ইউরোপ ::
তাইওয়ানের এক তরুণী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর তার সঙ্গীবিহীন জীবনে সত্যিকারের বিয়ের স্বপ্ন পূরণ না হলেও, বিয়ের কনের সাজে ছবি তুলে কিছুটা পূরণ করার চেষ্টা করেছেন সেই শখ।
কেন তিনি এমনটা করলেন? বিবিসির প্রতিবেদক সিন্টি সুইয়ের কাছে বলেছেন এমন করার কারণ কী।
কিউ মে চেন এর বয়স ২৮ বছর।
স্তন ক্যান্সারের অস্ত্রোপচার হয়েছে তার। তবে এসব কিছু তাঁর বিয়ের স্বপ্ন দেখা থেকে থামাতে পারেনি।
“যখন আপনার জীবনের অন্তিম সময়ের ক্ষণ গণনা শুরু হবে আপনার কখনোই মনে হবে না যে হাতে খুব একটা সময় আছে। আগে আমি সবসময় এমন কারো অপেক্ষায় ছিলাম যে এসে আমার স্বপ্নগুলো পূরণ করতে সাহায্য করবে। অন্যদের মত আমারও বিয়ের নানারকম ছবি তোলা হবে” -বলছিলেন কিউ মে চেন।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর জীবনে তেমন কেউ না আসায় নিজেই নিজের স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব নিয়েছেন।
তিনি একটি ওয়েডিং ফটোসেশনের পরিকল্পনা করেন। ঠিক যেভাবে বিয়ের কনে ও বর ছবি তুলে থাকেন। সাদা, গোলাপি, বিভিন্ন রংয়ের বিয়ের পোশাকে ছবি তোলেন তিনি।
“আমি নিজেই এই চারটি পোশাক পছন্দ করে বেছে নিয়েছি। চুলের সাজ এবং গয়না সবকিছুই আমি নিজেই পছন্দ করেছি। আমাকে বলা হয়েছিল তাদের স্টুডিওর ভেতরে ছবি তোলার জন্য। কিন্তু আমি তাদের জানাই যে আমি সত্যিকারের বিয়ের মতোই ফটোশুট চাই”।
এরপর কিউ চেন গাড়ি ভাড়া করে বিভিন্ন ভাড়া করা ভেন্যুতে গিয়ে বিয়ের ছবি তোলেন।
“যখন আমি বিয়ের গাউন পরলাম আমার কান্না পাচ্ছিল। আমার অনুভূতি হচ্ছিল যেন বহু বছর ধরে লালন করা আমার স্বপ্ন সত্যি সত্যিই পূরণ হলো “।
কিন্তু তাঁর জীবন তার স্বপ্ন-পূরণের মতো সহজ স্বাভাবিক নয় মোটেই।
প্রতি সপ্তাহে তিনবার করে তাঁকে হাসপাতালে যেতে হয় ইনজেকশন নিতে। কেমোথেরাপিও নিতে হয়।
“দীর্ঘসময় আমি দাড়িয়ে থাকতে পারি না। আমাকে হুইলচেয়ারও কখনো কখনো ব্যবহার করতে হয়। আমি হাঁটতে পারি না। আর এই যে আপনি আমার মাথায় ঘাড় অব্দি চুল দেখতে পাচ্ছেন, সেটা কিন্তু আসল নয় নকল চুল”- বলছিলেন কিউ মে চেন।
তাঁর জীবনের এই কাহিনী বিশ্বের বিভিন্ন এলাকার মানুষের মন ছুঁয়ে গেছে। সামাজিক মাধ্যমে তাকে অনেকেই শুভকামনা জানিয়ে লিখেছেন। তিনি যেন সুস্থ হয়ে ওঠেন এমন প্রত্যাশাও করেছেন কেউ কেউ।
কিউ চেন বলছিলেন “আমি আমার জীবনের ঘটনার মধ্য দিয়ে অন্য যারা অসুস্থ তাদের মধ্যে অনুপ্রেরণা তৈরি করতে চাই। সুস্থ যারা তাদের জন্যতো বটেই। আমি বলতে চাই জীবনটা আসলে ততটা মন্দ নয়। জীবন ও মৃত্যু ছাড়া আর সবকিছুই আসলে গৌণ”।
“যেসব অসুস্থ ব্যক্তিরা অবধারিতভাবে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন তারা সবসময় নিজেদের ভবিষ্যতের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন থাকেন- আর কতদিন বাঁচবেন, কখন মারা যাবেন কিংবা চিকিৎসা কতটা কাজ করছে এসব নিয়ে। কিন্তু আমি বলবো চিন্তা করোনা কারণ এমন চিন্তা অর্থহীন”।
পৃথিবীতে বাকি যেটুকু সময় কাটছে সেটুকু শান্তির সাথে নিজের মনের মতো করেই কাটাতে চান তাইওয়ানের এই তরুণী।
from যুক্তরাজ্য ও ইউরোপ – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2pKUKRD
May 14, 2017 at 12:00PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন