স্টাফ রিপোর্টার :: টানা দু দিনই কেটেছে বোমা আতঙ্কে। নগরীর শাহি ঈদগাহস্থ স্কলার্সহোম স্কুল অ্যাড কলেজে আতঙ্কে বন্ধ রাখা হয়। পলিথিনের ভেতর স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো একটি বোমাসদৃশ বস্তু পাওয়ার ঘটনায় গত মঙ্গলবার সকালের পর থেকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বেসরকারি এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল ঘিরে রাখে র্যাব-পুলিশ। শিক্ষার্থীদের নিরাপদে বের করে আনা হয়। এটি শক্তিশালী বিস্ফোরক হতে পারে, বলে প্রাথমিক ধারণা ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।
তবে গতকাল বুধবার বিশেষজ্ঞ দলের পরীক্ষা নিরীক্ষায় দেখা যায়, এটি কোনো বিস্ফোরক নয়। ওই প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির এক ছাত্র ‘মজা করার জন্য’ বস্তুটি ভবনের ভেতর রেখেছিল। আর এটি তৈরি করে ওই প্রতিষ্ঠানের তিন ছাত্র। র্যাব আটক করেছে তাদের।
বস্তুটি বোমা নয়, জানার পর গতকাল বেলা ১১টার দিকে স্কলার্সহোমের অধ্যক্ষ জোবায়ের সিদ্দিকী জানান, ‘স্কুলের দশম শ্রেণির এক ছাত্র টিভি সিরিয়াল ও সিনেমা দেখে কৌতূহলবশত খেলার ছলে এ কাজ করেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর সঙ্গে রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের সংশ্লিষ্টতা নেই।’
দশম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী এখন র্যাবের হেফাজতে রয়েছে জানিয়ে অধ্যক্ষ বলেন, বোমাসদৃশ বস্তুটি রাখার কথা সে স্বীকার করেছে।
এদিকে, শবে মেরাজ উপলক্ষ্যে গত মঙ্গলবার দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। তবে ব্যতিক্রম সিলেটের স্কলার্সহোম। বেসরকারি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি খোলা ছিল এই দিন।
অপরদিকে, বোমা সদৃশ্য বস্তুটি উদ্ধারের পর আতঙ্ক কেটেছে স্কলার্সহোম স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। টেপ মোড়ানো বস্তুটি বোমা নয়-র্যাবের বোমা বিশেষজ্ঞ দল এমন ঘোষণা দেয়ার পর স্বস্তি ফিরে। বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল সেটি উদ্ধার করে নিশ্চিত হয়েছে সেটি বোমা নয়। এরপর এ নিয়ে আর কারো মধ্যে কোনো আতঙ্ক থাকার কথা নয়। তাই আজ বৃহস্পতিবার থেকে ক্যাম্পাস খুলে দেয়া হবে এবং যথারীতি পাঠদান শুরু হবে জানান প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার স্কলার্সহোম স্কুল অ্যান্ড কলেজের সিঁড়ির নিচে বোমা সদৃশ্য একটি বস্তু দেখতে পেয়ে র্যাব-পুলিশে খবর দেয়া হয়। র্যাবের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ করে সেটিকে বোমা বলে দাবি করেছিল।
এদিকে, গতকাল সন্ধ্যায় র্যাব-৯ প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, র্যাব সদর দপ্তর থেকে উন্নত প্রযুক্তিসহ বোমা বিশেষজ্ঞ টিম নিয়ে এসে বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি কোনো বোমা বা বিস্ফোরক নয়। র্যাব-৯, এর তদন্ত টিমের তদন্তের ধারাবাহিকতায় সিসিটিভির ফুটেজ পরীক্ষা করে ওই স্কুলেরই ৩ জন ছাত্রকে সন্দেহমূলক আটক করা হয়। তাদের জিঙ্গাসাবাদে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তিন বন্ধু মিলে বাসায় বসে স্কুলের ভেতর রেখে মজা দেখার উদ্দেশ্যে এই বোমা সদৃশ তৈরি করে। আটককৃতরা হলো, দক্ষিণ সুরমার চান্দাই নিবাসী ও বর্তমানে ৬১, করফুল ভিলা, সাপ্লাই এলাকার বাসিন্দা আনসার আলীর ছেলে মো. শাহীনুর আহম্মেদ মাহী (১৪), শ্রীমঙ্গল উপজেলার মো আব্দুর রহমানের ছেলে মো. এবাদুর রহমান (১৪) এবং জকিগঞ্জ উপজেলার লৎফুর রহমানের ছেলে ফাহিম আহম্মেদ (১৭) ।
গ্রেফতারকৃতদের মহানগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হয় বলে জানিয়েছেন র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (গণ্যমাধ্যম) মাঈন উদ্দিন চৌধুরী।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2pENB9X
April 28, 2017 at 06:07AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন