কলকাতা, ১৫ এপ্রিল- বাবা-মার সঙ্গে বেড়াতে গেল দুই বোন। অথচ বাবা-মা এবং ভাই ফিরে এলেও দুই নাবালিকার খোঁজ নেই। প্রতিবেশী এক যুবকের উদ্যোগে অবশ্য রহস্য কিছুটা ফাঁস হয়েছে। প্রতিবেশীদের আশঙ্কা, বেড়াতে যাওয়ার নাম করে নিয়ে গিয়ে উত্তর প্রদেশে মথুরায় নিজেদের বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছে বাবা-মা। ওই কিশোরীর ছোট বোনের অবশ্য খোঁজ নেই। ঘটনার জেরে জলপাইগুড়ি চাইল্ড লাইনে অভিযোগ দায়ের করেছেন সত্যপ্রিয় রায় নামে এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ির রবীন্দ্রনগর এলাকায়। জলপাইগুড়ি পুরসভা এলাকার ২ নম্বর ওয়ার্ডে থাকেন লোহার ট্রাঙ্ক তৈরির দিনমজুর নারায়ণ সরকার এবং তার স্ত্রী শ্যামলী সরকার। তাদের বড় মেয়ে (১৪) এবং ছোট মেয়ে (১৩) শহরের একটি স্কুলে যথাক্রমে নবম এবং অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছিল। ওই দম্পতির একটি ছেলেও রয়েছে। সে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। ওই দম্পতির প্রতিবেশী সত্যপ্রিয় রায় চাইল্ড লাইনে অভিযোগ করে বলেছেন, কয়েকদিন আগে সপরিবারে দিল্লি এবং মথুরায় বেড়াতে যায় ওই দম্পতি। কয়েকদিন পর ছেলে সমেত দুজন ফিরে এলেও দুই মেয়েকে তারা সঙ্গে নিয়ে আসেনি। দুই নাবালিকা কোথায় রয়েছে, এ বিষয়ে প্রতিবেশীরা বার বার প্রশ্ন করলে অসংলগ্ন জবাব দিতে থাকে ওই দম্পতি। প্রথমে তারা জানায়, মথুরায় এক পরিচিতের বাড়িতে দুজন রয়েছে। কিন্তু ফোন নম্বর চাইলে তারা তা দিতে চায়নি। প্রতিবেশীরা খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পারে, বড় মেয়ে নাবালিকা হওয়া সত্ত্বেও ভিন রাজ্যে তার বিয়ে দিয়ে দিয়েছে ওই দম্পতি। ছোট মেয়েরও খোঁজ পাওয়া যায়নি। দুই মেয়েই যেহেতু নাবালিকা, তাদের অতি সত্ত্বর বাড়িতে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার স্থানীয় কাউন্সিলর এবং চাইল্ড লাইনে অভিযোগ দায়ের করেন সত্যপ্রিয়। জলপাইগুড়ি পুরসভার ২ ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলার দুর্বা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তিনি অভিযুক্ত দম্পতির বাড়িতে গিয়ে দুই নাবালিকার খোঁজ-খবর নেন। তখনই ওই দম্পতির থেকে জোর করে মোবাইল নম্বর নিয়ে ফোন করেন দুর্বাদেবী। তখনই ওই দম্পতির বড় মেয়ে জানায়, জোর করে তার বিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিজের এক বান্ধবীকে ফোন করেও একই কথা জানিয়েছে ওই কিশোরী। মেয়েটির মা এবং বাবার বক্তব্যর বয়ানে অনেক অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে। শ্যামলী সরকার দাবি করেছে, তার মেজ মেয়ের চর্মরোগ রয়েছে। মথুরায় চিকিৎসা চলছে বলে বড় মেয়ে সমেত দুজনকেই তারা রেখে এসেছে। বিয়ে দেওয়া হয়নি। এ দিকে মেয়ের বাবা নারায়ণ সরকার জানিয়েছে, এটা ঠিকই তারা বড় মেয়ের বিয়ের সম্বন্ধ মথুরায় দেখেছেন। কিন্তু মেয়ের বিয়ে হয়নি। মেয়েকে এই মাসেই না কি আনবে বলে জানিয়েছে ওই ব্যক্তি। এ দিকে জলপাইগুড়ি চাইল্ড লাইনের ডিরেক্টর সঞ্জয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, প্রতিবেশীদের অভিযোগ পাওয়ার পর তাঁরা সরকার বাড়িতে যান খোঁজ-খবর নিতে। পরিবার দাবি করেছে, দুটি মেয়েই বাড়ি ফিরে আসবে। কিন্তু বাবা-মা দুজনই অসংলগ্ন কথা বলছে। তাই তারা অভিযোগের ভিত্তিতে আগ্রার চাইল্ড লাইনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। শনিবার লিখিতভাবে জলপাইগুড়ি চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি ও কোতোয়ালি থানার পুলিশকে এই বিষয়ে তদন্তর অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠাচ্ছেন। আর/১৭:১৪/১৫ এপ্রিল
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2oKggJH
April 16, 2017 at 12:22AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন