স্টাফরিপোর্টার: সকল ফুটপাত ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীদের দখলে চলে গেলেও এদের উচ্ছেদে নির্লিপ্ত প্রশাসন। এমন অবস্থায় জনদূর্ভোগ বিবেচনা করে উদ্যোগী হয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার সিলেট মহানগর মূখ্য হাকিম আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে ফুটপাতের দখলদার ও তাদের মদদদাতাদের সনাক্ত করার নির্দেশ দেন।
সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির একটি আবেদন বিবেচনা নিয়ে মূখ্য মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরু এই নির্দেশনা দেন। এতে উল্লেখ করা হয়, ‘কারা কিভাবে অবৈধ ও বেআইনিভাবে দখলদারিত্ব বজায় রেখেছে তাদের এবং তাদের নেপথ্যে থাকা প্রভাবশালীদের নাম, ঠিকানা ও পরিচয় সনাক্তপূর্বক সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে
সংশ্লিস্ট বিষয়ে উপযুক্ত তদন্ত করে আদালতে সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হল। তাঁর তদন্তকাজে সক্রিয় সহযোগীতা করার জন্য ওসি, কতোয়ালি থানাকে নির্দেশ দেওয়া হলো।’
আদালত নির্দেশনায় আরো উল্লেখ করা হয়, ‘অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনী প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইনী কার্যক্রম গৃহিত না হলে আদালতের নিকট প্রতীয়মান হবে যে উপরোক্ত সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষ অবৈধ দখলদারদের সহযোগী।’
আদালতের এই নির্দেশনা পেয়েছেন জানিয়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমরা জোরেসোরেই অভিযানে নামবো। দখলদারদের পেছনে যতো প্রভাবশালীরাই থাকেন না কেনো, যেহেতু আদালতের নির্দেশ তাই আমাদের এতে সফল হতেই হবে। এতে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়ালে তাও আমরা আদালতকে অবহিত করবো।
জানা যায়, আদালত প্রাঙ্গণ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা ও আদালতের সামনে ফুটপাত দখল হয়ে পড়ায় আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা দূর্ভোগে পড়ছেন উল্লেখ করে গত ১৭ মে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে মহানগর মূখ্য হাকিমের কাছে একটি আবেদন করা হয়। আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হোসেন আহমদ স্বাক্ষরিত এই আবেদনে এসব সমস্যার স্থায়ী সমাধানে কার্যকর পদক্ষে গ্রহণের জন্য মূখ্য হাকিমের কাছে আবেদন জানানো হয়।
আদোলত এই আবেদনটি বিবেচনায় নিয়ে বুধবার পুরো নগরীর ফুটপাত দখল হয়ে পড়ার বিষয়টি উল্লেখ করে দখলমুক্ত করার নির্দেশনা দেন।আদালতের নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, ‘গত ৬ মাস ধরে সিলেটের সকল আদালত প্রাঙ্গন, বার সমিতির ভবনসহ সংশ্লিস্ট এলাকার ফুটপাত থেকে শুরু করে সকল প্রাঙ্গণে দখলদাররা অবৈধ স্থাপনা স্থাপন ও সৃষ্টি করে সকল আদালতের কর্মচারী, বিচারপ্রার্থী জনগন ও আইনজীবীদের স্বাভাবিক যাতায়াত ও আইনী কার্যক্রম পরিচালনা প্রায় অচল অবস্থায় নিয়ে এসেছে। আদালত প্রাঙ্গণ ছাড়াও আদালত সংলগ্ন ১০০ থেকে ৫০০ গজের মধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয় এবং সিটি কর্পোরেশনের কার্যালয় অবস্থিত। এসব প্রতিষ্ঠানও অবৈধ স্থাপনায় অবরুদ্ধ। বন্দরবাজারের মতো জনবহুল প্রাঙ্গণও অবৈধ দখলদারদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। দীর্ঘদিন ধরে এরূপ জনস্বার্থবিরোধী দখল নাকের ডগায় থাকা সত্বেও জেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন ও পুলিশ প্রশাসন কি কারণে নির্বিকার তা আদালতের বোধগম্য নয়।’
বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলেও সংশ্লিস্টদের টনক নড়েনি বলে উল্লেখ করে আদালত বলেন, এমতাবস্থায় সার্বিক পরিস্থিতি অনুধাবন ও বার সমিতির আবেদন বিবেচনা করে জনস্বার্থবিরোধী অবৈধ দখলদারদের চিহ্নিত করে আইন ও আদালতের আওতায় আনা জরুরী মনে করি।’
আদালতের এই নির্দেশনার বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ লালা বলেন, আমরা আদালত ও তৎসংলগ্ন এলাকার ফুটপাত দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান-সিএনজি স্ট্যান্ড ইত্যাদি গজিয়ে ওঠা নিয়ে আদালতের কাছে আবেদন করেছিলাম। আদালত আবেদনটি বিবেচনায় নিয়ে পুরো নগরীর ফুটপাত দখলমুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে, বৃহস্পতিবারও নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সকল সড়কের ফুটপত দখল করেই পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছে ব্যবসায়ীরা। বন্দরবাজার-জিন্দাবাজারসহ নগরীর অনেক এলাকার সড়কের অনেকাংশও ব্যবসায়ীদের দখলে।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2r9TqfJ
May 28, 2017 at 01:19AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন