মূল চরিত্রে অভিনয় করেছি। এটা আমার বলা যায় একোটা তৃপ্তিপূর্ণ কাজ। যদিও আমি সবকাজই আনন্দের সাথে করি। দানব সন্তান একটি বেশিই হয়তো। আরেকটা ছবির কথা বলি, পপগুরু আজম খানের সাথে অভিনয় করার সুযোগ হয়েছে। ছবির নাম গড ফাদার, সেই ছবিতে আমি প্রথম গড ফাদার থাকি। আমাকে মেরে ফেলা হয়। শেষ গড ফাদার হন আজম খান। বাংলা চলচ্চিত্রের অজস্র স্মৃতির কথা মনে পড়ে। এখনো ভালোবাসার টানেই চলচ্চিত্রে পড়ে রয়েছেন। বললেন, একবার এয়ারপোর্টে রোডে হাইজ্যাক ছবির শুটিং করছি। শট দিতে গিয়ে খেয়াল করলাম হাজার হাজার মানুষ রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে আমার অভিনয় দেখছে। আমার মনে হলো, এতো মানুষ যদি আমার অভিনয় দেখতে আগ্রহী হয় তাহলে কীভাবে অভিনয় ছেড়ে চলে যাই? আমি বহুবার বিদেশে যাওয়ার অফার পেয়েছি, সুযোগ পেয়েছি বিদেশে গিয়ে বসবাসের কিন্তু কখনো যাওয়ার আগ্রহ তৈরি হয়নি। নিরঞ্জন বলেন, আমি যদি বিদেশেই চলে যেতাম তাহলে কী হতো? হয়তো আজ আমার পরিবারকে অনেক স্বচ্ছল রাখতে পারতাম। আমার ছেলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে তাকে প্রাইভেট ইনিভার্সিটিতে পড়াতে পারতাম। কিন্তু আমার তো উচ্চাভিলাষ ছিল না। বিদেশে প্রচুর টাকা আয় করতে পারতাম কিন্তু আমাকে চিনতো না, আপনিও আজ আমার ইন্টারভিউ নিতে আসছেন এটাই তো আমার জন্য ভালোবাসা। পর্দায় ভিলেন হলেও বাস্তবের নিরঞ্জন একেবারে ভিন্ন। নিরঞ্জন থাকেন ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জের মেকাইল নামক গ্রামে। সেখান থেকেই শট দিতে ঢাকায় চলে আসেন। দুই ছেলে এক মেয়ে। ছেলে বড়তা অনার্সে পড়ে। ছোট ছেলে ক্লাস সেভেন আর মেয়েটা এবার প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা দেবে। সংসারে অভাব অনটনের বিষয়তো আছে। তারপরেও পরিতৃপ্ত তিনি ফিল্মে কাজ করে। এখনো নিয়মিত অভিনয় করে যেতে চান। আর/১৭:১৪/১৩ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2miHD8P
March 13, 2017 at 11:57PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন