এস এন ইউসুফ ● নিজের ভিতর এতোটা মরনব্যধি বাসাবেঁধেছে কখনো তা কখনোই বুঝতে দেয়নি কাউকে । সারাক্ষন আওয়ামীলীগের জয়গান আর জননেত্রী শেখ হাসিনার বাদ্যবাজাতেন। একজন মহান হৃদয়ের মানুষ কাছে থেকে না দেখলে বুঝাই যেত না। রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামেই কেটেছে জিবনের অর্ধেকের বেশী সময়।
বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে কোনদিন রাজাকার আলবদরদের নিকট মাথা নত করেন নি। মৃত্যুর পূর্বেও গেয়ে গেছেন জননেত্রী শেষ হাসিনার গান। পারিবারিক জিবনে কোন পুত্র সন্তান নেই যে, মানুষটির বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জিবনের ইতিহাসের বাকি অংশ টুকু লিখে যাবেন সকলের তরে। আমি একজন ভালোবাসার মানুষ ছিলাম বলে না লিখে পারলাম না।
আমার ক্ষুদ্র জিবনে মানুষটির সাথে তেমন দেখা হয়নি কিংবা চলার সুযোগ হয়নি। তবে আমার কর্মজিবন আমার প্রিয় নেতা কুমিল্লার অসংখ্য অবহেলিত বঞ্চিত নেতাকর্মীর আশ্রয়েরস্থল মাননীয় রেলপথ মন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক এমপি মহোদয়ের মতো কর্মীবান্ধব নেতার সঙ্গে। যার কারণে কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের আগমন আমাদের মন্ত্রী মহোদয়ের দপ্তরে ঘটে। সেই থেকে অনেকের সাথে পরিচয়।
তাছাড়া কুমিল্লায় সাংবাদিকতা করাককালীন সদর দক্ষিনের অসংখ্য বিষয়ে কথা হতো মানুষটির সাথে তবে দেখা হতো না। এক নামে পরিচিত বাগমারার তাহের ভাই বলে ডাকতো সবাই, যদিও মানুষটির বাড়ী বাগমারা দক্ষিন ইউনিয়নের আশকামতা গ্রামে।বাগমারা ইউনিয়ন, ভূলইন ইউনিয়নসহ সদর দক্ষিনের ওই অংশের কয়েকটি গ্রামেই আমার শিশু ও কৈশর জিবন কেটেছিলো।
পূর্ব আশকামতা গ্রামে আমার খালা বাড়ি আমার অাপন খালাতো ভাই উনার নামেই নাম মোঃ আবু তাহের, উনার ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত ইউপি সদস্য(মেম্বার) উনার পাশে থেকেই উনার জিবনের অনেক ইতিহাস আমাকে বলতো।
সেই কথা গুলোই বলছি।আবু তাহের মজুমদার তার পারিবারের সদস্যদের সময় দিতেন খুবই কম অজপাড়া গাঁয়ের মানুষদের বুকে জড়িয়ে নিতেন অকাতরে। সর্বদা সহজ সরল সাদামাটা জিবন যাপন করতেন মানুষটি। কখনো মানুষের প্রয়োজনে কেউ আসলে ঘরে বসে থাকতেন না যে যেভাবে ডাকতেন সেভাবেই রাতবিরাতে বেড়িয়ে পড়তেন একজন সমাজ সেবক হিসেবে।
স্পষ্ট ভাষায় কথা বলা এ মানুষ কোনদিন অন্যায়কারী কিংবা অপরাধীকে আশ্রয় কিংবা পশ্রয় দিতেন না। জিবনের প্রতিটি সময় আওয়ামীলীগের আদর্শের বীজ বপন করে যেতেন নিরবে। এই মাহান মানুষের চলে যাওয়া কিছুতেই সদর দক্ষিন উপজেলার মানুষ মেনে নিতে পারছে না কারন এই শূণ্যস্থানে তাহের মজুমদারের মতো এতোটা ত্যাগী পরিশ্রমী মানুষ আর মিলবে না। বাগমারা দক্ষিণ ইউনিয়নের মানুষের হৃদয়ে যে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে তা শুকানোর তো অবস্থান সৃষ্টি করবে এমনজন পাওয়াও দুষ্কর।
আজ আশকামতা গ্রামসহ বাগমারা এলাকার আকাশ বাতাস ভারী হয়ে আছে। নিরবে নিথরে “বোবা কান্না করছে ইউনিয়ন পরিষদের সেই চেয়ারটি”কারন এই মানুষটির স্পর্শ পাবেনা সে কোনদিন। আশকামতা থেকে বাগমারা আসার সেই পথও গোপনে চোখের জলফেলছে হয়তো, কারন এই পথে পড়বেনা এই মানুষের পদচিহ্ন। আজ মসজিদের কোনের সেই খাটে চড়ে যাচ্ছেন একা ঘরে শূন্যকরে বিশাল জনপদ। এতিম করে সদর দক্ষিনের অসংখ্য আওয়ামীলীগ কর্মীকে।
কেউ হয়তো লক্ষ করেননি এই মহান মানুষটি আল্লাহর কতো পছন্দের যে মানুষটিকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন অসুস্থ্য করে নিয়ে যেতে পারতেন রমজানের আগেও। অথচ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন উনাকে মানুষের ভালোবাসা দেখে হয়তো রমজানের প্রথম প্রহরেই নিয়ে গেছেন। যা ইসলামের ইতিহাসের একটি সৌভাগ্যবান দিনে যাওয়া। যা চেয়েছিলো প্রিয়নবীর অসংখ্য সাহাবী। উনারা ফরিয়াদ করে বলতেন ” হে আল্লাহ আমার হায়াতটুকু রমজান পর্যন্ত বাড়িয়ে দিও”, রমজানে আমার মৃত্যু দিও”যেমনটা আমিও চাই।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মনে হয় মানুষটিকে পছন্দ করেছেন তাই দীর্ঘদিন অসুস্থ্য অবস্থায় থাকলেও রমজানের জন্য এতোদিন উনাকে পর পাড়ে নেন নি। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের পছন্দের তালিকায় দুনিয়াতে থেকে যে ক’জন মানুষ উঠেছেন হয়তো তাহের মজুমদার একজন সেই সৌভাগ্যবান।
অনেক শত ব্যস্ততার মাঝেও মানুষটিকে নিয়ে না লিখে পারলাম না। তাহের ভাই ভালো থাকবেন দোয়া করি আপনি জান্নাতের মেহমান হোন। মানুষের ভালোবাসা আপনি পেয়েছেন যা চিরকাল থাকবে। দোয়া করি আল্লাহ আপনাকে বেহেস্ত নসিব করুন আমিন।
উল্লেখ্য, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বাগমারা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট আওয়ামীলীগ নেতা আবু তাহের মজুমদার দীর্ঘদিন অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৮ মে পহেলা রামজান রবিবার ভোর ৬ টায় বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন ( ইন্নালিল্লাহি……… রাজিউন)।
The post নেই শুধু তাহের মজুমদার… appeared first on Comillar Barta.
from Comillar Barta http://ift.tt/2r92n6K
May 28, 2017 at 03:04PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন