কুমিল্লার বাঁশি যাচ্ছে দেশ বিদেশে

নিজস্ব প্রতিবেদক ● কুমিল্লার ছোট্র গ্রাম শ্রীমদ্দি। আর এই গ্রামটি মানুষের কাছে সুপরিচিত কেবল বাঁশির গ্রাম হিসেবে। গ্রামটি বসবাস করেন প্রায় ৫০টি বাশির কারিগরদের পরিবার। তারা চৌদ্দ পুরুষ ধরে কেবল বাঁশি বানিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের মোট তৈরীকৃত বাঁশির ৫০ ভাগ বাঁশি তৈরী হয় এই শ্রীমদ্দি গ্রামে। গ্রামটির বাঁশি তৈরির ঐতিহ্য শত বছরের। বংশ পরমপরা ধরে পূর্ব পুরুষদের সৃষ্টিশীল কাজটি এখনো চালিয়ে যাচ্ছে কিছু বংশধররা।

শুধু টিকে থাকাই নয়, কুমিল্লার হোমনা উপজেলার শ্রীমদ্দি গ্রামের কারুশিল্পীদের নিপুণ হাতে তৈরি বাঁশি যাচ্ছে দেশের বাইরেও।

বাঁশি কারিগরা জানান, বৈশাখী মেলায় তারা আশা করছেন তাদের তৈরী প্রায় কোটি টাকার বাঁশি সারা দেশে বিক্রি হবে। আশা করছেন সারা বছর যে লোকসান দিয়েছেন বৈশাখে পুজিঁসহ লাভ উঠে আসবে।

বাঁশিতে রং করছিলেন এক গৃহবধূ তিনি জানান, বাঁশি তৈরি ও বিক্রি করেই সংসার চলে। তবে শুধু জীবিকার জন্যই নয়, মনের টান থেকেও এই কাজ করেন তাঁরা।

পুরনো কারিগর জয়নাল জানালেন, শ্রীমদ্দির অন্তত ৫০টি পরিবার বাঁশিশিল্পে যুক্ত। পরিবারের সব বয়সের নারী, পুরুষ, শিশু সবাই কোনো না কোনো ধাপে বাঁশি তৈরিতে হাত লাগান। বাঁশির গ্রামে ঘুরে দেখা গেলো তারা নানা ধরনের বাঁশি তৈরি করেন।

অনিল, সুনীল, যতীন ৩ ভাই সবাই জানালেন, তাঁরা তোতা (মুখ) বাঁশি, মোহন বাঁশি, আঁড় বাঁশি, লাভ বাশি, খানদানি বাঁশি, ক্লাসিক্যাল বাঁশি, বিন বাঁশি ও বেলুন বাঁশি তৈরি করেন। তাঁদের তৈরি বাঁশি দেশের বাজার ছাড়াও ফ্রান্স, জার্মানি, কানাডা, স্পেন, ইতালিসহ বেশ কয়েকটি দেশে যায়।

যতীন্দ্র বলেন, বিদেশে মুখ বাঁশির কদর বেশি। এই বাঁশি একেবারেই প্রাকৃতিক। কোনো রং থাকে না তাতে। আর দেশে চাহিদা বেশি খানদানি বাঁশির।

তিনি জানালেন, ঢাকার কিছু ব্যবসায়ী বিদেশ থেকে বাঁশির অর্ডার নিয়ে তা তৈরির জন্য তাঁদের নমুনা সরবরাহ করেন। সুরের কারিগরদের সবাই একবাক্যে একমত জানালেন, সরকার যদি তাদের সহজ শর্তে ব্যাংক লোন দিত তবে তাদের মোটা সুদে মহজনদের কাছ থেকে ধারদেনা করে চলতে হয় না। আমাদের এটা তো শিল্প। অথচ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দপ্তর তাদের কোন দিন কেউ খবরটি পর্যন্ত নেয়নি। আমরা না পারছি চৌদ্দ পুরুষের পেশা ছাড়তে, না পারছি টিকে থাকতে।



from ComillarBarta.com http://ift.tt/2oqL5AW

April 13, 2017 at 04:36PM
13 Apr 2017

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top