নিজস্ব প্রতিবেদক ● কুমিল্লা মহানগরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা সড়ক ও মহাসড়কে দাবড়ে বেড়াচ্ছে ৫ হাজারেরও অধিক নাম্বার, রুটপারমিট, ফিটনেস ও ড্রাইভিং লাইসেন্স বিহীন মোটর সাইকেল। অনটেষ্ট, প্রেস, আবেদিত লেখা নাম্বার প্লেট নিয়ে চলাচলরত অধিকাংশ অবৈধ মোটর সাইকেল অনৈতিক কাজে জড়িত রয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। হাইওয়ে পুলিশ মাঝে মধ্যে অভিযানে নামলেও লাপাত্তা হয়ে যাওয়ার কারণে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে এসব অবৈধ ক্ষুদ্রযানগুলো। ফলে সরকারও এ খাতে প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব হতে বঞ্চিত হচ্ছে। এ সব মোটর সাইকেল কুমিল্লা সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ বিভিন্ন জাতের মাদকদ্রব্য পাচার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। একটি সূত্র জানায়- কুমিল্লা ১২৫ কিলোমিটার সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিনই একাধিক অবৈধ মোটরসাইকেল কুমিল্লায় প্রবেশ করছে। এর মধ্যে পুলিশ, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীদের লাইনম্যানরা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এসব মোটর সাইকেল পাচারে সহযোগিতা করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। যার ফলে কুমিল্লার সর্বত্র থামছে না ভারতীয় মোটর সাইকেলের দৌরাত্ম্য। প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন সীমান্ত দিয়ে প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে মোটর সাইকেল আনছে চোরাকারবারিরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কুমিল্লা সীমান্তবর্তী ১২৫ কিলোমিটারের ব্রাহ্মণপাড়া, বুড়িচং, কুমিল্লা সদর, সদর দক্ষিণ ও চৌদ্দগ্রাম সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে চোরাকারবারীরা বাংলাদেশে নিয়ে আসছে। আর এসব মোরটসাইকেল কুমিল্লা মহানগর, সদর, সদর দক্ষিণ, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, নাঙ্গলকোট, চৌদ্দগ্রাম, বরুড়া, চান্দিনা, মুরাদনগর, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, দাউদকান্দি, হোমনা, তিতাসসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাপকহারে চোরাই মোটর সাইকেলের ব্যবহার বেড়েছে। ওইসব মোটর সাইকেল ব্যবহারকারিরা সরকারের নিবন্ধন ফি বাবদ রাজস্ব খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ফাঁকি দিচ্ছে। এ অঞ্চলের সড়ক পথে অন-টেস্টসহ হরেক রকম লেখা বিপুল সংখ্যক মোটর সাইকেলের ব্যবহার মারাত্মকভাবে বেড়ে যাওয়ায় কোনটি বৈধ কিংবা কোনটি চোরাই বুঝা মুশকিল। আবার প্রায় সড়কের পাশে হোটেল-রেস্তোঁরা, মার্কেট, ব্যাংক-বীমা কিংবা সরকারী-বেসরকারী অফিসের সামনে এমনকি অলি-গলিতে মোটর সাইকেল পার্কিং করে রাখায় জনদুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন পথচারীরা। চোরাকারবারে জড়িত এক বিক্রেতার কাছে ক্রেতা সেজে জানা যায়, ১৫০ সিসির পালসার ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, ১৩৫ সিসি ৯০ হাজার টাকা, ডিসকভার ১২৫ সিসি ৯০ হাজার টাকা, ১০০ সিসি ৭৫ হাজার টাকা, হিরো হোন্ডা ১০০ সিসি ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সূত্রটি আরও জানায়, এ ধরনের মোটর সাইকেলের অধিকাংশই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চোরাইকৃত কিংবা ভারত থেকে চোরাই পথে আনা। এসব মোটর সাইকেল চালকদের অধিকাংশই সমাজের বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। দেখা গেছে, অনেক মোটর সাইকেলের নম্বর প্লেট নেই, আবার অনেকের নম্বর প্লেটে ‘অন-টেস্ট’, ‘আবেদিত’, ‘প্রেস’, ‘সংবাদপত্র’, ‘সাংবাদিক’ কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠানের নাম লিখে বছরের পর বছর সড়ক-মহাসড়কে চলাচল করলেও প্রশাসন অনেকটা নীরব ভূমিকায়। মাঝে-মধ্যে অভিযান পরিচালনা করে মোটর সাইকেল আটক করলেও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের তদবীর ও কতিপয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিচ্ছে। এতে