নিজস্ব প্রতিবেদক ● কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র অভ্যন্তরে বিভেদ তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আঞ্জুম সুলতানা সীমা এবং বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় তাদের নিজ নিজ দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাউকে দেখা যায়নি। তবে উভয় প্রার্থীই দলে অভ্যন্তরীণ বিভেদের কথা অস্বীকার করেছেন।
জানা গেছে, কুমিল্লায় আওয়ামী লীগে আফজল-বাহার এবং বিএনপিতে ইয়াছিন-সাক্কুর বিরোধ দীর্ঘদিনের। কুসিক নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন গত ১ মার্চ দুপুর ১২টায় আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এসময় ছিলেন তার বাবা কুমিল্লার আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ আফজল খান, জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক ওমর ফারুক, আ.লীগ নেতা সাজ্জাদ হোসেন, শাহীনুল ইসলাম শাহীন ও নূর-উর রহমান মাহমুদ তানিম প্রমুখ।
মনোনয়ন জমা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আঞ্জুম সুলতানা সীমা বলেন, ‘আমাদের দলে কোনও বিভেদ নেই। আমরা সবাই নৌকার প্রশ্নে এক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকা প্রতীক দিয়ে নগরবাসীর কাছে পাঠিয়েছেন, আশা করি সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে আমাকে বিজয়ী করবেন।’
সদর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার গ্রুপের মনোনয়ন বঞ্চিত দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আরফানুল হক রিফাত বলেন, ‘সবাই তো আর মনোনয়ন পায় না। দল করলে মান-অভিমান থাকেই। তবে নৌকার প্রশ্নে আমরা এক।’ তিনি অপর পক্ষকে ইঙ্গিত দিয়ে আরও বলেন, ‘গত সংসদ নির্বাচন ও জেলা পরিষদ নির্বাচনে তারাই নৌকার বিরোধিতা করেছে।’
ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি নূর-উর রহমান মাহমুদ তানিমকে ইংগিত করে রিফাত বলেন, ‘অনেকে এখন বক্তব্য দেয় সীমার জন্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেবো। এগুলো হালকা কথা। এক সময় তারাই সীমার বাবার বিপক্ষে নির্বাচন করেছে।’
বুধবার বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীমের সামনে দলের কুমিল্লা কার্যালয়ে তানিম এ বক্তব্য রেখেছিলেন। তানিম একসময় বাহার গ্রুপ করতেন। রিফাতের বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি যখন নির্বাচন করেছি, তখন মার্কা নৌকা ছিল না। আমরা দলের জন্য পরিশ্রম করেছি, তাই কেন্দ্র আমাদের মূল্যায়ন করে। এটা তারা সহ্য করতে পারছে না।’
বাহার গ্রপের আরেক নেতা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ বলেন, ‘আমাদের প্রার্থী ছিলো, আমরা পাইনি। তবে দলের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। বাহার ভাই এমপি হওয়ায় সরাসরি কাজ করতে পারছেন না। ব্যস্ত থাকায় আমরা মনোনয়নপত্র জমার সময় থাকতে পারেননি।’
এছাড়া, বুধবার বেলা ১টার দিকে মনোনয়পত্র জমা দিয়েছেন বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু। তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক নমোস্তাক মিয়া, আবদুল আউয়াল খান, বিএনপি নেতা সৈয়দ জাহাঙ্গীর, ফজলুল হক ফজলু ও আবদুর রউফ চৌধুরী ফারুক।
নিজের দলে কোনও বিরোধ নেই উল্লেখ করে বিএনপির প্রার্থী সাক্কু বলেন, ‘আমি সদ্য বিদায়ী মেয়র। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নতুন হয়েছে। আমি প্রতিশ্রুতির ৭৫ ভাগ পূরণ করেছি। পাঁচ বছরে আমি ৩৯৫ কোটি টাকার কাজ করেছি। আমি নির্বাচিত হলে আগামীতে জলাবদ্ধতা ও যানজট নিরসনে কাজ করবো।’
তবে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিন-উর রশিদ ইয়াছিন বলেন, ‘কুমিল্লায় বিএনপিতে কোনও বিভেদ নেই।’ রসিকতার সুরে তিনি বলেন, ‘এটা ছিল আদমের (আ.) আমলে।’ মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় না থাকার বিষয়ে তার ভাষ্য, ‘আমরা দলীয় অফিসে একত্র হয়েছিলাম। নির্বাচন অফিসে পাঁচ জনের বেশি লোক যাওয়ার নিয়ম না থাকায় আমরা যাইনি।’
from Comillar Barta™ http://ift.tt/2m1jnLu
March 03, 2017 at 12:01PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন