কলম্বো, ০৫ এপ্রিল- শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচের টস করতে নামার আগেই সিদ্ধান্তটা নিয়ে রেখেছিলেন। টস হওয়ার সময় জানিয়ে দিলেন, এটাই তার শেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এর কিছুক্ষণ আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও পোস্ট দিয়ে অবসরের কথা জানান বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের অনতম সেরা এই অধিনায়ক। অথচ দেশের মাটিতে হাজার সমর্থকের সামনে এই ফরম্যাটকে বিদায় বলার ইচ্ছা ছিলো মাশরাফির। কিন্তু কি এমন হলো শ্রীলঙ্কায়? যার কারণে সিরিজের মাঝেই এমন সিদ্ধান্ত? মাশরাফির ঘনিষ্ট সূত্রের খবর, অবসরের নেপথ্যের কারণ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সিদ্ধান্ত। বোর্ড চাচ্ছিলো না, ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত এই ফরম্যাটে খেলা চালিয়ে যান ৩৩ বছর বয়সী মাশরাফি। গত বছরের মার্চে ভারতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর মাশরাফি এই ফরম্যাটে আর খেলবেন না বলে গুঞ্জন উঠে। এরপর চলতি বছরের শুরুর দিকে নিউজিল্যান্ড সফরে আবারও আলোচনায় আসে বিষয়টি। ওই সফরের মাঝেই ঢাকায় বসে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন গণমাধ্যমকে জানান, টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিতে চাইছেন মাশরাফি। তবে বোর্ড সভাপতিই পরক্ষণে ঘোষণাটা বদলে দেন। নিউজিল্যান্ডে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে পরাজয়ের পর গুঞ্জন উঠেছিল, বিসিবি চায় সিনিয়রদের বাদ দিয়ে তরুণদের নিয়ে একটি দল গঠন করত। এটা মূলত কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহের চাওয়া। এর অনেক দিন আগে থেকেই কোচ বোর্ড সভাপতিকে বলে আসছিলেন, তিনি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের জন্য নতুন একটি দল গড়তে চান। এই সংস্করণের ক্রিকেটের জন্য তাই বিসিবির কাছে নতুন অধিনায়কও চেয়ে পাঠিয়েছিলেন তিনি শ্রীলঙ্কা থেকে। ওয়ানডে সিরিজের আগে মাশরাফি তাই অস্বস্তি নিয়েই যোগ দিয়েছিলেন দলের সঙ্গে। চাপ নিয়েই ওয়ানডে সিরিজ খেলেছেন মাশরাফি, নেতৃত্ব দিয়েছেন দলকে। ঘনিষ্ঠজনদের বলেছিলেন, খেলে যাবেন টি-টোয়েন্টি। কিন্তু ওয়ানডে সিরিজ শেষে কোচ আবারও বিসিবি কর্তাদের জানান, টি-টোয়েন্টি নিয়ে মাশরাফির সঙ্গে কথা বলতে। সূত্রের খবর, সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে হারার পর কলম্বোর টিম হোটেলে মাশরাফির সঙ্গে একান্ত বৈঠকে বসেন বিসিবি সভাপতি। এরপর সোমবার রাতে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান দলের সিনিয়র চার ক্রিকেটারকে ডেকে কথা বলেন। জানিয়ে দেন, তিন সংস্করণে তিন অধিনায়ক চায় বিসিবি। বিসিবি সভাপতির এই কথার পর ইঙ্গিতটা পরিষ্কার হয়ে যায় মাশরাফির সামনে। এরপরই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন মাশরাফি। মঙ্গলবার ম্যাচের আগে দুপুরেই পরিবারের সবার সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন মাশরাফি। প্রথমে সিনিয়র ক্রিকেটার ও পরে দলের সবাইকেই জানান এই সিরিজের পর আর খেলবেন না আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি। তবে মাশরাফির সামনে অনুরোধ ছিলো তিনি যেন সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের আগে ঘোষণাটি দেন। কিন্তু সেটা করেননি মাশরাফি। শঙ্কায় ছিলেন, তার আগেই না বিসিবি সভাপতি জানিয়ে দেন। ক্রিকেটে এসেছেন নিজের ইচ্ছা আর যোগ্যতায়, বিদায়ও নেবেন নিজেরই সিদ্ধান্তে। তাই নিজেই ম্যাচের টস করতে গিয়ে জানিয়ে দেন, অবসরের সিদ্ধান্ত। বিদায় বেলায় অন্তত নিজের অবসরের ঘোষণা নিজেই দিতে পেরেছেন, এটাই তার সান্ত্বনা! আর/১৭:১৪/০৫ এপ্রিল



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2p0Lj0m
April 06, 2017 at 12:49AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top