একদিকে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব, অপরদিকে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে দিন দিন রাস্তায় নামছে নতুন নতুন মোটর সাইকেল। ফলে অপরাধ প্রবণতা দিন দিন বাড়ছেই। জেলা দক্ষিনাঞ্চলের ব্যবসায়ীদের অপর একটি সূত্র জানায়, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, সদর দক্ষিণ ও নাঙ্গলকোটের পার্শ্ববর্তী চৌদ্দগ্রাম উপজেলা ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় চোরাই পথে অহরহ ভারতীয় মোটর সাইকেল আসছে। চোরাই পথে আসা এসব মোটর সাইকেলের দাম কম হওয়ায় চোর-মাস্তান এবং উঠতি বয়সের ছেলেরা এসব মোটর সাইকেল কিনতে ঝুঁকে পড়ছে। অভিযোগ রয়েছে, কয়েকটি সংঘবদ্ধ চোরাই দলের সক্রিয় সদস্যরা নিয়মিত ভারত থেকে চোরাই পথে মোটর সাইকেল এনে এ অঞ্চলে বিক্রি করছে, আবার এসব চোরাই দলের সদস্যরা বিশেষ দিনে এ অঞ্চলের মোটর সাইকেল চুরি করে নিয়ে সীমান্ত পার করে ভারতে নিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে জেলা দক্ষিনাঞ্চলের পুলিশের একটি সূত্র জানায়, নম্বরবিহীন ও চোরাই মোটর সাইকেল ধরার জন্য প্রায়ই চেকপোষ্ট বসিয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। অবৈধ মোটর সাইকেলের দৌরাত্ম্য রোধে এ অভিযান চলমান রয়েছে। এছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বিভিন্ন স্থানে চেক পোস্ট বসিয়ে নম্বর ও লাইসেন্স বিহীন মোটর সাইকেল এবং চালকদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এ কার্যক্রম আরো জোরদার করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মোটর সাইকেল মালিক জানান, কুমিল্লার ১৭টি উপজেলায় প্রায় ৫ হাজারেরও বেশি অবৈধ ভারতীয় চোরাই মোটর সাইকেল রয়েছে। এগুলোর কোনো সরকারি নিবন্ধন নেই। বর্তমানে মোটর সাইকেল ব্যবসা জনপ্রিয় হয়ে উঠায় দেশি ও বিদেশি কোম্পানির অনেক শো-রুম গড়ে উঠেছে বিভিন্ন বাজারে। এসব শো-রুম থেকে নগদ কিংবা সহজ কিস্তিতে মোটর সাইকেল কিনছেন ক্রেতারা। অথচ শো-রুমের গাড়ীর চাইতে চোরাই বা ছিনতাইকৃত মোটর সাইকেল প্রায় অর্ধেক দামে পাওয়া যাচ্ছে।
একজন মালিক জানান, আমার মোটর সাইকেলটি দুই বছর আগে কিনেছি। ড্রাইভিং লাইসেন্স ও সরকারি নিবন্ধন সনদ এখনো নিইনি। কি দরকার! গাড়ী নিরাপদেই চালাচ্ছি, কোন অসুবিধা হচ্ছে না। আমার মতো অনেকেই নম্বরবিহীন শত শত মোটর সাইকেল চালাচ্ছেন। এ পর্যন্ত কারো কোন ক্ষতি কিংবা অসুবিধা হয়েছে বলে জানা নেই। হরেক রকম ব্রান্ডের নামী-দামী মোটর সাইকেল এখন বিলাসিতার অন্যতম উপকরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এসব এলাকায় সংঘটিত অপরাধের সাথে বেশিরভাগই অবৈধ মোটর সাইকেল অন্যতম উপাত্ত হিসাবে কাজ করছে। ছিনতাইকারী এবং চোর-ডাকাতরা মোটর সাইকেল ব্যবহার করছেন হরহামেশা। আবার এদের অধিকাংশেরই নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স। প্রশাসনিকভাবে বিভিন্ন সময় মোবাইল কোর্টসহ বিশেষ অভিযান চালালেও এদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। যত্রতত্র মোটর সাইকেল ব্যবহার এত বেড়েছে যা বলার উপায় নেই। আবার অনেক মোটর সাইকেলের মালিক ও চালক মাদকাসক্ত, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত এবং চোরাই মোটর সাইকেল কেনা-বেচার ব্যবসাকে জমজমাট করে তুলেছে।
সূত্রটি আরও জানায়, এ ধরনের মোটর সাইকেলের অধিকাংশই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চোরাইকৃত কিংবা ভারত থেকে চোরাই পথে আনা। মোটর সাইকেলের পাশাপাশি আনা হচ্ছে মোটর সাইকেলের বিভিন্ন পার্টস ও আনুষঙ্গিক বিভিন্ন যন্ত্রাংশ।
দামে স্থানীয় বাজারের শো-রুমের দামের তুলনায় অর্ধেক বিধায় এসব অবৈধ মোটর সাইকেল কিনতে ক্রেতারা আগ্রহী হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন এক মোটর সাইকেল ক্রেতা। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে অবৈধপথে আনা এসব মোটর সাইকেলের ভেহিক্যাল আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (ভিআইএন) মুছে পুনরায় পুরনো কোনো বৈধ মোটর সাইকেলের ভিআইএন নম্বর বসিয়ে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) থেকে নিবন্ধন করিয়ে নেয়া হচ্ছে। একাধিক হাতবদল হয়ে চলছে বেচাকেনা।
