সিলেট জেলা পরিষদের সাধারণ সদস্য পদে (পুরুষ) স্থগিত হওয়া চারটি ওয়ার্ডে গতকাল মঙ্গলবার শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। ভোট গণনা শেষে বেলা তিনটায় চারটি ওয়ার্ডে ফলাফল ঘোষণা করে নির্বাচন রিটার্নিং অফিসার সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. রাহাত আনোয়ার।
বিজয়ীদের মধ্যে দুটিতে আওয়ামী লীগ এবং একটি করে বিএনপি ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। গতকাল যেসব ওয়ার্ডে নির্বাচন হয়, সেগুলো হচ্ছে, ১ নম্বর ওয়ার্ড (সিটি ও সদরের আংশিক), ৩ নম্বর ওয়ার্ড (দক্ষিণ সুরমার একাংশ ও ফেঞ্চুগঞ্জ), ৯ নম্বর ওয়ার্ড (বিশ্বনাথ) এবং ১৪ নম্বর ওয়ার্ড (কানাইঘাট)।
জেলা পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডে (সিটি কপোরেশন ও সদর উপজেলা) সদস্য পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা যুক্তরাজ্য প্রবাসী মোহাম্মদ শাহানুর। তালা প্রতীক ২৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন তিনি। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগ নেতা এটিএম হাসান জেবুল ও জমিয়ত নেতা মাওলানা মোসাদ্দিক আহমদ ২৩টি করে ভোট পেয়েছেন। জেবুল বক প্রতীকে এবং মোসাদ্দেক ফ্যান প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।
জেলা পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে (ফেঞ্চুগঞ্জ-দক্ষিণ সুরমার একাংশ) সদস্য পদে দুই প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা সমান হয়েছে। পরে এ ওয়ার্ডে বিজয়ী নির্ধারণ করতে টস করে বিজয়ী নির্ধারণ করেন রির্টানিং কর্মকর্তা। টসে বিজয়ী হয়েছেন দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির নেতা নুরুল ইসলাম ইছন।
এ ওয়ার্ডে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আউয়াল কয়েস হাতি প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৫ ভোট। তালা প্রতীকে সমান সংখ্যক ভোট পান বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম ইছন। টসে বিজয়ী হয়েছেন ইছন। এছাড়া ব্যাট প্রতীকে বিএনপি নেতা আব্দুল আহাদ খান জামাল ৯ ভোট, টিউবওয়েল প্রতীকে ফটোসাংবাদিক এফএ মুন্না ২ ভোট পেয়েছেন। মোট ৬২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। একটি ভোট বাতিল হয়েছে।
জেলা পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ড (বিশ্বনাথ উপজেলা) স্থগিতকৃত সদস্য (পুরুষ) নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত উপজেলার ভোটকেন্দ্র রামসুন্দর অগ্রগামী উচ্চবিদ্যালয়ে উপজেলার ৮টি ইউনয়নের জনপ্রতিনিধিরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। নির্বাচনে জাতীয় পার্টির নেতা সহল আল-রাজী চৌধুরী বৈদ্যতিক পাখা প্রতীক নিয়ে ৫৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা বিএনপি নেতা ময়নুল হক (হাতি প্রতিক) নিয়ে ১৫ ভোট পেয়েছেন। রাজী সিলেট ২ আসনের সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়ার ছোট ভাই।
এছাড়া জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে (কানাইঘাট) সদস্য পদে আওয়ামী লীগ নেতা ইমাম উদ্দিন চৌধুরী তালা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৪৩টি ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা আওয়ামী লীগের উপসাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক এমাদ উদ্দিন মানিক টিউবওয়েল প্রতীকে পেয়েছেন ২০ ভোট। এ ওয়ার্ডে ৯৪ জন ভোটারের মধ্যে ৯২ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এর মধ্যে দুটি ভোট বাতিল হয়।
অন্য প্রার্থীদের মধ্যে কানাইঘাট যুবদলের আহবায়ক নুরুল ইসলাম ক্রিকেট ব্যাট প্রতীকে ১২ ভোট, মুস্তাকিম হায়দার হাতি প্রতীকে ১১ ভোট ও ফখর উদ্দিন অটোরিকশা প্রতীকে ৪ ভোট পান।
এর আগে সিলেট জেলা পরিষদের স্থগিতকৃত চার সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ করা হয়। চার ওয়ার্ডে মোট ৩৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই চার ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৪শ জন জনপ্রতিনিধি। এরা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিযে নির্বাচিত করেন। গত ১৫ মে নির্বাচন কমিশন এই চার ওয়ার্ডের নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছিল।
উল্লেখ্য, ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী সুবল চন্দ্র, ৩নম্বর ওয়ার্ডের আশিকুর রহমান মিঠু ও আব্দুল্লাহ আল মামুন, ৯নম্বর ওয়ার্ডের শামসুল ইসলাম এবং ১৪নম্বর ওয়ার্ডের নূরুল ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছিল। পরে তাঁরা উচ্চআদালতের শরণাপন্ন হলে ওই চার ওয়ার্ডের সদস্য পদে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। আদালতের রায়ে তাদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2rOzdtD
May 24, 2017 at 09:36AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন