ফারুক আল শারাহ ● মিজানুর রহমান সুমন একজন স্বপ্ন জাগানিয়া মানুষ। কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিভাবান এ তরুণ স্ব-প্রতিভায় উদ্ভাসিত। স্বপ্ন-আত্মবিশ্বাস তাকে পৌঁছে দিয়েছে সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে। তিনি সৌদি আরব প্রবাসী বাঙালিদের আপনজন। কেউ সমস্যা পতিত হলেই ছুটে যান তাঁর কাছে। আর উদার মানসিকতা দিয়ে তিনি সমস্যা সমাধান করেন। সততা, নিষ্ঠা, পরিশ্রম তার জীবনের গতিপ্রকৃতি পাল্টে দিয়েছে। আর এ পাল্টে দেয়ার মাধ্যমে তিনি স্বপ্ন দেখেন সমাজ ও মানব সেবার চিত্র। জীবনের প্রতিটি মুহুর্তে তিনি সমাজ ও মানব কল্যাণে ভূমিকা রাখতে চান।
‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য’- এটি একটি জনপ্রিয় বাংলা গানের ছন্দ। সমাজ ও মানব কল্যাণে এমন প্রত্যয়ে কাজ করার জন্য দরকার উদার মানসিকতার। তেমনি এক ‘সাদা মনের মানুষ’ সৌদি আরব প্রবাসী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সমাজ সেবক, শিক্ষানুরাগী ও দানবীর মোঃ মিজানুর রহমান সুমন। এতদিন মানুষ শুধু তাঁর উদারতার কথা মুখে মুখে শুনে আসছিলেন। কিন্তু এবার সার্বিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে বাস্তবে প্রমাণ করলেন সমাজ ও মানব কল্যাণে সত্যিই তিনি এক কিংবদন্তী। সামান্য সময়ের জন্য সৌদি আরব থেকে দেশে এসে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে প্রায় এক কোটি টাকা অনুদান প্রদানের ঘোষণা দিয়ে সমাজ ও মানব কল্যাণে বেশ সাড়া জাগিয়েছেন।
মিজানুর রহমান সুমন মনোহরগঞ্জ উপজেলার ঝলম দক্ষিণ ইউনিয়ন বচইড় গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মৃত আবুল হোসেন,মায়ের নাম গোলাপজান। তিনি সৌদি আরবে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে বিয়ে করেছেন। দাম্পত্য জীবনে তিনি মালাক নামক একমাত্র কন্যা সন্তানের জনক। মিজানুর রহমান সুমন সৌদি আরবে একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সমূহের মধ্যে রয়েছে- মালাক আল তাকওয়া হোটেল গ্রুপ মক্কা, মালাক আল তাকওয়া টুরিজম, মালাক আল তাকওয়া হোটেল ম্যানেজমেন্ট। তাঁর হোটেল সমূহ আন্তর্জাতিক মানের। বাংলাদেশ সরকারের অনেক মন্ত্রী, এমপি সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভিআইপিরা সৌদি আরবে হজ্ব বা ওমরাহ করতে গেলে তাঁর হোটেলে অবস্থান করেন। আর মিজানুর রহমান সুমন কোন বাংলাদেশীকে পেলে আপনজনের মতো মনখুলে কথা বলেন। বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেন।
মিজানুর রহমান সুমন লাল সবুজের পতাকাবেষ্টিত বাংলাদেশকে ভালোবাসে। ভালোবাসের এ দেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে। আর এ ভালোবাসার টানে তিনি বারবার ছুটে আসেন প্রিয় জন্মভূমিতে। তিনি গত ১৪ মার্চ ঢাকা হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছার পর ফুলে ফুলে সংবর্ধিত হন। গত ১৭ মার্চ তাঁকে লাকসাম উপজেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে উপজেলা যুবলীগের উদ্যোগে উষ্ণ সংবর্ধনা দেয়া হয়। এছাড়া তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মোঃ তাজুল ইসলাম এর সাথে বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দেন।
গত ২০ মার্চ মিজানুর রহমান সুমনকে মনোহরগঞ্জের লক্ষণপুর নুরুল হুদা উচ্চ বিদ্যালয়, ১৯ মার্চ হাজীপুরা দাখিল মাদ্রাসা, ২২ মার্চ বড় কেশতলা উচ্চ বিদ্যালয় ও ২৩ মার্চ লালচাঁন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের উদ্যোগে উষ্ণ সংবর্ধনা দেয়া হয়। এছাড়াও এলাকাবাসীর আমন্ত্রণে তিনি ক্রিড়া, সাংস্কৃতিক সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। মিজানুর রহমান রহমান সুমন মনোহরগঞ্জের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে উদারতা ও দানশীল মননের পরিচয় দিয়েছেন। তিনি বড়কেশতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বি-তল ভবন করে দেয়ার লক্ষ্যে এককভাবে শতভাগ আর্থিক অনুদান, লক্ষণপুর নুরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বি-তল ভবন করে দেয়ার লক্ষ্যে স্থানীয় আরো দুই প্রবাসীর সাথে আনুপাতিক হারে আর্থিক অনুদান, লালচাঁন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাট সহ বিভিন্ন উন্নয়নে ৫ লাখ টাকা, হাজিপুরা