স্থানীয় বিজিবি ও পুলিশ প্রশাসন অভিযান চালালেও বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে কয়েক বছরের তুলনায় মোটর সাইকেল চোরাচালান বেড়েছে দুই থেকে তিনগুন। চোরাইপথে অবৈধভাবে এসব মোটরসাইকেল ও এর বিবিধ যন্ত্রাংশ ভারত থেকে মাত্র অর্ধেক দামে আনা হচ্ছে। ডিসকভার, পালসার ও হিরো ব্রান্ডের বিভিন্ন মডেলের মোটর সাইকেল আসছে চোরাইপথে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ীও সরবরাহ করা হচ্ছে নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের নির্দিষ্ট মডেলের গাড়ি।
জেলার দক্ষিনাঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, এসব এলাকায় সংঘটিত অপরাধের সাথে বেশিরভাগই অবৈধ মোটর সাইকেল অন্যতম উপাত্ত হিসাবে কাজ করছে। ছিনতাইকারী, চটি মাস্তান, এমনকি চোর-ডাকাতরা মোটর সাইকেল ব্যবহার করছেন হরহামেশা। আবার এদের অধিকাংশেরই নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স। প্রশাসনিকভাবে মাঝ মধ্যে মোবাইল কোটসহ বিশেষ অভিযান চালালেও এদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। আবার বিশেষ বিশেষ এলাকায় মাঝে মধ্যে নামকাওয়াস্তে স্থানীয় প্রশাসন মোবাইল কোর্টে অভিযান চালালেও যৎসামান্য মোটর সাইকেল ধরে নামমাত্র জরিমানা (!) করে ছেড়ে দেয়। তাছাড়া, ঘর থেকে রাস্তায় বেরুলেই শত শত মোটর সাইকেল দোকানপাট ও বিপনী বিতান গুলোর সামনে এবং সড়কের ফুটপাতের দু’পাশে সারি সারি মটর সাইকেল পার্কিং করা থাকে। পথচারী চলাফেরায় বেঘাতসহ যানজট লেগেই আছে। শিশু ও বৃদ্ধ বাদে সকলেই মটর সাইকেল চালাচ্ছেন এ অঞ্চলে। যত্রযত্র মোটর সাইকেল ব্যবহার এত বেড়েছে যা বলার উপায় নেই। দুর্ঘটনা ছাড়াও দিন-রাত মোটর সাইকেলের আওয়াজে অনেক শিশু ভয়ে আতংকিতসহ পরিবেশ দূষনের শিকার হচ্ছে। আবার অনেক মোটর সাইকেলের মালিক ও চালক মাদকাসক্ত, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত এবং চোরাই মটর সাইকেল কেনা-বেচার ব্যবসাকে জমজমাট করে তুলেছে। এ অঞ্চলে ৪/৫টি চোরাই সিন্ডিকেট গড়ে ওঠেছে। সরকারি কতিপয় কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ তাদের শেল্টারে থাকায় তারা কাউকে পাত্তা দিচ্ছে না। জেলার দক্ষিনাঞ্চলের ৪টি উপজেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, অবৈধ মটর সাইকেলের ব্যাপারে আমরা খুবই চিন্তিত। এ ব্যাপারে উদ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
লাকসাম উপজেলা সদরের বাসিন্দা মোটর সাইকেল মালিক আবদুস ছাত্তার জানান, পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন সড়কে শত শত ভারতীয় চোরাই মোটর সাইকেল রয়েছে। এগুলোর কোন সরকারি নিবন্ধন নেই। এ সকল গাড়ি বেপরোয়া চলাচলসহ জনদুর্ভোগের সৃষ্টি করছে। এসব এলাকায় সংঘটিত অপরাধের সাথে বেশিরভাগই অবৈধ মোটর সাইকেল অন্যতম উপাত্ত। ছিনতাইকারী, চটি মাস্তান, দলীয় ক্যাডার এমনকি চোর-ডাকাতরা মোটর সাইকেল ব্যবহার করছেন হরহামেশা। আবার এদের অধিকাংশেরই নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স। প্রশাসনিকভাবে এদের নিয়ন্ত্রণও করা হচ্ছে না। মাঝে-মধ্যে নামকাওয়াস্তে মোবাইল কোর্টের অভিযান চললেও যত্সামান্য মোটর সাইকেল ধরে নামমাত্র জরিমানা করে ছেড়ে দেয়া হয়।
লাকসাম থানার ওসি আবদুল্লাহ্-আল মাহফুজ জানান, নম্বরবিহীন ও চোরাই মোটর সাইকেল ধরার জন্য প্রায়ই চেকপোষ্ট বসিয়ে প্রায়ই অভিযান চালানো হয়। অবৈধ মোটর সাইকেলের দৌরাত্ম্য রোধে এ অভিযান জোরদার করা হবে।
মনোহরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ সামসুজ্জামান জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে নম্বর ও লাইসেন্স বিহীন মোটর সাইকেল এবং চালকদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এ কার্যক্রম আরো জোরদার করা হবে।
নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা ওসি মোহাম্মদ আইয়ুব হোসেন জানান, লাইসেন্সবিহীন এবং চোরাই মোটর সাইকেলের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
from ComillarBarta.com http://ift.tt/2oNmtRc
April 27, 2017 at 10:53PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন