সদর দক্ষিণে বোরো ধানে ব্লাস্টের আক্রমণ, দিশেহারা কৃষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক ● কুমিল্লার সদর দক্ষিনে হঠাৎ করে বোরো ধান ক্ষেতে ব্যাপক হারে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এই দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা পাশে পাচ্ছে না কৃষি কর্মকর্তাদের। কয়েকটি এলাকায় কৃষি কর্মকর্তার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের শুধু একটি ওষুধের নাম লিখে দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেছেন। সংক্রমিত ক্ষেতে এ কীটনাশক স্প্রে করেও শেষ রক্ষা পাচ্ছেন না কৃষকরা। নেক ব্লাস্ট রোগ দেখা দেওয়ায় আতংক ছড়িয়ে পড়ছে কুমিল্লার সদর দক্ষিণের কৃষকদের মাঝে।

দূর্যোগে কৃষি কর্মকর্তাদের কাছে না পাওয়ার অভিযোগ এখানকার কৃষকদের। “ক্ষেতের ধান সব শেষ হয়ে গেছে। আমরা অসহায়”- এই আকুতি সদর দক্ষিণ উপজেলার বলিপদুয়া গ্রামের মোজাম্মেল হোসেন। তার মতো সেখানকার আরও কয়েকজন কৃষক বলেন, নেক ব্লাস্ট এখন মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়ছে, কোন ওষুধই কাজে আসছে না। তাদের সবাই প্রায় একই সুরে বলেন, ক্ষেতে ভালো ফলন দেখে আশায় বুক বেঁধে ছিলাম। কিন্তু সে স্বপ্ন এখন ভেঙে গেছে।

এছাড়া গলিয়ারা ইউনিয়নের গোয়ালগাও এলাকার কৃষক সোনা মিয়া, আলম মিয়া, কবির হোসেন বলেন, নেক ব্লাস্টের ভয়ে তারা জমিতে ছত্রাক নাশক স্প্রে করেছেন। কিন্তু একদিন পর জমিতে গিয়ে দেখি দুই একর জমির ধান সব সাদা হয়ে গেছে। এখন সামনে শুধু অন্ধকার দেখতেছি।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বুরো ফসলের বিশেষ করে বিআর ২৮ এবং বিআর ৫৮ ধানের জমিতে এ রোগ প্রকট আকারে দেখা দিয়েছে। প্রথমে ক্ষেতে কোনো এক জায়গায় নেক ব্লাস্ট (গলা পচা) রোগ দেখা দেয় এবং পরে তা ছড়িয়ে পড়ছে। দিশেহারা কৃষকরা বাজার থেকে বিভিন্ন কোম্পানির ছত্রাক নাশক ওষুধ কিনে ধান ক্ষেতে স্প্রে করেও কোনো সুফল পাচ্ছেন না। স্প্রে করার পর এক থেকে দুই দিনের মধ্যে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ছে পুরো ক্ষেতসহ পার্শ্ববর্তী ক্ষেতে। এতে চিটা হয়ে যাচ্ছে জমির ধান। চড়া দামের কীটনাশক স্প্রে করেও আতংক কাটছে না আক্রান্ত হওয়া জমির কৃষকের।

এ বিষয়ে সদর দক্ষিণ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আইয়ুব মাহমুদ বলেন, শুনেছি কয়েকটি এলাকায় খোলপোড়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ব্লাস্ট রোগের বিষয়টি আমার জানা নেই। ক্ষতিগ্রস্থ বাগমারা দক্ষিণ ইউনিয়নের বলি পদুয়া সহ পাশ্ববর্তী গ্রামে আক্রান্ত ব্লাস্ট রোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই এলাকায় আমার কৃষি কর্মকর্তা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও কুমিল্লা জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক আলহাজ ওমর ফারুক বলেন, রোগটির বিষয়ে শুনেছি। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করতে বুধবার (আজ) সদর দক্ষিণে যাব এবং কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে এ বিষয় নিয়ে কথা বলবো।



from ComillarBarta.com http://ift.tt/2pkbkeB

April 26, 2017 at 11:07AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top