মাদ্রাসার উন্নয়নের জন্য ২ লাখ টাকা, বড়কেশতলা বাজার মসজিদের উন্নয়নে ১ লাখ টাকা, বড়কেশতলা একটি নুরানী মাদ্রাসার জমি কেনার জন্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং মাদ্রাসার উন্নয়নের আরো ১ লাখ টাকা, বাংলাইশ এতিমখানায় ৫০ হাজার টাকা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন। এখানেই শেষ নয়। দরিদ্র মেয়ের বিয়ে, চিকিৎসা বঞ্চিত মানুষকে চিকিৎসা সহায়তা ও দরিদ্র পীড়িত মানুষকে লাখ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন। সবমিলিয়ে মাত্র এক সপ্তাহে তিনি প্রায় ১ কোটি টাকা অনুদান দিয়ে সমাজ ও মানব সেবায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তিনি তাঁর প্রতিশ্রুত অনুদানের টাকা স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করবেন বলে জানা গেছে। এছাড়াও লাকসাম-মনোহরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার শতাধিক মসজিদ, মাদ্রাসা, মক্তব ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য মিজানুর রহমান সুমনের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। তিনি ক্রমান্বয়ে এসব প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে সহযোগিতা করবেন বলে জানা গেছে।
মিজানুর রহমান সুমন এর এমন উদারতা মনোহরগঞ্জের ইতিহাসে নজির হয়ে থাকবে বলে মনে করেন বিজ্ঞ মহল। তাদের মতে- মিজানুর রহমান সুমন এর মতো ধর্র্নাঢ্য ব্যক্তিরা স্ব স্ব অবস্থান থেকে এগিয়ে এলে সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তিগত অনুদানে মনোহরগঞ্জ হবে আগামীর মডেল উপজেলা। মিজানুর রহমান সুমন সমাজ ও মানব কল্যাণে তাঁর চলমান অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবেন বলেও তারা আশা প্রকাশ করেন।
মিজানুর রহমান রহমান সুমন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর আজীবন লালিত স্বপ্ন সোনার বাংলাকে জননেত্রী শেখ হাসিনার দিন বদলের সনদ ভিশন ২১ তথা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের সৈনিক হিসেবে দেশে-বিদেশে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে তিনি সক্রিয়ভাবে আওয়ামী যুবলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। তিনি মক্কা মহানগর আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। সৌদি আরবে আওয়ামী রাজনীতিকে সুশৃঙ্খল ও গতিশীল করতে তিনি সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
মিজানুর রহমান সুমন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা প্রায় কোটি প্রবাসী বাঙালির অধিকার বাস্তবায়নে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। প্রবাসীদের পক্ষে তিনি ইতিমধ্যে ১১দফা দাবি উত্থাপন করে তা বাস্তবায়নে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার প্রতি আবেদন জানিয়েছেন। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ সরকার তাঁর উত্থাপিত দাবিগুলো বাস্তবায়ন করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
মিজানুর রহমান সুমন বলেন- মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি অর্জন ও সামাজিক দায়বদ্ধতার কারণে আমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও গরীব-দুঃখী মানুষের সেবার মাধ্যমে সমাজ ও মানব কল্যাণে কাজ করে যাব- ইনশাল্লাহ। দেশে-বিদেশে সর্বস্তরের জনগণের ভালোবাসায় আমি সিক্ত-অভিভূত। সবার ভালোবাসার ঋণ শোধ করতে আমি প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাব। আমি সবার আন্তরিক ভালোবাসা ও দোয়া চাই।
মিজানুর রহমান সুমন প্রায় ২০দিন বাংলাদেশে অবস্থান করে সামাজিক কর্মকান্ডে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন। গত ৩ এপ্রিল রাত ৮টায় তিনি সৌদি আরবের উদ্দেশ্য ঢাকা ত্যাগ করেন। বিদায়লগ্নে হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে তাঁকে বিদায় জানান দলীয় নেতা-কর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা। ওইদিন রাতে তিনি জেদ্দা বিমানবন্দরে পৌঁছলে সৌদি আরবস্থ আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা তাকে ফুলে ফুলে সিক্ত করেন।
from Comillar Barta http://ift.tt/2oLxeVE
April 06, 2017 at 10:41AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন