ঢাকা, ৩০ মে- নতুন ম্যাচ ফি ১০০০ টাকা হিসেবেই তো পেয়েছেন? রুমানা: না, না! আগেরটাই। সামিউল: মানে কত? ৬০০ টাকা? রুমানা: জ্বী। সামিউল: বাড়েনি? রুমানা: নাহ। এভাবেই খানিকটা লুকোচুরি করে কথাগুলো বলছিলেন রুমানা আহমেদ। ফোনের ওপাশে আরও নারী কণ্ঠ শুনে টের পাওয়া যাচ্ছিল আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে রয়েছেন। হয়তো সে কারণেই টাকার অঙ্কটা মুখ ফুটে বলার দুঃসাহস করলেন না নারীদের জাতীয় লিগে শিরোপাজয়ী দল খুলনার অধিনায়ক। এ প্রসঙ্গে প্রতিবেদককে রুমানা বলেন, না, আমরা আগের ম্যাচ ফি-ই (৬০০ টাকা) পাচ্ছি। নতুন করে ঘরোয়া ক্রিকেটে নারীদের ১০০০ টাকা ম্যাচ ফি দেওয়া হবে, এমন তথ্য তাদের জানা ছিল কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রথমবার খুলনাকে নেতৃত্ব দিয়েই শিরোপা এনে দেওয়া এই ক্রিকেটার বলেন, ১০০০ টাকা ম্যাচ ফি হচ্ছে এমন খবর গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জেনেছি। আমরাও আশায় ছিলাম। কিন্তু বিসিবি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদেরকে এমন কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। আমরা সবাই আগের ম্যাচ ফি পেয়েছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক নারী ক্রিকেটার বলেন, ১০০০ টাকা করে দেওয়া হবে এমনটাই জানতাম। আমাদের চেয়ারম্যান স্যার (বিসিবির উইমেন্স উইংন্সের চেয়ারম্যান এম এ আউয়াল ভুলু) টিভি-পত্রিকায় বলেছিলেন। আশায় ছিলাম। কিন্তু বাস্তবায়ন দেখলাম না। ৬০০ টাকা করে পেয়েছি। এসব নিয়ে পরিবার-আত্মীয়দের সামনে লজ্জায় পড়তে হয়। কারণ ছেলেরা যা পায় আমরা তার ধারেকাছেও পাই না। ঘরোয়া ক্রিকেটে ৫০০ টাকার সামান্য কিছু বেশি ম্যাচ ফি পাচ্ছিল বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটাররা। এ নিয়ে গণমাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে সংবাদ প্রকাশ হলে ম্যাচ ফি দাঁড়ায় ৬০০ টাকায়। কিন্তু মাত্র কয়েক টাকা বাড়ায় সমালোচনা থামেনি। টেস্ট খেলুড়ে একটি দেশের নারী ক্রিকেটাররা ৬০০ টাকা ম্যাচ ফি পাচ্ছে, এমন খবর পুরো ক্রিকেট বিশ্বে ছড়িয়ে যেতে সময় লাগেনি। দ্বিতীয় দফায় বিসিবি থেকে জানানো হয়, সালমা-রুমানা-শুকতারাদের ম্যাচ ফি করা হবে ১০০০ টাকা। অর্থাৎ, এ দফায় ম্যাচ ফি ৪০০ টাকা বাড়ছে ঘোষণা এলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন সুজন চলতি মে মাসের প্রথম দিনেই মেয়েদের ম্যাচ ফি বাড়ানোর ব্যাপারে মুখ খোলেন। একই সঙ্গে কী ধরনের জটিলতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে সেটার ব্যাখ্যাও দেন। নতুনভাবে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও আশা দেন। একই মাসের ৯ তারিখে বিসিবির উইমেন্স উইংন্সের চেয়ারম্যান এম এ আউয়াল ভুলু গণমাধ্যমকে জানান, জাতীয় লিগ থেকে মেয়েরা প্রতি ম্যাচে ১০০০ টাকা করে ম্যাচ ফি পাবে। কিন্তু টুর্নামেন্ট শেষে ক্রিকেটাররাই জানাচ্ছেন, ৬০০ টাকাতেই আটকে আছে প্রতি ম্যাচে তাদের সম্মানী! কথার সঙ্গে কাজের মিল না থাকায় এম এ আউয়াল চৌধুরী ভুলুর সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কয়েক দফা ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। পুরুষ ক্রিকেটাররা জাতীয় লিগে প্রথম স্তরে ২৫ হাজার টাকা ম্যাচ ফি পেয়ে থাকেন। দ্বিতীয় স্তরে পান ২০ হাজার। বিসিএলে ম্যাচ ফি ৫০ হাজার টাকা। সেদিক থেকে ক্রিকেটে মেয়েদের আর্থিক যোগ নিয়ে সমালোচনাটা অবশ্য নতুন নয়। কিন্তু বোর্ডের পক্ষ থেকে একই অজুহাত, মেয়েদের ক্রিকেটে স্পন্সর নেই। অবশ্য এর পেছনে কর্মকর্তাদের গাফিলতির কথাই বেশি শোনা যায়। জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের বেতন বাড়ানোর পর নারী ক্রিকেটারদের বেতনের বিষয়টিও আলোচনায় আসে। কিন্তু উইমেন্স উইং থেকে তেমন কোনো উদ্যগ দেখা যায়নি। ওই সময়ে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, নারী ক্রিকেটারদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধিতে ইতিবাচক বিসিবি। কিন্তু এ ব্যাপারে আমার কাছে কোনো প্রস্তাব আসেনি। ওদেরও বেতন বাড়বে। জাতীয় লিগ ঠিক হয়েছে। ওটার ম্যাচ ফি বাড়ানোর ব্যাপারেও প্রস্তাব আসেনি। প্রস্তাব এলেই আমরা পর্যালোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেব। আর/১২:১৪/৩০ মে
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2seOmUC
May 30, 2017 at 07:12AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন