ঢাকা::রাজধানীর ঘরে ঘরে চিকুনগুনিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। মশা মারার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের থাকলেও এ প্রতিষ্ঠানটির মশা মারার কর্মসূচি চলছে ঢিমেতালে। এক এলাকায় একবার মশার ওষুধ ছিটিয়ে গেলে পরের ছয় মাসেও সেখানে দ্বিতীয়বার সিটি করপোরেশনের লোকদের দেখা পাওয়া যায় না বলে জানিয়েছেন রাজধানীবাসীর অনেকেই। আবার গত শীত থেকে ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ পানির পাইপ বসানোর কাজ করছে। গত তিন-চার মাস কাজ করলেও এখন পর্যন্ত ওয়াসা পাইপ বসানোর কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি। অসম্পূর্ণ কাজ করার কারণে রাস্তা এবড়োখেবড়ো হয়ে গেছে। প্রচুর গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় এসব স্থান পানি জমে মশা উৎপাদনের অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে।
আবার বর্ষাকাল শুরু না হতেই এবার প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। এখন চলছে থেমে থেমে বৃষ্টি। ডেঙ্গু অথবা চিকুনগুনিয়ার বাহক এডিস মশা পরিষ্কার পানিতে ডিম ছাড়ে। থেমে থেমে বৃষ্টিপাত এডিস মশার বংশ বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, এক পরিবারের কেউ আক্রান্ত হলে এক দিন আগে অথবা পরে অন্য সদস্যরাও আক্রান্ত হচ্ছে। তারা জানিয়েছেন, পরিবারের সবাই আক্রান্ত হওয়ায় সেবা করারও কেউ থাকে না। এ দিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অঘোষিত সিদ্ধান্তের কারণে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তদের হাসপাতালেও ভর্তি করা হচ্ছে না। অবশ্য চিকিৎসকেরা বলেছেন, চিকুনগুনিয়ার জন্য সাধারণত হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। ভাইরাসজনিত রোগ বলে প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোনো ওষুধ প্রয়োগ করা যায় না। তবে অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে অবশ্যই নিতে হবে। তখন রোগীর দেহে অন্য কী উপসর্গ দেখা দেয় তা দেখে চিকিৎসকেরা ওষুধ দিয়ে থাকেন সতর্কতার সাথে। সে কারণে রোগীর অবস্থার অবনতি না হলে শুধু শুধু হাসপাতালে ভর্তি না করাই উচিত বলে মনে করেন অধ্যাপক সালাহউদ্দিন আহমেদ। এতে করে যে কেবল রোগীর চিকিৎসাই ব্যাহত হবে তা নয়, চিকুনগুনিয়া অথবা ডেঙ্গু আক্রান্তের পরিবারের অন্য সদস্যদেরও কাজ ছেড়ে হাসপাতাল-বাসায় দৌড়াতে হবে। ঝামেলা বাড়বে বৈ কমবে না।
কাঁঠালবাগান এলাকার বাসিন্দা ইলিয়াস উদ্দিন জানিয়েছেন, তার পরিবারের সবাই চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। তিনি জানান, তার পরিচিত আরেকজনের পরিবারের পাঁচজনই চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। তিনি নিজে ১০ দিন এই রোগে ভুগেছেন। পরিবারের অন্য সদস্যদেরও একই অবস্থা। রামপুরা এলাকার রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, তার পরিবারে প্রথমে তার মেয়ে অসুস্থ হয়। পরের দিন তার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর দিন তিনি নিজে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন চিকুনগুনিয়ায়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, রাজধানীর কলাবাগান, কাঁঠালবাগান ও হাতিরপুলÑ এ তিন এলাকার বাসিন্দারা আক্রান্ত হচ্ছেন। উল্লেখ্য, এ তিনটি এলাকা পাশাপাশি অবস্থিত। আবার এর বাইরে রামপুরা এলাকার মানুষও চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। কেন শুধু এ এলাকাগুলোর লোকজন আক্রান্ত হচ্ছেন, সে প্রশ্নের উত্তর স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে নেই। অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, তারা পরীক্ষা করে দেখছেন বিষয়টি।
from ঢাকা – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2q8oPL5
May 21, 2017 at 11:42AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন