ক্লাউড সিডিং: চাইলেই ইচ্ছে মতন আবহাওয়া

fইউরোপ ::মস্কোর সবচেয়ে বড় সামরিক প্যারেডের একদিন আগের শুরু হয়েছিল বৃষ্টি৷ আবহাওয়াবিদরা বলেছিলেন, পরদিন তুষারপাত এবং বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে৷ কিন্তু এতকিছুর পরও প্যারেডের সময়টা কিন্তু রৌদ্রজ্জ্বল ছিল৷ কিন্তু সেটা কীভাবে সম্ভব?

৯ই মে জার্মান নাৎসি বাহিনীর কাছ থেকে বিজয় অর্জন উদযাপন দিবস উপলক্ষ্যে মস্কোতে বিশাল প্যারেডের আয়োজন হয়৷ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই দিনটি বরাবরই রৌদ্রজ্জ্বল ছিল৷ কিন্তু এ বছরে এসে আবহাওয়াবিদরা জানালেন ৯ মে অবিরাম তুষার আর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা৷ কিন্তু ঠিক প্যারেডের সময় মেঘের বদলে আকাশে দেখা দিল ঝলমলে সূর্য৷ এটা সম্ভব হয়েছে ‘ক্লাউড সিডিং’-এর কারণে৷

রুশ বিমানবাহিনী অতীতেও ‘ক্লাউড সিডিং’ বা বৃষ্টিকণার বীজ বপন করেছেন৷ অর্থাৎ যে সময়টায় আকাশ পরিষ্কার থাকার প্রয়োজন, সেই সময়ের আগে বৃষ্টি কণার বীজ বপন করে বৃষ্টি ঝরিয়ে আকাশ পরিষ্কার করে ফেলা হয়৷ এর ফলে ঠিক প্যারেডের সময় সিটি সেন্টারে আকাশটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল৷ প্যারেড শেষের দিকে আকাশে একটু একটু করে মেঘ জমতে থাকে আর প্যারেড শেষে পুরো আকাশ মেঘে ছেয়ে গেলো৷

রোববার মহড়ার সময়ও ক্লাউড সিডিং এর সফল পরীক্ষা করা হয়েছিল বলে জানা গেছে৷ ঠিক যতটা সময় আকাশ পরিষ্কার রাখার দরকার ছিল ততটা সময় আকাশ ছিল ঝকঝকে রৌদ্রজ্জ্বল৷ তবে এই প্রযুক্তি যে সবক্ষেত্রে খাটে এটা মানতে রাজি নন অনেকে৷

আবহাওয়াবিদদের মধ্যে এ নিয়ে ভিন্ন মত রয়েছে৷ বিভিন্ন গবেষণার ভিত্তিতে তারা বলছেন, আবহাওয়াকে প্রভাবিত করার সম্ভাবনা সীমিত৷ তারা বলছেন ক্লাউড সিডিং এর প্রযুক্তি একটা ছোট্ট এলাকায় কাজ করে কিন্তু বিস্তৃত পরিসরে এটা সম্ভব নয়৷ এর আগে একবার চাষের জন্য বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন হয়েছিল, কিন্তু সেখানে এই প্রযুক্তি কাজ করেনি৷

ক্লাউড সিডিং এর মূল মন্ত্র হলো– ঝড়ো মেঘের মধ্যে কৃত্রিম নিউক্লিয়াস প্রবেশ করানো৷ এর ফলে মেঘ ঐ নিউক্লিয়াসের সঙ্গে ঘনীভূত হয়ে ছোট ছোট বরফে পরিণত হয়, যেটাকে বলা হয় ‘সিলভার আয়োডায়িড পার্টিকেল’৷ কেবল রুশ সেনাবাহিনী নয়, জার্মানির ওয়াইন প্রস্তুতকারী চাষীরাও এই পদ্ধতি ব্যবহার করেন আঙুর ক্ষেতে ক্ষতি এড়ানোর জন্য৷ তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকরী হলো বিমানের মাধ্যমে পুরো এলাকায় নিউক্লিয়াস সলিউশন স্প্রে করা৷ ঝড়ো মেঘের উপরে বা মধ্যে বিমানটি প্রবেশ করিয়ে এই স্প্রে করা হয়, কণাগুলো এত ছোট হয় যে মাটিতে পড়ার আগে বৃষ্টির কণায় রূপ নেয়৷

এই পদ্ধতিতে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় না৷ কেননা যে পরিমাণ সিলভার আয়োডায়িড বৃষ্টির পানির সঙ্গে মাটিতে দ্রবীভূত হয়, তাতে রাসায়নিক ক্ষতিকর পদার্থের পরিমাণ এতই সামান্য, যে তাতে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় না৷



from মধ্যপ্রাচ্য ও দূরপ্রাচ্য – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2qIPgvD

May 15, 2017 at 05:52PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top