নিজস্ব প্রতিবেদক ● স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য কলহের জের ধরে ২ বছরের শিশু ইশরাতকে দত্তক হিসেবে ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেন। পরে দুই দফায় হাত বদল হয়ে ওই শিশুর ঠাই হয় এক নিঃসন্তান দম্পতির পরিবারে।
কিন্তু স্ত্রী তার ভুল বুঝে যখন সংসারে ফিরে আসেন তখন অন্যের সংসারে দত্তক হিসেবে তার আদরের কন্যা সন্তান ইশরাতের প্রায় ২ মাস কেটে গেছে। এখানে দেখা দেয় বিপত্তি।
পরে বিষয়টি গড়ায় থানা পর্যন্ত। অভিযানে নামে পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটছে জেলার দেবিদ্বার উপজেলা সদরের বানিয়াপাড়া এলাকায়।
২৪ ঘণ্টার অভিযানে দত্তক দেয়া শিশুটিকে সোমবার দুপুরে উদ্ধার করা হয়েছে লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার দাসের হাট এলাকা থেকে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জেলার মুরাদনগরের বাসিন্দা সাগর ও খাদিজা দম্পতি দেবিদ্বার উপজেলা সদরের বানিয়াপাড়া এলাকায় ভাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতো।
তাদের ইশরাত (২) নামের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। দাম্পত্য কলহের জের ধরে সাগরের স্ত্রী খাদিজা সন্তান ফেলে জেলার চান্দিনায় বাবার বাড়িতে চলে যায়।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তার স্বামী সাগর ২ বছর বয়সী কন্যাকে শিশুকে ৩ হাজার টাকায় দত্তক দিয়ে দেন জেলার বুড়িচং সাবের বাজার এলাকার গৃহবধূ পারুল বেগমের কাছে।
কিন্তু সেখানে ইশরাতের ঠাঁই হয়নি। তাকে প্রথমে চট্টগ্রাম এবং পরে দত্তক হিসেবে পাঠিয়ে দেয়া হয় লক্ষ্মীপুরে। কিন্তু তার স্ত্রী সংসারে ফিরে আসায় দেখা দেয় বিপত্তি। সন্তান না পেয়ে তিনি দেবিদ্বার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
পুলিশের একটি টিম সাগরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পর তিনি তার সন্তানকে দত্তক দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করায় পুলিশ অভিযানে নামে।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) আব্দুলাহ আল মামুনের নির্দেশনায় থানা পুলিশের (ওসি) মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে থানার এসআই মোর্শেদ অভিযানে নামেন। গত রোববার পুলিশ ওই দম্পতিকে নিয়ে অভিযান চালায়।
একপর্যায়ে জানা যায়, বুড়িচংয়ে পেয়ারা বেগমের কাছে যে শিশুটিকে দত্তক দেয়া হয় তাকে পুনরায় লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানার দাসেরহাট গ্রামের নিঃসন্তান এনজিও কর্মী মায়া বেগমের জন্য চট্টগ্রামে তার মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সেখান থেকে ওই শিশুকে লক্ষ্মীপুরে নিঃসন্তান মায়ার কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। পরে পুলিশ লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন দাসেরহাট থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে সোমবার দুপুরে তার মা খাদিজার কোলে ফিরিয়ে দেন।
দেবিদ্বার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, দাম্পত্য কলহের কারণে শিশুকে দত্তক দেয়া হয়। দুই দফায় হাত বদল হয়ে শিশুটি প্রথমে বুড়িচং এবং পরে চট্টগ্রাম থেকে পাঠিয়ে দেয়া হয় লক্ষ্মীপুরে। কিন্তু পুলিশের অভিযানে তাকে উদ্ধার করে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।
from ComillarBarta.com http://ift.tt/2oFI5yV
April 25, 2017 at 12:48PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.